হাথরসের রতিভানপুরে ভোলে বাবা সৎসঙ্গ’ ভজন অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা ১০০ পেরিয়েছে। স্বাধীন ভারতে গত ছ’দশকে এমন ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েক বার।
স্বাধীন ভারতের প্রথম এবং বৃহত্তম পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা উত্তরপ্রদেশেই। ১৯৫৪ সালে। ইলাহাবাদে (বর্তমান প্রয়াগরাজ) মহাকুম্ভ মেলায় প্রাণহানি হয়েছিল প্রায় ৮০০ জনের।
২০০৫ সালে মহারাষ্ট্রের সাতারার মন্ধের দেবীর মন্দিরে সঙ্কীর্ণ পথে ওঠার হুড়োহুড়িতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৩৫০ জন পুণ্যার্থীর।
২০০৬ সালের জানুয়ারিতে অগস্টে হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুরে নয়না দেবী মন্দিরের পাহাড়ি পথে বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীর ধাক্কাধাক্কির ফলে পদপিষ্ট হয়ে এবং খাদে পড়ে মারা যান ১৫০ জন।
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে রাজস্থানের জোধপুরে চামুণ্ডাদেবী মন্দিরে নবরাত্রি উৎসবের সময় পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ১২০। আহতের সংখ্যা ছিল আরও বেশি।
২০১১ সালের জানুয়ারিতে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে মকরজ্যোতি অনুষ্ঠানে সমবেত লক্ষাধিক তীর্থযাত্রীর ঠেলাঠেলির ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে ১০৬ জন মারা যান।
২০১৩ সালের অক্টোবরে মধ্যপ্রদেশের দাতিয়ায় রতনগড় মাতার মন্দিরে পাঁচ লক্ষ ভক্তের চাপে ভেঙে পড়ে ব্যারিকেড। ভিড়ের ধাক্কায় পাহাড়ি পথে গড়িয়ে ১৫৫ জন মারা যান।
শতাধিক মৃত্যুর সাক্ষী না হলেও ২০১০-এ উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে রামজানকী মন্দিরের সামনে পদপিষ্টের বলি হন ৬৪ জন। কুন্ডার কৃপালু মহারাজ আশ্রমে ঘটেছিল ওই দুর্ঘটনা।
উত্তরাখণ্ডের তীর্থশহর হরিদ্বার ২০১১-র নভেম্বরে পদপিষ্ট-মৃত্যু দেখেছিল। গঙ্গার বিখ্যাত হর-কি-পৌড়ী ঘাটে ঝরে গিয়েছিল ২২টি প্রাণ।
২০১২ সালে বিহারের রাজধানী পটনায় গঙ্গার আদালতগঞ্জ ঘাটে ছট পুজোর সময় বিপুল ভিড়ের চাপে ২০ জন মারা গিয়েছিলেন। আহতের সংখ্যা ছিল অর্ধশতাধিক।
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে পটনার গান্ধী ময়দানে দশেরার ‘রাবণ-দহন’ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৩৩ জন মারা গিয়েছিলেন।
২০১৪-র জানুয়ারিতে দাউদি বোহরা মুসলিম গোষ্ঠীর ধর্মগুরু সায়েদনা মহম্মদ বুরহানুদ্দিনের মুম্বইয়ের মালাবার হিলসের বাসভবনের সামনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১৫-র অগস্টে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে ১৫ জন এবং অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রিতে গোদাবরী পুস্করালু উৎসবে ২২ জন পদপিষ্ট হয়ে মারা যান।
২০১৬-য় নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতে একটি ধর্মীয় শিবিরে যোগ দিতে যাওয়ার সময় রাজঘাট সেতু সংলগ্ন অপ্রশস্ত পথে ভিড়ের চাপে ২২ জন ভক্তের প্রাণ গিয়েছিল।
২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরার বৈষ্ণোদেবী মন্দির চত্বরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১২ জনের। দু’দল দর্শনার্থীর গন্ডগোল থেকেই ওই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল।
ধর্মীয় উৎসবে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এ রাজ্যেও। ২০১৯ সালে অগস্টে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের কচুয়ায় লোকনাথ মন্দিরে মারা গিয়েছিলেন পাঁচ জন। ২০১৭-য় গঙ্গাসাগর মেলার সময় কচুবেড়িয়া ঘাটে তিন জনের মৃত্যু হয়।