peru

Gate Of The Gods: এটিই নাকি স্বর্গের দরজা! পেরুর পাহাড়ে ইনকা সভ্যতার সময়ের কুঠুরি ঘিরে আজও রহস্য

পেরুর টিটিকাকা হ্রদের তীরে পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরনো ওই দরজাই নাকি স্বর্গের পথ খুলে দেয়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২২ ১৪:৪২
Share:
০১ ২০

পাহাড় জুড়ে অদ্ভুত সব আকৃতি। কোনওটি দেখতে ঘরবাড়ির মতো। কোনওটিকে দেখে আবার মনে হয় মানুষের মূর্তি। তবে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা একটি গোলাপি দরজা ঘিরেই রয়েছে যাবতীয় রহস্য! রয়েছে নানা লোককথাও। পেরুর টিটিকাকা হ্রদের তীরে পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরনো ওই দরজাই নাকি স্বর্গের পথ খুলে দেয়।

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ২০

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে ইনকা সভ্যতার নিদর্শন। সেগুলিকে ঘিরে গল্পকথাও কম নয়। মাচু পিচু, নাজকা লাইন্স, পাইসাক বা কাসকো— দুনিয়ার সব প্রান্ত থেকেই এ সব পর্যটনস্থলে ভিড় জমান মানুষজন। তবে অনেকের মতে, হায়ু মারকা পাহাড়ে আরামু মারুর দরজা ঘিরে যে রহস্য রয়েছে, তার কাছে নাকি পেরুর কোনও পর্যটনকেন্দ্র ধারেকাছে আসে না। এটিই ‘স্বর্গের দরজা’ বলে পরিচিত। সে দরজা পেরোলে নাকি অমরত্বের রাস্তায় হাঁটা যায়!

ছবি: সংগৃহীত।

Advertisement
০৩ ২০

দক্ষিণ পেরুর পাহাড়ে ওই গোলাপি পাথরের দরজাটি ‘গেট অব দ্য গডস’ বলেও পরিচিত। অনেকে আবার এটিকে ‘পুয়ের্তা দি হায়ু মারু’ (হায়ু মারুর দরজা)-ও বলে চেনেন। পাঁচশো বছরের পুরনো ওই দরজা নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই। ‘স্বর্গের দরজা’ ঘিরে ছড়িয়ে থাকা অজস্র গল্পকথাও কম আকর্ষণীয় নয়।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ২০

হায়ু মারুতে ওই পাথরটি উচ্চতায় ২৩ ফুট। চওড়ায়ও একই মাপ। পাথরের নীচের দিকে রয়েছে একটি কুঠুরির মতো অংশ খোদাই করা। যেন ইংরেজি হরফের ‘টি’ আকৃতির একটি খাঁজ। তা ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি উঁচু। একে ঘিরে ছড়িয়েছে রহস্য।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ২০

পুনো শহরের থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ‘স্বর্গের দরজা’। পেরুর অনেকের মতে, ‘স্বর্গের শহর’-এর মধ্যেই রয়েছে ‘স্বর্গের দরজা’। যদিও বাস্তবে সে ধরনের কোনও শহরের অস্তিত্বই নেই পেরুতে। তবে এ সব নিয়ে নানা লোককথা প্রচলিত।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ২০

‘স্বর্গের দরজা’-র খোঁজ কী ভাবে পাওয়া গেল, তা নিয়েও নানা গল্প রয়েছে। অনেকে বলেন, ১৯৯৬ সালে হোসে লুই দেলগাদো মামানি নামে এক ব্যক্তি এর খোঁজ পেয়েছিলেন। সে সময় গাইডের কাজ পেয়েছিলেন তিনি। ফলে সে কাজ শুরুর আগে পেরুর ওই এলাকাটি ঘুরে দেখতে যান। আচমকাই চোখে পড়ে, পাথরের গায়ের একটি অংশ দরজার মতো খোদাই করা। এর পর সংবাদমাধ্যমের কাছে অদ্ভুত দাবি করেছিলেন মামানি।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ২০

সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি সাক্ষাৎকারে মামানি বলেছিলেন, ‘‘প্রথম বার ওই পাথরটি চোখেই পড়েনি।’’ তাঁর দাবি ছিল, ‘‘ওই বিল্ডিংয়ের মতো পাথরটি বছরের পর বছর স্বপ্নে দেখেছি। তবে স্বপ্নে ওই দরজার পথে গোলাপি পাথর বিছানো ছিল। পথের দু’ধারে সার সার গোলাপি রঙের মূর্তি সাজানো ছিল... এই স্বপ্নের কথা পরিবারের লোকজনকে বহু বার জানিয়েছিলাম। শেষমেশ ওই দরজাটিই দেখতে পাওয়ার পর মনে হয়েছিল, ঈশ্বরই যেন আমার সামনে সেটি উন্মোচন করে দিয়েছেন।’’

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ২০

মামানির দাবিকে মানতে নারাজ বহু মানুষ। তাঁদের মতে, আমারু মারুর যে কিংবদন্তি ছড়িয়ে রয়েছে, তার সঙ্গে মামানির কথার মিল রয়েছে। ফলে মামানির কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ২০

