Titan

ঘোমটা ঢাকা উপগ্রহে পাড়ি দেবে ‘ফড়িং-যান’, মহাশূন্যে প্রাণ খুঁজতে ‘শনিপুজো’য় মগ্ন নাসা!

শনির সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটানের রহস্য সমাধান করতে এ বার ‘ড্রাগনফ্লাই’ নামের বিশেষ মহাকাশযান পাঠাচ্ছে নাসা। এর সাহায্যে সৌরজগতের উপগ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজবেন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪১
Share:
০১ ১৮
‘শনিপুজো’য় মত্ত ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)! এর জন্য ফড়িংয়ের মতো দেখতে মহাকাশযান তৈরি করেছে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা। কিছু দিনের মধ্যেই সেটি পাড়ি দেবে শনির চাঁদ টাইটানে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিজ্ঞানীরা তার দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়ায় দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে হইচই।

‘শনিপুজো’য় মত্ত ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)! এর জন্য ফড়িংয়ের মতো দেখতে মহাকাশযান তৈরি করেছে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা। কিছু দিনের মধ্যেই সেটি পাড়ি দেবে শনির চাঁদ টাইটানে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিজ্ঞানীরা তার দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়ায় দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে হইচই।

০২ ১৮
নাসার তৈরি ওই মহাকাশযানটির পোশাকি নাম ‘ড্রাগনফ্লাই রটারক্র্যাফ্ট’। এর সাহায্যে জৈব যৌগ সমৃদ্ধ শনির চাঁদ টাইটানের যাবতীয় রহস্য উন্মোচন করতে চাইছেন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এর জন্য ৩৩৫ কোটি ডলার খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। ২০২৮ সালের জুলাই মাসে ‘ড্রাগনফ্লাই’ টাইটানের পথে যাত্রা করবে বলে ঘোষণা করেছে নাসা।

নাসার তৈরি ওই মহাকাশযানটির পোশাকি নাম ‘ড্রাগনফ্লাই রটারক্র্যাফ্ট’। এর সাহায্যে জৈব যৌগ সমৃদ্ধ শনির চাঁদ টাইটানের যাবতীয় রহস্য উন্মোচন করতে চাইছেন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এর জন্য ৩৩৫ কোটি ডলার খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। ২০২৮ সালের জুলাই মাসে ‘ড্রাগনফ্লাই’ টাইটানের পথে যাত্রা করবে বলে ঘোষণা করেছে নাসা।

Advertisement
০৩ ১৮
সৌরজগতের সমস্ত গ্রহের মধ্যে শনির চাঁদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। বলয়ে ঘেরা গ্রহটির মোট ১৪৬টি উপগ্রহ রয়েছে। টাইটান এদের মধ্যে অন্যতম। শনির এই চাঁদটি আকারে বুধ গ্রহের চেয়ে বড় বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। টাইটানকে নিয়ে তাঁদের আগ্রহের নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে।

সৌরজগতের সমস্ত গ্রহের মধ্যে শনির চাঁদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। বলয়ে ঘেরা গ্রহটির মোট ১৪৬টি উপগ্রহ রয়েছে। টাইটান এদের মধ্যে অন্যতম। শনির এই চাঁদটি আকারে বুধ গ্রহের চেয়ে বড় বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। টাইটানকে নিয়ে তাঁদের আগ্রহের নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে।

০৪ ১৮

১৯৪৪ সালে টাইটানের হদিস পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। মহাকাশ গবেষকদের দাবি, ঘন নাইট্রোজ়েনে ঘেরা এর বায়ুমণ্ডল। আকারের দিক থেকে টাইটান পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ বড়। নাইট্রোজ়েনের আধিক্য থাকায় এর বায়ুমণ্ডল প্রায় দেড় গুণ পুরু। এর কারণ এখনও খুঁজে চলেছেন দুনিয়ার তাবড় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

০৫ ১৮

টাইটানের বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় রহস্যময় গ্যাসটি হল মিথেন। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের অনুমান, গত তিন কোটি বছর ধরে সূর্যালোকের সঙ্গে ক্রমাগত বিক্রিয়া করে চলেছে ওই মিথেন গ্যাস। এতে শনির এই চাঁদে মিথেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, সেটা মোটেই হচ্ছে না। উল্টে ক্রমাগত মিথেন বেড়ে চলেছে টাইটানে।

০৬ ১৮

শনির চাঁদটির অপার রহস্য বুঝতে গবেষণাগারে কৃত্রিম ভাবে টাইটানের বায়ুমণ্ডল তৈরি করেন কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্স ল্যাবের বিজ্ঞানীরা। আর তখনই উপগ্রহটি জৈব যৌগে সমৃদ্ধ বলে অনুমান করেন তাঁরা। টাইটানের পাথুরে কেন্দ্রে ওই সমস্ত জৈব যৌগ মিশে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

০৭ ১৮

২০০৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে টাইটানে ক্যাসিনি-হাইড্রোজ়েনস মিশন চালায় নাসা। আর তখনই শনির এই উপগ্রহটির বিপুল মিথেন ভান্ডারের হদিস পান মার্কিন মহাকাশ গবেষকেরা। এ বারের মিশনে টাইটান বসবাসের উপযুক্ত কি না, তা পরীক্ষা করবে ‘ড্রাগনফ্লাই’। এই ধরনের মিশন প্রথম বার পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নাসা।

