মা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী, বাবা এবং ভাই দু’জনেই হিন্দি ফিল্মজগতে অভিনেতা হিসাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। কিন্তু অভিনয় থেকে, আলোর রোশনাই থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন তিনি। এখন কী করেন গোবিন্দের দিদি কামিনী খন্না?
মা নির্মলা দেবী ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। কামিনীর বাবা অরুণকুমার আহুজা ছিলেন বলিপাড়ার অভিনেতা। বাবা-মা এবং চার ভাইবোনের সঙ্গে শৈশব কাটে কামিনীর।
কামিনীর ভাই গোবিন্দ বলিউডে অভিনেতা হিসাবে খ্যাতি অর্জন করলেও কামিনী ছিলেন অভিনয়জগৎ থেকে শতহস্ত দূরে। ছোটবেলা থেকে অবশ্য অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। কিন্তু আপত্তি জানিয়েছিলেন তাঁর মা।
কামিনীর মা চাইতেন, তাঁর কন্যা পড়াশোনা নিয়ে কেরিয়ার তৈরি করুন। তাই অভিনয়জগৎ থেকে কামিনীকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। স্কুল-কলেজে অধিকাংশ পরীক্ষায় ভাল ফল করতেন কামিনী।
শৈশব থেকে নাচ করতে ভালবাসতেন কামিনী। মাত্র তিন বছর বয়সে নাকি প্রায় ৩০০টি অনুষ্ঠানে নাচ করে ফেলেছিলেন তিনি।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘হিন্দি ছবির গানের সঙ্গে নাচ করতে ভালবাসতাম আমি। অনেকেই আমায় মঞ্চে নাচ করার অনুরোধ জানাতেন। ছোট থেকেই মঞ্চে পারফর্ম করতাম। হাতখরচের পুরোটাই সেখান থেকেই উপার্জন করতাম।’’
কামিনী বলেছিলেন, ‘‘আমি তখন এতটাই ছোট ছিলাম যে, কী ঘটছে কিছুই বুঝতাম না। তিন বছর বয়সেই আমি ৩০০ থেকে ৪০০টি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে ফেলেছিলাম। অনেকে আমায় বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানেও নিয়ে যেতেন। সেখানে পারফর্ম করেও উপার্জন করেছি আমি।’’
পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালিখিও করতে শুরু করেন কামিনী। ১৩ বছর বয়স থেকে তিনি লেখা শুরু করেন। এখনও পর্যন্ত ২৪টি বই লিখে ফেলেছেন তিনি।
১৮ বছর বয়সে সাত পাকে বাঁধা পড়েন কামিনী। সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে, কামিনী নাচের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত থাকুন, তা চাইতেন না তাঁর স্বামী। বিয়ের পর তাই নাচ পারফর্ম করা ছেড়ে দেন কামিনী।
মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সঙ্গীতের দিকে ঝুঁকে পড়েন কামিনী। ১৬ বছর ধরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চা করেন তিনি। তার পর সঙ্গীত পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।
৩০০টির বেশি জনপ্রিয় সংস্থার বিজ্ঞাপনের আবহসঙ্গীত পরিচালনা করেন কামিনী। ‘সুখ’ ছবির সঙ্গীত পরিচালনাও করেন তিনি। ‘এক নয়ি দিশা’ এবং ‘আন্টি নম্বর ওয়ান’ ছবির সংলাপ লেখেন কামিনী।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, চার বছর ধরে গোবিন্দের সঙ্গে কাজ করেছেন কামিনী। গোবিন্দের আপ্তসহায়িকা হিসাবেও নাকি কাজ করেছেন তিনি। তার পর খ্যাতনামী রেডিয়ো সংস্থায় রেডিয়ো জকি হিসাবেও কাজ করেছেন ।
বর্তমানে জ্যোতিষবিদ্যা চর্চার মাধ্যমে কেরিয়ার গড়ে তুলেছেন কামিনী। ইউটিউবে নিজস্ব একটি চ্যানেল রয়েছে তাঁর।
কামিনীর কন্যা রাগিণী খন্না এবং পুত্র অমিত খন্না দু’জনে হিন্দি ধারাবাহিক জগতের পরিচিত মুখ। কিন্তু আলোর রোশনাই থেকে নিজেকে দূরে রাখেন গোবিন্দের দিদি।
সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই সক্রিয় থাকতে দেখা যায় কামিনীকে। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা ২৮ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।