একাধিক ছদ্মবেশে প্রতারণা করার অভিযোগে ওড়িশায় গ্রেফতার কাশ্মীরের এক যুবক।
৩৭ বছর বয়সি ওই যুবকের নাম সৈয়দ ইশান বুখারি। তিনি কাশ্মীরের কুপওয়ারার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবক কোথাও নিজেকে সেনাবাহিনীর চিকিৎসক, কোথাও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উচ্চপদস্থ কর্তা, আবার কোথাও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ-র শীর্ষকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে পরিচয় দিতেন।
অভিযোগ, সময়ে সময়ে অভিযুক্ত যুবক নিজের নাম এবং পরিচয় পাল্টে ফেলতেন। শনিবার ওড়িশা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) জয়পুর জেলার নেউলপুর গ্রাম থেকে সৈয়দকে গ্রেফতার করেছে।
পাকিস্তানের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগাযোগ ছিল বলেও তদন্তকারীদের দাবি।
এসটিএফ জানিয়েছে, সৈয়দের কাছে থেকে দেশ-বিদেশের বহু মেডিক্যাল কলেজের ভুয়ো শংসাপত্র উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে হলফনামা, বন্ড, এটিএম কার্ড, চেক বই, আধার কার্ড এবং ভিজ়িটিং কার্ড মিলিয়ে ১০০টিরও বেশি নথি।
এসটিএফের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সৈয়দ আলাদা আলাদা পরিচয়ে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, কাশ্মীর-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অন্তত ছ’জন মহিলাকে বিয়ে করেছেন।
এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বেশ কয়েক জন মহিলার সঙ্গে তাঁর প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপেও তিনি সক্রিয় ছিলেন।
এসটিএফের ইনস্পেক্টর জেনারেল জে এন পঙ্কজ জানিয়েছেন, সৈয়দের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি জাল পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে বলেও অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।
যদিও পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে ওই যুবকের কোনও যোগসূত্র এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এসটিএফের শীর্ষ আধিকারিক।
তবে এসটিএফের শীর্ষকর্তারা মনে করছেন, দেশের ‘শত্রুদের’ সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে সৈয়দের। তবে তা আরও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’কে পঙ্কজ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। তিনি যে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, তা এখনই বলা যাবে না।’’
পঙ্কজের দাবি, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র ছিল এবং তা খতিয়ে দেখা হবে। ধৃত যে এক জন পাকিস্তানি গুপ্তচর, সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা এনআইএ-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’’
এসটিএফ সূত্রে খবর, কাশ্মীর পুলিশও অনেক দিন ধরে সৈয়দকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি জালিয়াতি এবং প্রতারণার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। কাশ্মীরে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রয়েছে।
বর্তমানে পঞ্জাব, কাশ্মীর এবং ওড়িশার তদন্তকারীদের একটি যৌথ দল সৈয়দকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলেও এসটিএফের ইনস্পেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন।