১৪০ কোটি জনবসতির দেশ ভারতেই রয়েছেন বেশ কিছু ধনকুবের। তাঁরা শুধু টাকা রোজগারই করেননি, নিজেদের জীবনযাপনের জন্য এঁদের খরচের বহরও বিশাল। এই খরচের বেশির ভাগটাই তাঁরা করেছেন নিজেদের বিলাসবহুল বাসভবন তৈরিতে।
এই বাসভবনগুলিতে রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে শুরু করে মনোরঞ্জনের সমস্ত রকম ব্যবস্থা। এই সব বাড়ির কোনওটি এতটাই দামি, যা কোনও কোনও দেশের জিডিপির প্রায় সমান। আসুন, জেনে নেওয়া যাক ভারতের এরকমই কিছু বাসভবন সম্পর্কে।
বিলাসবহুল বাড়ির কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই নাম আসে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর বাড়ি ‘অ্যান্টিলিয়া’র। মুম্বইয়ের ধনী এলাকা অল্টামাউন্টে প্রায় দেড় একর জায়গার উপর তৈরি ‘অ্যান্টিলিয়া’ ভারতের সবচেয়ে দামি বাড়ি। এই বাড়ি বিশ্বের দ্বিতীয় দামি বাড়িও। প্রথমে রয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।
৫৬৮ ফুট উচুঁ ২৭ তলা এই বাড়িটি তৈরি করেছে শিকাগোর নির্মাণ সংস্থা ‘ওয়েল অ্যাণ্ড পারকিনস’। বাড়িতে রয়েছে সিনেমা হল, সুইমিং পুল, তিনটি হেলিপ্যাড, জিম ইত্যাদি নানা সুযোগ-সুবিধা। বাড়িটি রিখটার স্কেলের ৮ মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারবে। ফোর্বস অনুযায়ী ‘অ্যান্টিলিয়া’র দাম ছ’হাজার কোটি থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে।
ভারতের দ্বিতীয় দামি বাড়ি ‘জে কে হাউস’। রেমণ্ড গ্রুপের কর্তা গৌতম সিংহানিয়া এই বাড়ির মালিক। ১৪৫ মিটার উচুঁ ৩০ তলা এই বাড়িটিও অল্টামাউন্ট এলাকায় প্রায় ১৬ হাজার বর্গফুট জায়গার উপর অবস্থিত। বাড়িটিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সব কিছুই উপস্থিত।
বাড়িটিতে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাড, জিম, স্পা সব কিছুই রয়েছে। দক্ষিণ মুম্বইয়ে অবস্থিত বাড়িটির প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদ আলাদা ফ্লোর রয়েছে। বাড়ির ছ’টি তলা বরাদ্দ করা রয়েছে শুধু গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকা।
৩ নম্বরে রয়েছে অনিল অম্বানীর বাড়ি ‘অ্যাবোড’। মুম্বইয়ের ধনী এলাকা পালি হিলে অবস্থিত ৭০ মিটার উচুঁ ১৭ তলা এই বাড়িটি প্রায় ১৬ হাজার বর্গফুট জায়াগার উপর অবস্থিত।
বাড়িটিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সবই রয়েছে। বাড়িটির আনুমানিক দাম প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ‘অ্যান্টিলিয়া’তে যাওয়ার আগে মুকেশ অম্বানী পরিবার-সহ ‘অ্যাবোড’-এই থাকতেন।
মুম্বইয়ের মালাবার হিলে অবস্থিত ‘জাটিয়া হাউস’ তালিকার পরবর্তী নাম। বাড়ির মালিক আদিত্য বিড়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা।
সমুদ্রের দিকে মুখ করা ৩০ হাজার বর্গফুট জায়াগায় অবস্থিত ‘জাটিয়া হাউস’এ রয়েছে ২০টি বেডরুম। বাড়ির অন্দর সজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে বার্মিজ সেগুন কাঠ। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪২৫ কোটি টাকা।
এর পরেই রয়েছে বান্দ্রায় অবস্থিত বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ‘মন্নত’। ২৭ হাজর বর্গফুট জায়গার উপর অবস্থিত ‘মন্নত’-এর নকশা করেছেন শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খান।
ছ’তলা এই বাড়িটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। বাড়ির মধ্যে এম এফ হুসেনের আঁকা ছবি ছাড়াও প্রচুর বহুমূল্য সামগ্রী রয়েছে। ‘মন্নত’-এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
তালিকায় পরের নাম ‘জিন্দল হাউস’-এর। রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী নবীন জিন্দলের এই বাড়ি প্রায় তিন একর জায়গার উপর দিল্লির ধনী এলাকা লিফি লুটিয়েনস এলাকায় অবস্থিত। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
রতন টাটার বাড়িও রয়েছে দামি বাড়ির তালিকায়। রতন টাটার বাড়িটি অবস্থিত মুম্বইয়ের কোলাবায়। সাত তলা বাড়িটি প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় নিয়ে অবস্থিত। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।
এসার গ্রুপের কর্তা রুইয়া ভাইদের বাড়ি ‘রুইয়া হাউস’ এর আনুমানিক দাম প্রায় ১২০ কোটি টাকা। দিল্লির তিস জানুয়ারি মার্গে প্রায় আড়াই একর জমির উপর তৈরি করা হয়েছে বাড়িটি।
ইয়েস ব্যাঙ্কের সিইও রানা কপূরের বাড়ি অবস্থিত মুম্বইয়ের ধনী এলাকা টোনি অল্টামাউন্ট এলাকায়। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা।
অমিতাভ বচ্চনের ‘জলসা’রও আনুমানিক দাম প্রায় ১২০ কোটি টাকা। প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট জায়াগার উপর তৈরি বাড়িটি পরিচালক রমেশ সিপ্পি অমিতাভ বচ্চনকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন।
কিংফিশারের অধিকর্তা বিজয় মাল্যও দেশের দামি বাড়িগুলির একটির মালিক। বেঙ্গালুরুর ‘হোয়াইট হাউজ ইন দ্য স্কাই’ প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট এলাকার উপর অবস্থিত। বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা।