শাহরুখ খান এবং অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কেরিয়ারের প্রথম ছবি। হিন্দি-সহ মোট আটটি ভাষার ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। তবুও বলিপাড়া থেকে উধাও হয়ে যান প্রীতি ঝঙ্গিয়ানী। এখন কী করছেন তিনি?
১৯৮০ সালের ১৮ অগস্ট মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম প্রীতির। বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মুম্বই থেকেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পর মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন প্রীতি।
১৯৯৭ সালে রাজর্ষি প্রযোজনা সংস্থার একটি মিউজ়িক অ্যালবামে অভিনয়ের সুযোগ পান প্রীতি। তার পর থেকেই চর্চা শুরু হয় প্রীতিকে নিয়ে। ছোট পর্দায় জনপ্রিয় পণ্যের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন প্রীতি।
১৯৯৯ সালে ‘মাজাভিল্লু’ নামে মালয়ালম ছবির হাত ধরে বড় পর্দায় পা রাখেন প্রীতি। একই বছর একটি তামিল এবং তেলুগু ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।
২০০০ সালে প্রীতির কেরিয়ার অন্য দিকে মোড় নেয়। বলিউডে কেরিয়ার তৈরির সুযোগ পান তিনি। কেরিয়ারের প্রথম ছবি। তা-ও আবার শাহরুখ খান এবং অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকার সঙ্গে।
২০০০ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মহব্বতে’। শাহরুখ এবং অমিতাভের সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রীতিকে। তারকাখচিত এই ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়োন তিনি।
‘না তুম জানো না হম’, ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’, ‘অনর্থ’, ‘এলওসি কার্গিল’, ‘আন: মেন অ্যাট ওয়ার্ক’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন প্রীতি। কিন্তু কোনও চরিত্রের মাধ্যমেই দাগ কাটতে পারেননি তিনি।
হিন্দি ছবির পাশাপাশি মালয়ালম, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, পঞ্জাবি, উর্দু, রাজস্থানি ভাষার ছবিতেও অভিনয় করার সুযোগ পান প্রীতি। ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মিসটেক’ নামের একটি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।
২০০৬ সালে ‘উইথ লভ তুমহারা’ নামের একটি হিন্দি ছবির শুটিংয়ের সময় প্রযোজক-অভিনেতা পরভিন দবসের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সেটেই বন্ধুত্ব। সেখান থেকে প্রেম। দু’বছর সম্পর্কে থাকার পর ২০০৮ সালে পরভিনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন প্রীতি।
বিয়ের পর ধীরে ধীরে অভিনয়জগৎ থেকে সরে যান প্রীতি। স্বামী পরভিনের সঙ্গে প্রযোজনা সংস্থার কাজে হাত লাগান তিনি।
বিয়ের তিন বছর পর ২০১১ সালে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন প্রীতি। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
২০১১ সালে ‘সহি ধান্দে গলত বান্দে’ নামে একটি হিন্দি ছবির প্রযোজনা করেন প্রীতি। সেই ছবিতে অভিনয় করতেও দেখা যায় তাঁকে।
২০১৭ সালে ‘তাওদো দ্য সানলাইট’ নামে একটি রাজস্থানি ছবিতে অভিনয় করেন প্রীতি। বক্স অফিসে ভালই ব্যবসা করে ছবিটি।
দীর্ঘ বিরতির পর ২০২৩ সালে ‘কাফাস’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রীতিকে। এই সিরিজ়ে শরমন জোশী এবং মোনা সিংহের মতো তারকারা অভিনয় করেন।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে প্রীতি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিবারের কেউ চলচ্চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত নন। বলিউডে তাঁকে পথ দেখানোর মতো কেউ ছিল না বলেই অভিনয়জগতে তাঁর কেরিয়ার মসৃণ হয়নি বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
বর্তমানে মহারাষ্ট্রের পাঞ্জা লড়াইয়ের এক সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন প্রীতি। স্বামী এবং দুই পুত্র নিয়ে ব্যস্ত সংসার তাঁর।
অভিনয়জগৎ থেকে সরে গেলেও এখনও ‘মহব্বতে গার্ল’ হিসাবেই পরিচিত প্রীতি। সমাজমাধ্যমে সক্রিয় তিনি। ইনস্টাগ্রামের পাতায় চার লক্ষের কাছাকাছি অনুগামী রয়েছে শাহরুখের সহ-অভিনেত্রীর।