Kidnap

টোপ দিয়ে আবু ধাবি থেকে ডেকে এনে অপহরণ শিল্পপতিকে! ছক ভেস্তে দেয় ‘অচেনা ভাষার’ ফোনকল

ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছিল ভারতের এক গ্যাং। জেলে বসেই ছক কষেছিলেন পাণ্ডা। তাঁদের ধরতে চলে শুটআউট। মারা যান তিন জন।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০৫
Share:
০১ ১৪

আবু ধাবির শিল্পপতিকে অপহরণ এবং উদ্ধারের ঘটনা কোনও সিনেমার থেকে কম ছিল না। উদ্ধারে আর পাঁচ মিনিট দেরি হলে হয়তো বাঁচতেন না ব্যবসায়ী। উদ্ধার ঘিরে চলেছিল শুটআউট। তাতে মারা গিয়েছিলেন তিন অপহরণকারী। ঘটনার পর ২২ বছর কেটে গিয়েছে। তবু সেই কাণ্ড আজও মনে রেখেছে দিল্লি পুলিশ।

০২ ১৪

অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম থেক্কট সিদ্দিকি। আবু ধাবিতে বিশাল ব্যবসা ছিল তাঁর। আদতে কেরলের কালিকটের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। আরও অনেক মালয়ালির মতো ভাগ্যান্বেষণে থেক্কটও গিয়েছিলেন আবু ধাবিতে। তার পর সেখানেই থিতু হন।

Advertisement
০৩ ১৪

ভারতের এক গ্যাং অনেক দিন ধরেই তাঁকে অপহরণের ছক কষছিল। গ্যাংয়ের মাথা ছিলেন বাবলু শ্রীবাস্তব। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, সিদ্দিকিকে অপহরণ করে টাকা হাতানো। সে জন্য ব্যবসার চুক্তি করানোর টোপ দিয়ে আবু ধাবি থেকে নয়াদিল্লিতে ডেকে আনা হয়েছিল সিদ্দিকিকে।

০৪ ১৪

চুক্তি যখন মোটামুটি চূড়ান্ত, তখনই আবু ধাবি থেকে দিল্লি আসেন সিদ্দিকি। ২০০১ সালের ১১ মার্চ দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিলেন সিদ্দিকি। সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবলুর গ্যাংয়ের লোকজন।

০৫ ১৪

সিদ্দিকি বিমানবন্দর থেকে বার হতেই রাকেশ নামে এক জন তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করেন। তার পর নিজের গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যান দক্ষিণ দিল্লির পথে। সিদ্দিকি বুঝতে পারেন তিনি অপহৃত হয়েছেন। গোটা পরিকল্পনাটা করেছিলেন বাবলু নিজে। তা-ও আবার ইলাহাবাদের জেলে বসে। তখনও তিনি একটি মামলায় জেল খাটছিলেন।

০৬ ১৪

১২ মার্চ পর্যন্ত সিদ্দিকির কোনও খোঁজ পায়নি তাঁর পরিবার। অবশেষে সিদ্দিকির স্ত্রীর কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি জানান, সিদ্দিকিকে তাঁরা অপহরণ করেছেন। ১০ লক্ষ ডলার মুক্তিপণ চান। ভারতীয় মুদ্রায় যা আট কোটি টাকারও বেশি।

০৭ ১৪

সিদ্দিকির পরিবারের এক জন পরে জানান, স্ত্রী ছাড়া কেরলে তাঁর মা এবং ভাইকেও ফোন করেছিলেন অপহরণকারীরা।

০৮ ১৪

সিদ্দিকির স্ত্রী আবু ধাবিতে ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। খবর পেয়ে দিল্লি পুলিশ এবং সিবিআইকে সতর্ক করে ভারতীয় দূতাবাস। এর পরই সক্রিয় হয় দিল্লি পুলিশের বিশেষ শাখা এবং সিবিআই।

০৯ ১৪

অপহরণের পর স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখেছিলেন বাবলুর গ্যাংয়ের সদস্যেরা। স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমেই সিদ্দিকির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তাঁরা। সিবিআইয়ের বিশেষ দল চেষ্টা করেও তাই আড়ি পাততে পারেনি। কারণ তখনও সেই প্রযুক্তি ছিল না।

১০ ১৪

কিন্তু অপহরণকারীরা একটি ভুল করেছিলেন। সিদ্দিকিকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিয়েছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে মাতৃভাষা মালয়ালমে কথা বলেছিলেন সিদ্দিকি। কী বলেছিলেন, কিছুই বোঝেননি অপহরণকারীরা। সিদ্দিকি কোথায় রয়েছেন, সেই নিয়ে আঁচ দিয়েছিলেন স্ত্রীকে। তা শুনেই তাঁকে খুজে বার করার চেষ্টা করে সিবিআই আর দিল্লি পুলিশ।

১১ ১৪

দক্ষিণ দিল্লির এক জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল সিদ্দিকিকে। সেখানে চলছিল অত্যাচারও। যাতে তিনি পরিবারকে সে সব কথা জানিয়ে টাকা আনতে পারেন। এমনকি সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছিল সিদ্দিকিকে।

১২ ১৪

পরিবার মুক্তিপণ দেবে না বুঝতে পেরে ১৩ মার্চ সর্বপ্রিয়া বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিদ্দিকিকে। অপহরণকারীরা ভেবেছিলেন, সেখানেই তাঁকে খুন করবেন। সে জন্য অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

১৩ ১৪

১৩ মার্চ বিকেল ৫টা নাগাদ সিদ্দিকিকে খুনের চেষ্টা করেন অপহরণকারীরা। ঠিক তখনই সেখানে এসে পড়ে পুলিশ এবং সিবিআইয়ের দল। তাদের দেখে গুলি চালান অপহরণকারীরা। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। মারা যান তিন জন অপহরণকারী।

১৪ ১৪

তদন্তের স্বার্থে এর পর সিদ্দিকিকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। অপহৃত হওয়ার পর নির্যাতিত হয়েছিলেন তিনি। বেশ কয়েক দিন তাঁর চিকিৎসা চলে। এর পর তাঁকে আবু ধাবিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করেন, বাবলুকে মদত জুগিয়েছিল আবু ধাবির এক ডনও। সেখান থেকেই আসত নির্দেশ। যদিও এই নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি সিবিআই। তাদের ধন্যবাদ দিয়েছিল সিদ্দিকির পরিবার।

সব ছবি সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement