হাড়কাঁপুনি ঠান্ডায় জবুথবু গোটা উত্তর ভারত। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে কুয়াশা। শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি চলায় উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ক্রমশ তাপমাত্রার পারদ নামছে। কাশ্মীরেও সোমবার তুষারপাত হয়েছে। সেখানেও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেকটাই নীচে নেমে গিয়েছে।
দিল্লিতে মঙ্গলবার তাপমাত্রা এতটাই নেমে গিয়েছে যে, উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় পিছনে ফেলে দিয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে নৈনিতালের তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঠান্ডার সঙ্গে দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরে কুয়াশারা দাপট বজায় রয়েছে।
দিল্লির আবার কয়েকটি জায়গায় তাপমাত্রা আরও নীচে নেমেছে। যেমন আয়ানগরে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরাখণ্ডে বারকোটে মঙ্গলবার ছিল এই মরসুমের সবচেয়ে শীতলতম দিন। সেখানে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অন্য দিকে, কেদারনাথে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। দেহরাদূন, মুসৌরি, হরিদ্বারে তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
হরিদ্বার এবং আশপাশের এলাকায় ঠান্ডার সঙ্গে ঘন কুয়াশাতেও জনজীবন বিপর্যস্ত। মঙ্গলবার ধর্মনগরীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য দিকে, সোমবার উত্তরাখণ্ডের চম্পাবত এবং লোহাঘাটে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছিল।
শৈত্যপ্রবাহের জন্য উধমসিংহ নগর এবং হরিদ্বারে সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। অন্য দিকে, পন্তনগরে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরপ্রদেশেও শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার এই মরসুমের শীতলতম দিন ছিল কানপুরে। সোমবার কানপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যের মধ্যে ফুরসতগঞ্জে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজস্থানের কোনও কোনও জায়গায় হিমাঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছে তাপমাত্রা। চুরুতে সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সীকরে ১.৫ ডিগ্রি, পিলানীতে ১.৯। রবিবার চুরুতে তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। ফতেপুরেও তাপামাত্রা রবিবার হিমাঙ্কের নীচে ছিল।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে অতি শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। মৌসম ভবন এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। মঙ্গলবার শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি বজায় থাকবে পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় এবং দিল্লিতে। মঙ্গল এবং বুধবার শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি থাকবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে।
হরিয়ানার অনেক জায়গাতেই তাপমাত্রা প্রায় হিমাঙ্কের কাছাকাছি পৌঁছেছে। কোথাও তাপমাত্রা ১ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছে, কোথাও আবার ৪ ডিগ্রিতে ঘোরাফেরা করছে। সোমবার হিসারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মহেন্দ্রগড়ে তাপমাত্রা ছিল ১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফতেহবাদে ৪.২, কারনালে ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুয়াশাও।
কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে হালকা তুষারপাত হয়েছে সোমবার রাতে। প্রশাসন সূত্রে খবর, পহেলগাঁও এবং সোনমার্গে তুষারপাত হয়েছে। তবে তুষারপাত হলেও কাশ্মীরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। যদিও সেই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচেই রয়েছে।
সোমবার রাতে কাশ্মীরের আকাশ পরিষ্কার ছিল। পহেলগাঁওয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৬.৭ ডিগ্রি নীচে। শ্রীনগরে তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। শ্রীনগরে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। জম্মুতে ছিল ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
লাদাখের লেহতে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। কার্গিলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য দিকে, লাদাখের দিসকিত নুব্রাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে।