পাকিস্তানের হাতে এল ‘এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’ (অ্যাওয়াক্স) বসানো আরও একটি বিমান। সুইডেনের কাছ থেকে পাওয়া এই অ্যাওয়াক্স বিমানটির নাম ‘সাব ২০০০ এরিআই’।
খুব সন্তর্পণে সুইডেন থেকে পাকিস্তান এসেছে অত্যাধুনিক রাডার বসানো এই গোয়েন্দা বিমান। এর আগে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর হাতে সুইডেন নির্মিত আটটি অ্যাওয়াক্স ‘সাব ২০০০ এরিআই’ ছিল। নবমটি নতুন সংযোজন।
কিন্তু কী এই অ্যাওয়াক্স বিমান? অ্যাওয়াক্স এমন এক রাডার, যা বায়ুসেনার বিমানের মাথার উপর বসানো থাকে। বায়ুবাহিত ওই বিশেষ রাডার শত্রুপক্ষের ছোড়়া ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত আগাম সতর্কতা দিতে সক্ষম।
অত্যাধুনিক এই নজরদারি ব্যবস্থার কাজ হল বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলিকে নিখুঁত ভাবে ‘লক্ষ্য’ চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। পাশাপাশি, শত্রুপক্ষের বিমানবাহিনীর তৎপরতার উপর নজরদারির কাজও করতে পারে অ্যাওয়াক্স বিমানগুলি।
পাশাপাশি, কোনটা বন্ধু বিমান এবং কোনটি শত্রু বিমান, তা শনাক্ত করতেও সক্ষম এই রাডার। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নির্দেশও এই রাডারের মাধ্যমে দেওয়া যায়।
অ্যাওয়াক্স রাডারের এমনই বিশেষত্ব যে, ওই সিস্টেম থাকা বিমান এবং তার আশপাশে থাকা যু্দ্ধবিমানকে চিহ্নিত করতে পারে না শত্রুপক্ষ।
ডেটা-লিঙ্কের মাধ্যমে অ্যাওয়াক্স বিমানের সেন্সরে ধারণ করা সমস্ত তথ্য অন্য দেশের সঙ্গে ভাগও করা যেতে পারে।
সে রকম আরও একটি অ্যাওয়াক্স বিমান পাকিস্তানের হাতে পৌঁছল। পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাওয়াক্স গোয়েন্দা বিমান ছাড়া জে-১০সি যুদ্ধবিমান এবং সি-১৩০এইচ বিমান-সহ অন্য বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান হাতে পেয়েছে পাক বিমানবাহিনী।
পাকিস্তানের মালিকানাধীন ‘সাব ২০০০ এরিআই’ অ্যাওয়াক্স বিমানগুলিতে যে রাডার বসানো, তা ৪৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা শত্রুকেও শনাক্ত করতে সক্ষম।
পাকিস্তান ২০০৬ সালে সুইডেনের কাছে ছ’টি ‘সাব ২০০০ এরিআই’ অ্যাওয়াক্স বিমানের বরাত দিয়েছিল। কিন্তু পরে তা কমিয়ে চারটি করে দেওয়া হয়।
২০১২ সালে পাকিস্তানের মিনহাস বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর সেখানে থাকা চারটি অ্যাওয়াক্সের মধ্যে তিনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার মধ্যে একটি পুরোপুরি বিকল হয়ে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, অ্যাওয়াক্স বিমানের নিরিখে ভারতীয় বায়ুসেনার তুলনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে পাক বায়ুসেনা।
বর্তমানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাছে ইজ়রায়েলি প্রযুক্তিতে তৈরি তিনটি আইএল-৭৬ ফ্যালকন অ্যাওয়াক্স বিমান রয়েছে এবং দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি দু’টি ‘নেত্র’ অ্যাওয়াক্স বিমান রয়েছে।
পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি শিবিরে হামলাকারী ১২টি মিরাজ-২০০০ ফাইটার জেটকে পরিচালনা করেছিল ইজ়রায়েলি অ্যাওয়াক্স।
অন্য দিকে, পাকিস্তানের কাছে থাকা অ্যাওয়াক্স বিমানের সংখ্যা ন’টি।
ফলে আকাশযুদ্ধ শুরু হলে কৌশলগত ভাবে নয়াদিল্লির থেকে ইসলামাবাদ একটু এগিয়ে থাকবে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সূত্রের খবর, সুইডেনের থেকে পাওয়া নতুন অ্যাওয়াক্স বিমানটিও পাকিস্তান মিনহাস বিমানঘাঁটিতেই মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু কেন সেখানেই একের পর এক অ্যাওয়াক্স বিমান মোতায়েন করছে ইসলামাবাদ? সে দিকে ভারত নজর রাখছে বলেই খবর।