পরিবারের প্রায় সকলেই সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। পারিবারিক দাবি মেনে তিনিও সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। এক সময় মেশিনগান চালানোতেও দক্ষ হয়ে ওঠেন। তবে বছর কয়েক পর সে সব ছেড়েছুড়ে অন্য ক্ষেত্রে কামাল করছেন কাইলি গানার। আমেরিকান সেনাবাহিনী এই প্রাক্তন সার্জেন্ট এখন পর্নতারকা!
মেশিনগান চালানোয় দক্ষ কাইলি আজকাল পর্ন ফিল্মে অভিনয় করেই মোটা অঙ্ক কামাচ্ছেন। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই সাজগোজ করতে ভালবাসতেন। ভাবতেন, বড় হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন। অভিনয় করবেন টেলিভিশনে অথবা পর্ন ফিল্মে। তবে তাঁর পরিবারে পেশা হিসেবে সেনার কাজ বেছে নেওয়াটাই রেওয়াজ। তাই প্রথমে তিনিও সেই পথে পা বা়ড়িয়েছিলেন।
কাইলির জন্ম ১৯৯৭ সালে আমেরিকার হাওয়াইয়ের একটি ছোট্ট দ্বীপ ওয়াহুতে। সেখানেই বে়ড়ে ওঠা। তবে স্কুল-কলেজের পড়াশোনার ফাঁকেই অভিনয় করার স্বপ্ন লালন করেছেন। কম বয়স থেকে সে স্বপ্নের পিছনে ছোটা শুরু করেন কাইলি।
হাইস্কুলের পড়াশোনার ফাঁকে টেলিভিশনের ঘোষিকা হওয়ার ট্রেনিং নিতেন কাইলি। এক সময় স্নাতকস্তরের প়ড়াশোনাও শেষ করেন। তবে টেলিভিশনে কাজ বা অভিনয়ের স্বপ্ন অধরা রেখেই সেনায় যোগ দেন ১৮ বছরের কাইলি। আমেরিকার সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি হয় তাঁর।
আমেরিকার সেনাবাহিনীতে এম-২৪০ মেশিনগান চালাতেন কাইলি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাতে দক্ষও হয়ে ওঠেন। যুদ্ধের ময়দানে কী ভাবে শত্রুপক্ষকে ধরাশায়ী করতে হয়, সে সব কায়দাও শেখানো হত তাঁকে। স্নাতক হওয়ার জেরে সার্জেন্টের পদে উঠে আসতে দেরি হয়নি তাঁর। তবে সে সবের মাঝেও অভিনয়ের নেশায় বিভোর থাকতেন কাইলি।
ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর হাতছানি দিলেও সে স্বপ্নপূরণের উপায় ছিল না। সেনার কাজের ফাঁকেও কাইলির মন পড়ে থাকত স্কুল-কলেজের দিনগুলিতে। হাইস্কুলের ‘চিয়ারলিডার’ কাইলির জনপ্রিয়তা তো কম ছিল না! ব্রডকাস্ট কমিউনিকেশনের ছাত্রী হিসাবে ক্যামেরার সামনে কী ভাবে সংবাদ পরিবেশনা করতে হয়, তা-ও শিখছিলেন জোরকদমে। কিন্তু পেশার তাগিদে সে সব ছাড়তে হয়েছে।
আচমকাই যেন শাপে বর হল! ২০১৯ সালে আমেরিকার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাইলির পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। কাইলির কাছে তখন অফুরন্ত অবসর।
আমেরিকার সেনাবাহিনী থেকে সার্জেন্ট হিসেবে অবসর নেন কাইলি। এর পর পর নিজের স্বপ্নের পিছনে ছুটতে শুরু করেন। এ বার নতুন ক্ষেত্র! আমেরিকার একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ওয়েবক্যামের সামনে অ্যাডাল্ট মডেলিং করার কাজ। সেখানে নগ্ন হয়ে শো করা বা সেক্সচ্যাট করতেন কাইলি।
আমেরিকার অ্যাডাল্ট ইন্ডাস্ট্রিতে যোগদানের পর তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন কাইলি। নিজের নতুন পেশাও বেশ ভাল লাগছিল। বেশ কিছুকাল পর নিজের এজেন্ট খোঁজা শুরু করেন। এজেন্টের খোঁজ পেতে দেরি হয়নি সেনার এই প্রাক্তন সার্জেন্টের।
২০২০ সাল থেকে পর্নোগ্রাফি ফিল্মে অভিনয় শুরু করেন ২৩ বছরের কাইলি। তিনি জানিয়েছেন, কম বয়স থেকেই পর্ন ফিল্ম থেকে অভিনয়ের খুঁটিনাটি শিখেছেন।
পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকা যে সহজ নয়, তা-ও জানিয়েছেন। অ্যারিজোনায় একটি এজেন্সিতে স্ক্রিন টেস্ট দিয়ে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়েছিল। ২০২০ সালে ‘ব্ল্যাক অ্যাম্বুশ’ নামে কাইলির প্রথম টেলিভিশন সিরিজ মু্ক্তি পায়। সে বছরই একের পর এক পর্ন ভিডিয়োতে অভিনয় করেছেন কাইলি। তার প্রতিটি ভিডিয়োই নেটদুনিয়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে।
ইনস্টাগ্রাম বা অন্যান্য নেটমাধ্যমে কাইলির ভক্তসংখ্যা নেহাত কম নয়। পর্ন ফিল্মের পাশাপাশি হলিউডেও পা রাখতে চান কাইলি। হলিউডি তারকাদের মধ্যে কার সঙ্গে কাজ করতে চান? কাইলি জানিয়েছেন, ম্যাথু ম্যাকনি এবং লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিওই তাঁর পছন্দের।