The astronauts’ nutrition

মহাকাশে যেন শরীর না ভাঙে, ওজন ঠিক রাখতে সুনীতাদের পাতে চিংড়ি, পিৎজ়া! খাওয়ার জন্য বিশেষ পাত্র

মহাকাশে ওজন স্থিতিশীল রাখতে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয় মহাকাশচারীদের। সেই পরিমাণ খাবার শরীরকে না দিলে শরীর ভাঙতে শুরু করে ও দ্রুত ওজন কমতে থাকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০৩
Share:
০১ ২১
Daily diet chart of Sunita Williams and astronauts in international space centre

মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মহাকাশে আটকে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সহযাত্রী নভোচর বুচ উইলমোর। কয়েক দিনের অভিযানের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা ও উইলিয়াম। প্রায় পাঁচ মাস অতিক্রান্ত, এখনও পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা যায়নি নাসার দুই নভোচরকে।

০২ ২১
Daily diet chart of Sunita Williams and astronauts in international space centre

সাম্প্রতিক কালে সুনীতার যে ছবি বি‌ভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল তাতে তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছিল নানা মহলে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোচরের স্বাস্থ্যের অবনতি দেখে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা হলে কি ভাল নেই সুনীতা? দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে থাকার কারণে কি সঠিক পুষ্টি পাচ্ছেন না সুনীতারা?

Advertisement
০৩ ২১
Daily diet chart of Sunita Williams and astronauts in international space centre

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দেওয়ার সময়ে সুনীতার ওজন ছিল ৬৩ কেজি। সেই তুলনায় সুনীতার শীর্ণ ছবি দেখে মনে হচ্ছিল অনেকটাই ওজন কমে গিয়েছে। তবে নাসা ও সুনীতা দুই তরফেই বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, সুস্থ রয়েছেন নভোচরেরা। ওজন কমার দাবি উড়িয়ে সুনীতা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন মহাকাশে থাকার কারণে বরং তাঁর ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে।

০৪ ২১

মহাকাশে ওজন স্থিতিশীল রাখতে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয় মহাকাশচারীদের। শুধুমাত্র ওজন বজায় রাখার জন্য মহাকাশ সফরের সময় প্রতি দিন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার ক্যালোরির খাবার খেতে হয় নভোচরদের। সেই পরিমাণ খাবার শরীরকে না দিলে শরীর ভাঙতে শুরু করে ও দ্রুত ওজন কমতে থাকে।

০৫ ২১

নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি দিন কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন সুনীতা ও বুচ। তাঁদের ওজন যাতে না কমে যায় তার জন্য পুষ্টিকর খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নাসার চিকিৎসকেরা নিয়মিত মহাকাশচারীদের পুষ্টি ও শারীরিক অবস্থার খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।

০৬ ২১

সুনীতাদের স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়গুলি সংবাদের শিরোনামে আসার পর সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মহাকাশে নভোচারীরা কী খান, মাধ্যাকর্ষণের অভাবে ভেসে বেড়ানো খাবার কী ভাবে মুখে তোলেন, মহাকাশে নভোচারীরা কেমন জীবন কাটান?

০৭ ২১

মহাকাশে খাবার বাছাই করতে হয় শূন্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কথা মাথায় রেখে। এমন কিছু মহাকাশে নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ, যা থেকে বিপদ ঘটতে পারে। দীর্ঘ দিন মহাকাশে থাকার জন্য বিজ্ঞানীদের হালকা, সুস্বাদু, পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। খাবার যাতে দ্রুত নষ্ট না হয় সে দিকেও খেয়াল রাখতে হয়।

০৮ ২১

নাসার সূত্র বলছে, সুনীতাদের মহাকাশে যে খাবার দেওয়া হয় তা আমেরিকার হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারের স্পেস ফুড সিস্টেম ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়। খাবারের বৈচিত্র থাকলেও তাজা খাবারের অভাববোধ করেন মহাকাশচারীরা।

০৯ ২১

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের খাদ্যতালিকায় শাকসব্জি, ফলমূল, মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে শুরু করে বিবিধ খাবার থাকে। মহাকাশচারীরা মহাকাশে পিৎজ়া, মুরগির রোস্ট, চিংড়ির ককটেল এবং টুনা জাতীয় মাছ খান। থাকে সিরিয়াল জাতীয় খাবার ও নানা রকম স্যুপও।

