‘মহাগঠবন্ধন’ থেকে নীতীশের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপানউতর তৈরি হয়েছে দেশের রাজনীতির নানা স্তরে। ‘পাল্টি’ খেয়ে আবার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর ফলে বিহারের কুর্সিকে ঘিরে জল্পনার শেষ নেই। পাঁচ বার দল বদলে আবারও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন তিনি।
‘মহাগঠবন্ধন’ থেকে বেরিয়ে এসে এনডিএ-র শরিক হিসাবে নতুন করে সরকার গড়েছেন। রবিবারই নবম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন জেডিইউ প্রধান নীতীশ।
তার পরেই বিহারের বিধানসভায় প্রথম পদক্ষেপ করল বিজেপি। কার্যত কোণঠাসা করে দেওয়া হল লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডিকে।
বিহার বিধানসভায় বিজেপি এবং তাদের ঘনিষ্ঠ জোটের অনেক নেতা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন স্পিকারের বিরুদ্ধে। বিধানসভার সেক্রেটারির কাছে ওই প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে।
বিহারের বিধানসভার স্পিকার অওয়ধ বিহারী চৌধরী আরজেডি নেতা। নীতীশের জোটবদলের পরেই তাঁর অপসারণ চেয়েছেন বিজেপি নেতারা।
স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দিয়েছেন বিজেপি নেতা নন্দ কিশোর যাদব, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারকিশোর প্রসাদ, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিতনরাম মাঝি, জেডিইউ নেতা বিনয় কুমার চৌধরী, রত্নেশ সদা এবং এনডিএ-এর শরিক অন্য বিধায়কেরা।
রবিবার নীতীশের ‘পাল্টি’র পর দেশ জুড়ে তোলপাড় হয়েছে রাজনীতি। আরজেডি, কংগ্রেসের সঙ্গে ‘মহাগঠবন্ধন’ থেকে বেরিয়ে রাজভবনে গিয়ে প্রথমে ইস্তফা জমা দেন নীতীশ।
তার পর বিকেলেই নবম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করেন আবার। এ বার নীতীশ এনডিএ-র শরিক।
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গত্যাগ করে নীতীশ ফের নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরায় বিহার তো বটেই, জাতীয় স্তরেও রাজনীতির অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে।
২০২২ সালে লালু প্রসাদের দল আরজেডি, কংগ্রেস এবং অন্য কয়েকটি দলের সঙ্গে জোট বেঁধে বিহারে সরকার গঠন করেছিলেন নীতীশ। জানিয়েছিলেন, আমৃত্যু তিনি বিজেপির সঙ্গে যাবেন না!
পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঘোষণা করেন, নীতীশের জন্য বিজেপির দরজা চিরতরে বন্ধ। শাহ বা নীতীশ কেউই কথা রাখেননি।
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠনের কয়েক মাসের মধ্যেই তার সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করেছেন নীতীশ। যা লোকসভা ভোটের আগে বিহারকে জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
বর্তমান সমীকরণ অনুযায়ী, বিহারে এনডিএ-র বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৮ জন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাত্রার চেয়ে ছয় বেশি।
অন্য দিকে, ‘মহাগঠবন্ধন’-এর বিধায়ক সংখ্যা এখন ১১৪ জন। বিহারের বিধানসভায় মোট আসনের সংখ্যা ২৪৩টি।
তার মধ্যে একক দল হিসাবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিধায়ক রয়েছে আরজেডি-র (৭৯)। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৮। জেডিইউ-এর ৪৫ জন এবং কংগ্রেসের ১৯ জন বিধায়ক রয়েছেন বিহারে।