০৮ ১৮

সম্প্রতি শনির চাঁদগুলিকে নিয়ে গবেষণাধর্মী লেখা প্রকাশ করে ‘জ়িয়োচিমিকা এট কসমোচিমিকা অ্যাক্টা’ নামের পত্রিকা। সেখানে বিজ্ঞানী কেলি মিলার লিখেছেন, ‘‘টাইটানের ভূপৃষ্ঠে হাঁটাচলা করাটা কিছুটা স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো হবে। বায়ুমণ্ডল অনেক বেশি ঘন হওয়ায় সেখানকার অনেক কিছুই পৃথিবীর চেয়ে বেশ আলাদা।’’

০৯ ১৮

অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী আবার মনে করেন পুরু বরফের চাদরে মোড়া রয়েছে টাইটান-ভূমি। ফলে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। টাইটানে গভীরে সমুদ্রের উপস্থিতির কথাও বলেছেন তাঁরা। সেগুলি আকারে নাকি এতটাই বড় যে, তা গিলে খেতে পারে প্রশান্ত বা আটলান্টিক মহাসাগরকে।

১০ ১৮

এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ‘ড্রাগনফ্লাই’কে সেখানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাসা। ২০২৩ সালের গোড়ার দিকে এর নকশা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করে মার্কিন মহাকাশ গবেষকদের দল। কিন্তু টাকার অভাবে বেশি দূর এগোতে পারেনি তারা। ওই বছরের নভেম্বরে শর্তসাপেক্ষে টাইটান মিশনের অনুমতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।

১১ ১৮

চলতি বছরের বাজেটে শনির চাঁদে ‘ড্রাগনফ্লাই’ পাঠাতে নাসাকে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই মিশনের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর সামনের অংশটি দেখতে কিছুটা গাড়ির মতো।

১২ ১৮

টাইটানে পৌঁছে অন্তত দু’বছর সেখান থেকে তথ্য সরবরাহ করবে ওই মহাকাশযান। এই সময়সীমায় ‘ড্রাগনফ্লাই’ কয়েকশো কিলোমিটার ঘুরে শনির চাঁদটিকে চষে ফেলবে বলে জানিয়েছে নাসা। টাইটানে দৃশ্যমানতা খুব কম হওয়ায় মহাকাশযানটি কেবলমাত্র দিনের বেলায় তথ্য পাঠাতে পারবে। ‘ড্রাগনফ্লাই’কে চার্জ দেওয়ার জন্য রাতের সময়কে বেছে নিয়েছেন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৩ ১৮

এর আগে মঙ্গলে এই ধরনের মিশন পরিচালনা করেছে নাসা। সেখানে ‘কিউরিওসিটি’ নামের একটি রোভারকে নামান মার্কিন মহাকাশ গবেষকেরা। মঙ্গলে ঘোরাঘুরি করার জন্য রোভারটি রেডিয়ো আইসোটোপ পাওয়ার সিস্টেম ব্যবহার করেছিল। ‘ড্রাগনফ্লাই’ও একই পদ্ধতি ব্যবহার করবে বলে জানা গিয়েছে।

১৪ ১৮

এ বারের মিশনে টাইটান মানুষের বসবাসের জন্য আদর্শ কি না, তা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবে নাসা। সেখানে জীবনের লক্ষণ না পাওয়া গেলেও কী ভাবে রাসায়নিক মিথস্ক্রিয়া ঘটছে, তা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৫ ১৮

পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্যে আর কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, সৌরজগতে একমাত্র পৃথিবীতেই রয়েছে জীবজগৎ। অনেকেই এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। আবার সৌরজগতের বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন গবেষকদের একাংশ।

১৬ ১৮

কয়েক বছর আগে পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদের বুকে অন্ধকার অংশে বরফের চাদরের অস্তিত্ব খুঁজে পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাঠানো চন্দ্রযান-১ মিশনের পর এই তত্ত্ব পাকাপাকি ভাবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১৭ ১৮

২০২৩ সালে হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী তাঁদের গবেষণায় দাবি করেছেন, পৃথিবীর বর্হিমণ্ডলে যে প্লাজ়মার চাদর রয়েছে, তা থেকে নির্গত হওয়া ইলেকট্রন কণা চাঁদের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলে এর ফলে পাথর ভেঙে তৈরি হয় খনিজ। এমনকি এ ভাবেই তৈরি হতে পারে জলকণাও।

১৮ ১৮

শনির সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটানের বায়ুমণ্ডল ঘন হওয়ায় সেখানে পৃথিবীর মতো জলচক্রের অস্তিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিজ্ঞানীদের দাবি, মিথেন মেঘ, বৃষ্টি এবং তরল পদার্থ উপগ্রহটির বুক জুড়ে প্রবাহিত হয়। ফলে সেখানে প্রাণের হদিস মিলবে কিনা, তার উত্তর দেবে সময়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement