নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। আমির খান, অভিষেক বচ্চন, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, কাজল, বিদ্যা বালন, আলিয়া ভট্টের মতো বলি তারকাদের সঙ্গে বড় পর্দায় অভিনয় করেন। হিন্দি টেলিভিশনজগতের জনপ্রিয় তারকা রাম কপূরকে বিয়ে করেন গৌতমী কপূর।
১৯৭৪ সালের ২১ জুন মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম গৌতমীর। তাঁর বাবা-মা কেউই অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত নন। মুম্বইয়ে স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করে মডেলিংজগতে পা রাখেন তিনি।
১৬ বছর বয়স থেকে মডেলিং শুরু করেন গৌতমী। কয়েক বছর ফ্যাশন সরণির সঙ্গে যুক্ত থাকার পর মডেল হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। সেখান থেকে ছোট পর্দায় অভিনয়েরও সুযোগ পান তিনি।
১৯৯৭ সাল থেকে ছোট পর্দায় সম্প্রচারণ শুরু হয় ‘স্যাটারডে সাসপেন্স’ ধারাবাহিকের। এই ধারাবাহিকের দু’টি পর্বে অভিনয় করতে দেখা যায় গৌতমীকে। ১৯৯৮ সালে সম্প্রচারিত ‘ফ্যামিলি নম্বর ১’ ধারাবাহিকের দু’টি পর্বে অতিথিশিল্পী হিসাবে অভিনয় করেন তিনি।
ছোট পর্দায় নিজের পরিচিতি তেমন গড়তে না গড়তেই বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান গৌতমী। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বিন্দাস’ নামের একটি মরাঠি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এই প্রথম বড় পর্দায় অভিনয় তাঁর। তার পর অবশ্য ছোট পর্দায় কাজ করতেই ফিরে যান তিনি।
হিন্দি টেলিভিশনজগতে ক্রাইম ঘরানার জনপ্রিয় শো ‘সিআইডি’র একটি পর্বে অভিনয় করেন গৌতমী। ২০০০ সালে ‘ঘর এক মন্দির’ নামের হিন্দি ধারাবাহিকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেই ছোট পর্দায় পরিচিতি পান গৌতমী।
তার পর একে একে ‘ধড়কন’, ‘কহতা হ্যায় দিল’ এবং ‘লিপস্টিক’ নামের হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন গৌতমী। ২০০৩ সালে তাঁর কেরিয়ার অন্য দিকে মোড় নেয়। হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুছ না কহো’ ছবিতে অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করেন গৌতমী। একই বছর ব্যক্তিগত জীবনেও বদল আসে অভিনেত্রীর। ২০০৩ সালে হিন্দি ধারাবাহিকজগতের জনপ্রিয় তারকা রাম কপূরের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন গৌতমী।
মধুর শ্রফ নামে এক আলোকচিত্রশিল্পীকে প্রথমে বিয়ে করেছিলেন গৌতমী। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। বিবাহবিচ্ছেদের পর কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
টেলিপাড়ার গুঞ্জন, ‘ঘর এক মন্দির’ ধারাবাহিকের সেটে রামের সঙ্গে আলাপ হয় গৌতমীর। প্রথম আলাপ থেকে বন্ধুত্ব এবং তার পর সম্পর্কে জড়ান দুই তারকা। কয়েক বছর সম্পর্কে থাকার পর ২০০৩ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন তাঁরা।
‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’, ‘কবুল হ্যায়’, ‘খেলতি হ্যায় জিন্দেগি আঁখ মিছোলি’, ‘তেরে শহর মে’-এর মতো ধারাবাহিকে পর পর অভিনয় করেন গৌতমী। ২০১৫ সালে সম্প্রচারিত ‘পরবরিশ’-এর দ্বিতীয় পর্বে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর আর ছোট পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে।
‘ফনা’, ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’, ‘শাদি কে সাইড এফেক্টস’, ‘লে কর হম দিওয়ানা দিল’ নামের হিন্দি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন গৌতমী। ২০১৪ সালের পর বড় পর্দায় অভিনয় থেকে বিরতি নেন তিনি। এমনকি বিরতি নেওয়ার সময় ছোট পর্দার কোনও ধারাবাহিকেও দেখা যায়নি তাঁকে।
২০২০ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আবার অভিনয়ে ফিরে আসেন গৌতমী। ‘স্পেশাল ওপ্স’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা যায় গৌতমীকে। তার এক বছর পর ডিজ়নি প্লাস হটস্টার ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘স্পেশাল ওপ্স ১.৫: দ্য হিম্মত স্টোরি’। এই ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয় করেন গৌতমী।
২০২১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘সত্যমেব জয়তে ২’। দীর্ঘ বিরতির পর জন আব্রাহম অভিনীত এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় গৌতমীকে।
২০০৬ সালে কন্যাসন্তান সিয়ার জন্ম দেন গৌতমীর। সিয়ার জন্মের তিন বছর পর ২০০৯ সালে পুত্রসন্তান অক্ষের জন্ম দেন অভিনেত্রী।
২০২১ সালের পর দু’বছর অভিনয় না করলেও সমাজমাধ্যমে সক্রিয় থাকেন গৌতমী। ইতিমধ্যে ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা দেড় লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।