লোকে কী বলবে, সেই ভয়ে দেশের মানুষের একাংশ এখনও যৌনতার ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলতে স্বচ্ছন্দ নন। তবে সেই ধ্যানধারণা সম্ভবত বদলাচ্ছে। অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিল সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা।
ওই সমীক্ষায় প্রশ্ন ছিল, ‘কোন কোন ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় আপনারা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন?’
নেটমাধ্যমে সেই প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে অদ্ভুত সব ঘটনার কথা।
এক কলেজ ছাত্র জানিয়েছেন, রাতের বেলায় ফাঁকা কলেজ অডিটোরিয়ামের স্টেজে তিনি তাঁর সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয়েছেন।
ওই ছাত্র আরও লিখেছেন, ‘শুধু ফাঁকা অডিটোরিয়ামেই নয়, কখনও বা কলেজের পার্কিং লটে গাড়ির মধ্যেই। আবার কখনও বা কলেজ বিল্ডিংয়ের বারান্দায়…।’
অন্য এক জন জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। লিখেছেন, ‘আমরা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছি মেট্রো স্টেশনের সিঁড়িতে। আপৎকালীন দরজার প্রায় অন্ধকার সিঁড়িতে।’
আর এক জন আবার তাঁর ‘সাহসী অভিজ্ঞতা’র কথা জানাতে গিয়ে লিখেছেন, ‘এক সঙ্গে পড়ার নাম করে সঙ্গিনীর বাড়িতেই…। তখন ওর বাবা-মা পাশের ঘরে ছিলেন।’
যৌনসংসর্গ স্থাপনের অভিজ্ঞতা বিষয়ে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার বাড়ির বেসমেন্টের গাড়ি পার্কিঙে, কখনও একটি বারের ওয়াশরুমে...। তবে একেবারে অন্য রকম অভিজ্ঞতা ছিল রাতের বেলা একটি গল্ফ কোর্সে…।
এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘সঙ্গিনীর বাড়িতেই সিঁড়ির নীচেই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছি। ওর মা তখন পাশের ঘরেই ঘুমচ্ছিলেন।’
গুরুগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালের বাথরুমে সঙ্গিনীর সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন তিনি, জানালেন এক ব্যক্তি।
তিনি আরও লিখেছেন, ওই হাসপাতালে তাঁদের বন্ধু ভর্তি ছিলেন এবং ওই বন্ধুরই কেবিনে তাঁরা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন।
অন্য এক ব্যক্তি লিখেছেন, নির্মিয়মাণ একটি ফ্ল্যাটে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। তখন ওই ফ্ল্যাটের অন্য তলায় কাজ করছিলেন রাজমিস্ত্রিরা। শুধু অসমাপ্ত ফ্ল্যাটেই নয়, শপিং মলের ওয়াশরুমেও নাকি যৌন সংসর্গ উপভোগ করেছেন তাঁরা।
রেললাইনে যৌন সম্পর্ক! আজ্ঞে হ্যাঁ। তেমন অভিজ্ঞতার কথাই ভাগ করে নিয়েছেন এক জন। তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিনিয়ত ট্রেন আসছিল, সে রকম একটি রেললাইনে সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলাম। অদ্ভুত শর্তও ছিল।’
তবে তাঁর সতর্কবার্তা, ‘তখন বয়স অল্প ছিল। তাই ঝোঁকের মাথায় বোকামি করে ফেলেছিলাম। দয়া করে কেউ এ রকম করতে যাবেন না।’
এক জন আবার নিজেকে ‘খতরোঁ কা খিলাড়ি’ বলেও সম্ভাষণ করেছেন! কীর্তি হিসেবে লিখেছেন, ‘ঘুরতে গিয়ে জঙ্গলে, কখনও গাড়িতে, কখনও প্লেনের ওয়াশরুমে, কখনও ট্রেনের কোচে, কখনও সমুদ্র সৈকতে, এমনকি নামকরা এক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছি।’
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, যৌনতা একটি প্রাকৃতিক বিষয়। লোক কী বলবে, সে সব না ভেবে সবারই এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে এগিয়ে আসা উচিৎ। তা হলেই সমাজে যৌনতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হবে।
সমীক্ষকদের দাবি, বিকৃত যৌন কামনা নয়, বাস্তবে কী হয়েছে, তা-ই তাঁরা জনসমক্ষে তুলে আনতে চেয়েছেন।
যৌনতা তো অপরাধ নয়। দুই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পারস্পরিক ইচ্ছায় যৌন সংসর্গে লিপ্ত হওয়ায় কোনও ছুৎমার্গ থাকারও কথা নয়। অথচ, এ নিয়ে নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা রয়ে যায়।
তবে সমীক্ষকেরা বলেছেন, এই সমস্যা এড়িয়ে স্বাভাবিক ভাবে পারস্পরিক সম্মতিতে যৌনসম্পর্ক উদ্যাপন করাকেই তাঁরা সর্বসমক্ষে তুলে আনতে চান।
তবে তাঁরা বলেছেন, এই সব উদাহরণ থেকে যৌন সংসর্গ স্থাপন করতে গিয়ে বিপদে পড়ার ঝুঁকিও থাকে। ফলে সে দিকে সচেতনতাও জরুরি।