২০২৭ সালের মধ্যে ভারতীয় উচ্চবিত্তদের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়াবে। অর্থাৎ, ১০ কোটি ভারতীয়ের বার্ষিক আয় ১০ হাজার ডলার বা প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকার বেশি হবে।
সম্প্রতি আমেরিকার আর্থিক বিনিয়োগ সংস্থা গোল্ডম্যান শ্যাক্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
যে সব ভারতীয়ের বার্ষিক আয় ১০ হাজার ডলারের বেশি, তাঁরাই উচ্চবিত্তের আওতায় পড়েন।
প্রতিবেদনে এ-ও উল্লেখ রয়েছে যে, ২০২৭ সালের মধ্যে বিলাসবহুল পণ্য বিক্রি করে ভারতের এমন সব সংস্থা বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও ছাড়িয়ে যাবে।
গোল্ডম্যান শ্যাক্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক দশকে ভারতের শীর্ষ উপার্জনকারীদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং স্থিতিশীল আর্থিক নীতি বলেও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।
বিনিয়োগ সংস্থার ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ভারতীয় উচ্চবিত্তদের সংখ্যা ছিল আড়াই কোটি। বর্তমানে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটিতে। হিসাব অনুযায়ী ২০২৭ সালের মধ্যে সেই সংখ্যা ১০ কোটি পেরিয়ে যাবে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০২৭ সালের মধ্যে তা তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে বলেও আশা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর রিপোর্ট।
গোল্ডম্যান শ্যাক্সের রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্কের সংস্থা ‘ব্লুমবার্গ’ জানিয়েছে, ভারতীয় মধ্যবিত্তদের ক্রমবর্ধমান ব্যয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গয়না, দামি দামি সামগ্রী এবং স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের খরচ বেড়েছে বলেও ওই সংস্থার পর্যবেক্ষণ।
ঘুরে বেড়াতে এবং রেস্তোরাঁয় গিয়েও ভারতীয়দের খরচের বহর বেড়েছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন বছরে ভারতের আর্থিক এবং ভৌত সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সোনা এবং জমিজমা, যা গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি বলে মনে করা হয়, তার পরিমাণও বেড়েছে।
চাহিদার কারণে ভারতে জমিজমার দাম ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৩০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে বৃদ্ধি পেয়েছিল ১৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে সরাসরি স্টক বা মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে।
যদিও বিনিয়োগ সংস্থা গোল্ডম্যান শ্যাক্স উল্লেখ করেছে যে, উচ্চবিত্ত এবং মধ্যমবিত্তদের ব্যয়ক্ষমতার মধ্যে বিভাজন এখনও স্পষ্ট।
গোল্ডম্যান শ্যাক্স ভারতে চাকুরিজীবীদের মধ্যে আয়ের ভিত্তিতে শীর্ষ ৪ শতাংশকে বেছে নিয়েছে, যাঁদের মাথাপিছু বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা। অন্য দিকে, ভারতের বার্ষিক মাথাপিছু গড় আয় প্রায় দু’লক্ষ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ৯৬ কোটিরও বেশি ডেবিট কার্ড রয়েছে এবং সাড়ে ৯ কোটি ভারতীয়ের পোস্টপেড সিম কার্ড রয়েছে। কিন্তু মাত্র ৩ কোটি ভারতীয় গাড়ি কিনে, তা চড়ার ক্ষমতা রাখেন।