যে অপরাধীকে পাকড়াও করার কথা তাঁর, সেই অপরাধীর সঙ্গেই কিনা প্রেম এক মহিলা পুলিশকর্মীর! এই ভালবাসার জন্যই তদন্তকারীদের হাত থেকে প্রেমিককে বাঁচালেন তিনি। তরুণী পুলিশকর্মীর এ হেন কাণ্ডে হতবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। যার জেরে তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায় চলে এসেছেন ওই তরুণী পুলিশকর্মী। পুলিশকর্মীর সঙ্গে অপরাধীর এ হেন প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সরগরম নিউ ইয়র্ক।
আমেরিকায় ব্রঙ্কস পুলিশকর্মী আলিসা বজরকতারেভিচের সঙ্গে এক মাদক কারবারির প্রেম খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। আলিসার প্রেমিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযোগ, সেই সময় তদন্তকারীদের হাত থেকে প্রেমিককে রক্ষা করেছেন আলিসা। আর এই নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সে দেশে।
পুলিশকর্মী হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় নাকি আলিসা বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, আলিসার জন্যই নাকি তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
বেশ কয়েক দিন ধরেই আলিসার প্রেমিকের উপর নজর রেখেছিল পুলিশ। মাদক পাচার কারবারে আলিসার প্রেমিক জড়িত বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আলিসার প্রেমিকের গাড়ি আটকায় পুলিশ।
আলিসার প্রেমিককে গ্রেফতারের পরিকল্পনা করেছিল পুলিশ। সেই মতো তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেন তদন্তকারীরা।
গাড়িতে তল্লাশির সময় প্রেমিকের সঙ্গে ছিলেন আলিসাও। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে হম্বিতম্বি শুরু করেন আলিসা। নিজে পুলিশ হওয়ায় তিনি জোর খাটান বলে অভিযোগ।
আলিসার সঙ্গে তদন্তকারীদের বচসাও বাধে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলিসার সঙ্গে পেরে ওঠেননি তদন্তকারীরা। তাই পিছু হটতে হয় তাঁদের।
মাদক কারবারির সঙ্গে আলিসার প্রেম নিয়ে গত ১ বছর ধরেই নিউ ইয়র্কে পুলিশ মহলে আলোচনা চলছে। আলিসার সহকর্মীরা এই সম্পর্কের কথা জানতেন।
আলিসার প্রেমিক মোটেই ভাল মানুষ নন বলে দাবি করেছেন তাঁর সহকর্মীরা। এমনকি, ওই যুবকের সঙ্গ ছাড়ার জন্য আলিসাকে পরামর্শও দেন তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু সহকর্মীদের কথায় কান দেননি তিনি। কারণ, প্রেমে অন্ধ আলিসা।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট সূত্রে খবর, একটি জিমে ওই মাদক কারবারির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আলিসার। সেই আলাপই পরে প্রেমে গড়ায়।
৩৩ বছর বয়সি আলিসা ১১ বছর নিউ ইয়র্ক পুলিশে কাজ করেছিলেন। তাঁর বেতন ছিল ১ লক্ষ ১৫ হাজার ২৫০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার অঙ্ক ৯৪ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৬৯ টাকা।
গত বছর আলিসাকে ব্রঙ্কস ডাকাত দমন শাখায় বদলি করা হয়েছিল। শহরে যে সব ডাকাতির ঘটনা ঘটে, তার তদন্তে যুক্ত রয়েছেন আলিসা।
পুলিশের একাংশের দাবি, মাদক কারবারের তদন্ত প্রক্রিয়ার গোপন কথা ফাঁস করছেন আলিসা। অনেক ক্ষেত্রেই তদন্ত প্রক্রিয়াকে তিনি প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ।
তাঁর প্রেমিক মাদক কারবারি নন বলে বার বার দাবি করেছেন আলিসা। পুলিশের অভিযোগ, নিজের প্রেমিককে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন আলিসা।
আলিসার প্রেমিককে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তাঁর নামও প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাঁকে নজরে রেখেছেন তদন্তকারীরা।
আলিসার ভূমিকাও আতশকাচের তলায়। তাঁর কাছ থেকে পুলিশের রিভলভার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অফিসে ডেস্কের কাজে বদলি করা হয়েছে তাঁকে।
আলিসার সঙ্গে মাদক কারবারির এই প্রেমের ঘটনা মনে করাবে বলিউডের সিনেমা ‘গুনাহ’-এর কথা। ছবিতে এক অপরাধীর সঙ্গে মহিলা পুলিশকর্মীর প্রেমের সম্পর্ক দেখানো হয়েছিল। পুলিশকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিপাশা বসু। আর অপরাধীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিনো মরিয়া। তবে সেই কাহিনির সঙ্গে আলিসার প্রেমের কাহিনির অনেকটাই অমিল। শুধু অপরাধী এবং পুলিশের প্রেমের যোগসূত্র রয়েছে।