আমারু মারুর কিংবদন্তি কী? ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে ইনকা যুগের অবসান করে পেরু এবং চিলিতে সাম্রাজ্য গড়েছিলেন স্পেনীয় শাসকেরা। লাতিন আমেরিকার ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। সেই সঙ্গে ছিল গুটিবসন্তের মতো রোগের হামলা। নতুন করে বসতি গড়তে গিয়েও প্রাণ গিয়েছিল অনেকের।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ২০

পেরুর লোকগাথায় বলে, স্পেনীয়দের হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন আমারু মারু নামে এক পুরোহিত। সাতরশ্মির মন্দিরের ওই পুরোহিতের কাছে নাকি আকাশ থেকে একটি সোনার চাকতি এসে পড়েছিল। তা নিয়ে তিনি নিজের মাথা বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন হায়ু মারু পাহাড়ে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মতো বহু পুরোহিত।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ২০

হায়ু মারুর ওই দরজার গায়ে ওই সোনার চাকতিটি ঠেকাতেই নাকি পাহাড়ের মধ্যে থেকে তা খুলে যায়। এর পর ভিতরে ঢুকে যান আমারু মারুরা।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ২০

লোককথায় আরও বলে, পাহাড়ের ওই দরজাটি একটি সুড়ঙ্গের আকার নিয়ে নিয়েছিল। তার মধ্যে থেকে স্বর্গীয় নীলাভ আলো বার হচ্ছিল। আমারু মারু সুড়ঙ্গে ঢোকামাত্রই দরজাটি বন্ধ হয়ে যায়। অনেকের দাবি, ওই দরজা দিয়ে ভিতরে ঢোকার পর ঈশ্বরদের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে পৌঁছে যান আমারু মারু। তার পর থেকে সেখানে বসবাস করছেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ২০

আমারু মারুর গল্পের সত্যতা নিয়েও অনেকে সন্দিহান। তবে হায়ু মারুর ওই পাহাড়ের দরজার আকৃতির খাঁজে একটি ছোট গোলাকৃতি অংশ রয়েছে। অনেকের দাবি, ওই গোলাকৃতি অংশেই সোনার চাকতিটি ঠেকিয়েছিলেন আমারু মারু।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ২০

যে ‘স্বর্গের দরজা’ নিয়ে এত হইচই, তা যে একমাত্র পেরুতে রয়েছে, এমনটা নয়। বলিভিয়াতেও ‘গেট অব দ্য সান’ বলে একটি সৌধের দেখা মেলে, যা প্রায় ‘স্বর্গের দরজা’-র মতো দেখতে। তবে ওই পাথরের সৌধটির দরজার বদলে তোরণর মতো দেখতে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ২০

তুরস্কের মাটিতে ‘গোবেকলি টেপে’ বা ইংল্যান্ডের ‘স্টোনহেঞ্জ’-এর সঙ্গেও ‘স্বর্গের দরজা’-র তুলনা টানেন অনেকে। এ নিয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদদের গবেষণা আজও অব্যাহত। যদিও এই সব সৌধের সঙ্গে ঈশ্বর বা ভিন্‌গ্রহের প্রাণীদের এত সহজে জুড়ে দেওয়া যায় না। যেটি হয়েছে ‘স্বর্গের দরজা’র ক্ষেত্রে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ২০

‘স্বর্গের দরজা’-র সঙ্গে ঈশ্বরের যোগসূত্র টেনে ধরা হলেও তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সে নিয়েও তর্কের শেষ নেই। যদিও পেরুর একটি পাহাড়ে কী ভাবে ওই দরজাটি গড়ে উঠল, তার ব্যাখ্যা দিতে হিমশিম খাচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান।

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ২০

প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, ‘স্বর্গের দরজা’-র মতো বহু নিদর্শনের পিছনে প্রাচীন স্থাপত্যবিদ্যা বা ইঞ্জিনিয়ারিংশিল্পের হাত রয়েছে। তার মধ্যে ঈশ্বরিক শক্তির হাত খোঁজা বাড়াবাড়ি হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ২০

তর্কবিতর্ক সত্ত্বেও ‘স্বর্গের দরজা’ ঘিরে কৌতূহল মেটাতে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন বহু পর্যটক। কেউ বা যাচ্ছেন রহস্যের সন্ধানে। কেউ বা আবার প্রাচীন স্থাপত্য দেখার ঝোঁকেই পৌঁছচ্ছেন ‘স্বর্গের দরজা’-য়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৯ ২০

বহু পর্যটকের দাবি, ‘‘স্বর্গের দরজা’-র ভিতর থেকে শিস দেওয়ার আওয়াজ বা অট্টহাস্য শুনেছেন তাঁরা। অনেকে আবার অদ্ভুত সঙ্গীত ভেসে আসতে শুনেছেন। কেউ বা আগুনের গোলা ছুটে আসতে দেখেছেন বলেও দাবি করেন।

ছবি: সংগৃহীত।

২০ ২০

তবে ‘স্বর্গের দরজা’ ঘিরে লোককথায় বিশ্বাস না করলেও সেখানে এক বার অন্তত যাওয়া উচিত বলে মনে করেন অস্ট্রেলীয় এক পর্যটক। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘‘সুযোগ পেলে অন্তত এক বার ‘স্বর্গের দরজা’ দেখতে আসা উচিত। এখানে আসার আগে আমারও কিছুটা সংশয় ছিল। তবে এটি সত্যি যে মনে হল যেন ভিতর থেকে একটা শক্তি আসছে!’’

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement