জনপ্রিয় পরিচালক ইমতিয়াজ আলির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ। কেরিয়ারের প্রথম ছবি বলি অভিনেতা রণবীর কপূরের সঙ্গে। ন’বছর ধরে হিন্দি ফিল্মজগতে কাজ করে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মামলা লিগাল হ্যায়’ ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করে রাতারাতি সকলের নজর কেড়েছেন নাইলা গ্রেওয়াল।
চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহেই নেটফ্লিক্স ওটিটি প্ল্যটফর্মে মুক্তি পায় ‘মামলা লিগাল হ্যায়’ নামের কমেডি ঘরানার একটি কোর্টরুম ড্রামা সিরিজ়। এই সিরিজ়ের মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছেন রবি কিষেণ, ঠিক তেমনই পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন নিধি বিশ্ত, অনন্ত জোশী, যশপাল শর্মার মতো তারকা। তবে এই সিরিজ়ে যিনি বিশেষ নজর কেড়েছেন, তিনি নাইলা।
দিল্লিতে জন্ম নাইলার। পরিবারের কোনও সদস্য ফিল্মজগতের সঙ্গে যুক্ত নন। বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে দিল্লিতেই শৈশব, কৈশোর এবং তরুণী জীবন কাটান দিল্লিতেই। সেখানেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন নাইলা।
দিল্লি থেকে গণজ্ঞাপন নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে মডেলিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন নাইলা। মডেলিং নিয়ে কেরিয়ার গড়ে তুলবেন বলে দিল্লি থেকে পাড়ি দেন মুম্বই শহরে।
মুম্বই যাওয়ার পর বিভিন্ন নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারে অভিনয় করতে দেখা যায় নাইলাকে। ধীরে ধীরে অভিনয়জগতের প্রতিও আগ্রহ জাগে তাঁর। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করবেন বলে নানা জায়গায় অডিশন দিতে থাকেন তিনি। অবশেষে ইমতিয়াজ় আলির নজর পড়ে নাইলার উপর।
২০১৫ সালে ইমতিয়াজ়ের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘তামাশা’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন রণবীর কপূর এবং দীপিকা পাড়ুকোন। ‘তামাশা’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্য নাইলাকে প্রস্তাব দেন ইমতিয়াজ়। পরিচালকের প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান তিনি।
‘তামাশা’ ছবিতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রের জন্য অভিনয় করলেও ইমতিয়াজ়ের হাত ধরে কেরিয়ার শুরু করেন বলে পেশাগত জীবনের গোড়াতেই সাফল্যের মাইলফলক গড়ে তোলেন নাইলা।
কেরিয়ারের প্রথম ছবি মুক্তির পর দু’বছরের ব্যবধান। ২০১৭ সালে অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারির পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বরেলি কি বরফি’। আয়ুষ্মান খুরানা, রাজকুমার রাও, কৃতি শ্যানন, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, সীমা পাহওয়ার মতো বলি তারকা এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন। ‘বরেলি কি বরফি’ ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় নাইলাকে।
‘বরেলি কি বরফি’ ছবিটি মুক্তির পর একই বছর ২০১৭ সালে মুক্তি পায় ‘ডিয়ার মায়া’ নামের একটি হিন্দি ছবি। সুনয়না ভাটনগরের পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন বলি অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। এই ছবিতেই পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান নাইলা।
২০২০ সালে রনি স্ক্রুওয়ালার প্রযোজনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ভাঙ্গরা পা লে’ নামের কমেডি ঘরানার হিন্দি ছবি। সানি কৌশল এবং রুকশার ধিলোঁর পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয় করেন নাইলা। যদিও ছবিটি কবে মুক্তি পায়, কবেই বা প্রেক্ষাগৃহ থেকে বিদায় নেয়, তা টের পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালে অনুভব সিংহের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘থপ্পড়’। তাপসী পন্নু অভিনীত এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন নাইলা।
২০১৫ সাল থেকে বলিপাড়ার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও শুধুমাত্র পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে নাইলাকে। তবে ওটিটির পর্দায় পা রেখে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান তিনি। ‘মামলা লিগাল হ্যায়’ ওয়েব সিরিজ়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান নাইলা।
‘মামলা লিগাল হ্যায়’ সিরিজ়ে অভিনয় করে দর্শকের মনে খুব কম সময়ের মধ্যেই জায়গা করে নেন নাইলা। সিরিজ় মুক্তির পর তাঁকে নিয়ে কৌতূহলীও হয়ে পড়েন দর্শকের একাংশ। সমাজমাধ্যমে অনুরাগী মহলের পরিধিও খুব কম সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে নাইলার। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে নাইলার অনুরাগীর সংখ্যা দেড় লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, একটি হিন্দি ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে নাইলাকে। চলতি বছরের জুন মাসে সেই ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা।
২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইশ্ক ভিশ্ক’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রেখেছিলেন শাহিদ কপূর এবং অমৃতা রাও। রোম্যান্টিক ঘরানার এই ছবি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসাও করে। এই ছবির দ্বিতীয় পর্ব ‘ইশ্ক ভিশ্ক রিবাউন্ড’-এ অভিনয় করতে দেখা যাবে নাইলাকে।
নাইলার পাশাপাশি ‘ইশ্ক ভিশ্ক রিবাউন্ড’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে রোহিত শ্রফ, বলি অভিনেতা হৃতিক রোশনের তুতো বোন পশমিনা রোশন এবং জ়িবরান খানকে। কর্ণ জোহরের ‘কভি খুশি কভি গম’ ছবিতে শিশু অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল জ়িবরানকে। বড় পর্দায় রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করে নাইলা দশে কত গোল পান তা-ই দেখার।