রজোনিবৃত্তি হতে পারে পুরুষদেরও। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁর প্রভাবও পড়ে পুরুষদের জীবনে।
মেনোপজ় বা রজোনিবৃত্তি মানেই তা কেবল মহিলাদের বিষয় নয়। চিকিৎসকদের মতে, পুরুষদের জীবনেও আসে সেই পরিবর্তন।
শুনতে খানিকটা অবাক লাগলেও বিষয়টি সত্যিই ঘটে। সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সে মহিলাদের মেনোপজ় হয়।
ডিম্বাশয় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনও হয় এই সময়ে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, মিলনের প্রতি অনীহা আসে।
৩০ বছরের পর থেকে প্রতি বছর পুরুষদের শরীরেও টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমতে শুরু করে।
একটা সময় পুরুষদের জীবনে আসে রজোনিবৃত্তির মতো মুহূর্ত। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘অ্যান্ড্রোপজ়’ বলা হয়।
মেনোপজের মতো অ্যান্ড্রোপজ় শুধু বয়স বৃদ্ধির উপরেই নির্ভর করে না। জীবন যাপনে কিছু অনিয়ম বয়সের আগেই অ্যান্ড্রোপজ় ডেকে আনতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ৩০ বছরের পর প্রতি বছর ছেলেদের শরীরে ১ শতাংশ হারে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব অ্যান্ড্রোপজ়ের মূল কারণ হলেও রোজকার জীবনে কিছু অনিয়মের কারণে অ্যান্ড্রোপজ শুরু হয় বয়সের আগেই।
খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, শরীরচর্চায় অনীহা, মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়।
ওবেসিটি, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো ক্রনিক অসুখও অ্যান্ড্রোপজ় ডেকে আনে। বিশেষ কিছু ওষুধের প্রভাবেও টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে যায়।
রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপিও সময়ের আগেই পুরুষদের অ্যান্ড্রোপজের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া, মানসিক অবসাদ, উদ্বেগও অ্যান্ড্রোপজ ডেকে আনে।
ঋতুবন্ধের মতোই অ্যান্ড্রোপজ় পুরুষদের অনেক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটায়। অবসাদে ভোগা, ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, শরীরে স্ফূর্তি কমে আসা, শারীরিক দক্ষতা কমে আসা, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা, শরীরের রোম ঝরে যাওয়া, ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া, যৌন মিলনে অনীহা, আত্মবিশ্বাসের অভাব— এগুলিই অ্যান্ড্রোপজ়ের অন্যতম লক্ষণ।
কম বয়সে অ্যান্ড্রোপজ়ের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করলে জীবনযাপনে বদল আনা জরুরি। ডায়েটে বদল, নিয়ম করে শরীরচর্চা করা, মানসিক ক্লান্তি দূর করা, পর্যাপ্ত ঘুম এ ক্ষেত্রে ভীষণ জরুরি।
সমস্যা তাতেও না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সে ক্ষেত্রে ‘হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’ করাতে হতে পারে।