১০ ২১

বিশেষ ভাবে তৈরি ডিমও খান নভোচরেরা। ছোট আকারের ডিমভাজা খাদ্যতালিকায় রাখা হয়। দুধও খান মহকাশচারীরা। তবে তা পুরোপুরি শুকনো গুঁড়ো দুধ। তরল দুধ নষ্ট হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। তাই এটিকে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

১১ ২১

পিৎজ়া এমন ভাবে তৈরি করা হয় যাতে রুটির গুঁড়ো না থাকে। রুটির গুঁড়ো বাতাসে ভেসে বেড়াবে। সেই গুঁড়ো মহাকাশচারীদের নাকে মুখে ঢুকে বিপত্তি বাধাতে পারে।

১২ ২১

পিৎজ়ার সঙ্গে নরম পানীয় খেতে ইচ্ছা হলে নভোচারীরা সেই স্বাদ থেকে বঞ্চিতই থাকেন। কারণ নরম পানীয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকায় তা মহাকাশে নিষিদ্ধ।

১৩ ২১

যে খাবারই খান না কেন, অতিরিক্ত নুন ও গোলমরিচ বাদ দিয়ে খেতে হয় মহাকাশচারীদের। অতিরিক্ত নুন ও গোলমরিচ মহাকাশে ভেসে বেড়াতে পারে। তাই এগুলিকে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

১৪ ২১

মহাকাশচারীদের মদ জাতীয় পানীয় খাওয়া নিষিদ্ধ। এটি মহাকাশচারীদের মস্তিষ্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। নিরাপত্তাজনিত কারণে মহাকাশে মদ জাতীয় পানীয় নিয়ে যাওয়া কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।

১৫ ২১

নভোচারীরা যে সব খাবার খান, তার সবটাই প্রক্রিয়াজাত। খাবারের ওজন কমানোর জন্য সব জল শুষে বার করে নেওয়া হয়। নভোচারীরা খাবার আগে তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী তাতে গরম বা ঠান্ডা জল মিশিয়ে নরম করে নেন।

১৬ ২১

মহাকাশ স্টেশনে বিশেষ পদ্ধতিতে খাবার গরম করে খেতে হয় সুনীতাদের। ফুড ওয়ার্মার যন্ত্র ব্যবহার করেন তাঁরা। চৌম্বকীয় পাত্রে তাঁরা রান্নাও করে খেতে পারেন।

১৭ ২১

নাসা সূত্রে খবর, মোট ৫৩০ গ্যালন জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে মহাকাশ স্টেশনে। সেই জল ব্যবহার করে খাবার তৈরি করতে পারেন সুনীতারা। এমনকি বর্জ্যের ভার লাঘব করতে মহাকাশচারীদের মূত্র ও ঘাম থেকে পানীয় জল তৈরি করার মতো বিশেষ ব্যবস্থাও রয়েছে।

১৮ ২১

আইএসএসের মহাকাশচারীদের প্রত্যেকের দিনে এক গ্যালন শুদ্ধ জল প্রয়োজন হয়। পান করা ছাড়াও শারীরিক ক্রিয়া, খাবার তৈরি এবং অন্যান্য প্রয়োজনে এই জল কাজে লাগান তাঁরা।

১৯ ২১

নাসা জানিয়েছে, বহু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মহাকাশচারীদের শরীরে যত্নের ত্রুটি যাতে না হয়, সে দিকে সর্ব ক্ষণ খেয়াল রাখা হয়। মহাকাশচারীদের ওজন ঠিক রাখতে প্রচুর খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়। বর্ধিত সময়ের জন্য থাকতে হতে পারে এই ভেবে আগে থেকেই সমস্ত পদক্ষেপ করে নাসা। নাসার দাবি, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা থাকে যথেষ্টই।

২০ ২১

প্রতি দিন নভোচরদের জন্য এক কিলো ৭০০ গ্রাম খাবার মজুত করা হয়। মহাকাশে দীর্ঘ অভিযানকে টিকিয়ে রাখার জন্য মহাকাশচারীদের পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং খাবারে বৈচিত্র আনা হয় বলে নাসা জানিয়েছে।

২১ ২১

নাসার মুখপাত্র জিমি রাসেলও জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে থাকা মহাকাশচারীদের নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। তাঁদের নিরীক্ষণের জন্য এক জন শল্যচিকিৎসকও থাকেন। সুনীতারা ভাল আছেন বলেও জানিয়েছেন রাসেল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement