অমিতাভ বচ্চনের হাত ধরে কেরিয়ার শুরু। দশ বছর অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শাহরুখ খান থেকে শুরু করে দক্ষিণী ফিল্মজগতের জনপ্রিয় তারকা নাগার্জুন এবং অজিত কুমারের মতো তারকাদের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। সাফল্য পেলেও বলিপাড়া থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যান প্রিয়া গিল। এখন কোথায় অভিনেত্রী?
১৯৭৫ সালের ৯ ডিসেম্বর পঞ্জাবে জন্ম প্রিয়ার। ১৯৯৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তেরে মেরে সপনে’ নামে একটি হিন্দি ছবিতে প্রথম অভিনয় তাঁর। হিন্দি ছবির পাশাপাশি মালয়ালম, তেলুগু, তামিল, পঞ্জাবি এবং ভোজপুরি ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
অমিতাভ বচ্চনের প্রযোজনায় ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় ‘তেরে মেরে সপনে’। এই ছবিতে আরশাদ ওয়ারসি এবং চন্দ্রচূড় সিংহের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রিয়াকে। অভিনেত্রীর কেরিয়ারের প্রথম ছবিই অমিতাভের হাত ধরে।
‘তেরে মেরে সপনে’র মুক্তির পর ‘শ্যাম ঘনশ্যাম’, ‘সির্ফ তুম’, ‘বড়ে দিলওয়ালা’, ‘জোশ’, ‘বর্ডার হিন্দুস্তান কা’, ‘জিতেঙ্গে হম’, ‘এলওসি কার্গিল’-এর মতো হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন প্রিয়া। ২০০৬ সালে ‘ভৈরবী’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
১৯৯৫ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন প্রিয়া। তার পর বড় পর্দায় অভিনয়ের জন্য অডিশন দিতে শুরু করেন তিনি।
এক বছর ধরে চেষ্টা করার পর ১৯৯৬ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান প্রিয়া। তিন বছর একাধিক ছবিতে অভিনয়ের পরে জনপ্রিয়তার স্বাদ পান অভিনেত্রী।
১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সির্ফ তুম’ ছবিতে সঞ্জয় কপূর, সুস্মিতা সেন, জ্যাকি শ্রফের মতো বলি তারকার সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। এই ছবিতে সঞ্জয়ের বিপরীতে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন প্রিয়া।
‘সির্ফ তুম’ মুক্তির এক বছর পর ২০০০ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘জোশ’। এই ছবিতে শাহরুখ খান, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, চন্দ্রচূড় সিংহ এবং শরদ কপূরের সঙ্গে অভিনয় করেন প্রিয়া।
২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘এলওসি কার্গিল’ নামে একটি জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে দক্ষিণী তারকা নাগার্জুনের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রিয়াকে।
হিন্দি ছবির পাশাপাশি দক্ষিণী ফিল্মজগতেও পা রাখেন প্রিয়া। মোহন বাবু, অজিত কুমার এবং মামুথির মতো অভিনেতার সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান প্রিয়া।
দশ বছর অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর সাফল্যের মুখ দেখেন প্রিয়া। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। একটি ‘ভুয়ো’ ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় তা অভিনেত্রীর কেরিয়ারের উপর প্রভাব ফেলে। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, এক মহিলা অভুক্ত অবস্থায় গুরুদ্বারে বসে খাচ্ছেন। মহিলার অবস্থা দেখে আন্দাজ করা যায় যে আর্থিক দিক দিয়ে তেমন সচ্ছল নন তিনি। এই মহিলাটি নাকি প্রিয়া। অভিনেত্রীর নাম করেই ভিডিয়োটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পর জানা যায় যে সেটি ‘ভুয়ো’। তবে এই ঘটনায় মানসিক ভাবে আঘাত পান প্রিয়া। দু’টি ছবির শুটিংয়ের কাজ ছিল তাঁর হাতে। সেই কাজগুলি তাড়াতাড়ি শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী।
২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পিয়া তোসে নয়না লাগে’ নামের একটি ভোজপুরি ছবি এবং ‘ভৈরবী’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় প্রিয়াকে। তার পর বড় পর্দা থেকে রাতারাতি হারিয়ে যান তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় প্রিয়া এমন ভেঙে পড়েছিলেন যে, অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, বিয়ে করে ভারত ছেড়েই চলে যান প্রিয়া। তাঁর স্বামী অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত নন। দু’দশকের বেশি সময় ধরে ডেনমার্কে সংসার নিয়ে ব্যস্ত প্রিয়া। আলোর রোশনাই থেকে অনেক দূরে রয়েছেন শাহরুখের অভিনেত্রী।