Kangana Ranaut

‘ভিক্ষার স্বাধীনতা’ থেকে প্রাক্তন প্রেমিকের উপর ‘কালোজাদু’! বিতর্কের ‘কুইন’ কঙ্গনা

প্রার্থী হয়েই নিজের কেন্দ্রে প্রচারে নেমে পড়েছেন কঙ্গনা। দোলের দিন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে রং খেলতে, শুভেচ্ছা বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ ১১:৪৪
Share:
০১ ২০

তিনি যে বিজেপির প্রার্থী হবেন, এ যেন ছিল সময়ের অপেক্ষা। অতীতে বার বার প্রকাশ্যে বিজেপির হয়ে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। বিরোধী দলগুলিকে একহাত নিয়েছেন। সেই কঙ্গনা রানাউতকে হিমাচলের মাণ্ডি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করল বিজেপি।

০২ ২০

প্রার্থী হয়েই নিজের কেন্দ্রে প্রচারে নেমে পড়েছেন কঙ্গনা। দোলের দিন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে রং খেলতে, শুভেচ্ছা বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছে। তার আগে আবার বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাথের সঙ্গে।

Advertisement
০৩ ২০

অভিযোগ, সুপ্রিয়া নিজের সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে কঙ্গনাকে নিয়ে ‘অশ্লীল’ মন্তব্য করেছেন। সুপ্রিয়া দাবি করেছেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে গিয়ে অন্য কেউ এ ধরনের পোস্ট দিয়েছেন। তিনি কোনও মহিলাকে অবমাননা করে এ ধরনের পোস্ট করতে পারেন না। কঙ্গনা এবং বিজেপি একহাত নিয়েছেন সুপ্রিয়াকে। কঙ্গনা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, বিভিন্ন চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। এমনকি ‘যৌনকর্মী’-র চরিত্রেও। তাঁদের অবমাননা বন্ধ করা উচিত।

০৪ ২০

কঙ্গনা যখন সুপ্রিয়াকে এ সব বলেছেন, তখন সমাজমাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে তাঁরই এক পুরনো সাক্ষাৎকার। সেখানে অভিনেত্রী উর্মিলাকে ‘পর্নস্টার’ বলেছিলেন তিনি। বাগ্‌যুদ্ধে জড়ানো অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন জনের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছেন তিনি। বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিনেতা হৃতিক রোশনও রয়েছেন সেই তালিকায়।

০৫ ২০

নায়ককে ‘এক্স’ (প্রাক্তন) বলে দাবি করেছিলেন কঙ্গনা। ২০১৬ সালের ঘটনা। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, হৃতিকের কারণেই কি ‘আশিকি ৩’ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন তিনি? এর উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘এক্সরা মিডিয়ার মনোযোগ পেতে অনেক কিছুই করেন।’’

০৬ ২০

এই নিয়ে মুখ খোলেন হৃতিকও। টুইট করে জানান ‘‘আমার সঙ্গে এক মহিলার (আমি নিশ্চিত তিনি সুন্দরী) নাম জড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে মিডিয়া। তার থেকে বরং আমার পোপের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি ছিল। ধন্যবাদ, কিন্তু ধন্যবাদ নয়।’’

০৭ ২০

হৃতিকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন কঙ্গনা। জানিয়েছিলেন, তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন নায়ক। কানাঘুষো ছিল, আদিত্য পাঞ্চোলীর সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন কঙ্গনা। পরে কঙ্গনা অভিযোগ করেছিলেন, আদিত্য তাঁকে হেনস্থা করেছিলেন।

০৮ ২০

প্রথমে নাম প্রকাশ না করলেও পরে আদিত্যর দিকেই আঙুল তোলেন কঙ্গনা। এই নিয়ে তাঁর স্ত্রী জারিনার কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি। পরে জারিনাও দাবি করেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে সাড়ে চার বছর ধরে ডেট করেছিলেন কঙ্গনা।

০৯ ২০

কঙ্গনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল অভিনেতা শেখর সুমনের ছেলে অধ্যয়ন সুমনের। ২০০৮ সালে ‘রাজ-দ্য মিস্ট্রি কনটিনিউ’ ছবিতে এক সঙ্গে কাজ করেছিলেন তাঁরা। তখনই পরিচয়।

১০ ২০

অধ্যয়নের অভিযোগ, তাঁকে মারধর করেছিলেন কঙ্গনা। ‘কালোজাদু’-রও প্রয়োগ করতেন তিনি। কঙ্গনা যদিও মানেননি সেই অভিযোগ।

১১ ২০

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেও বিতর্কে জড়িয়েছেন কঙ্গনা। পরিচালক কর্ণ জোহরের শো ‘কফি উইথ করণ’-এ গিয়ে তিনি খোদ সঞ্চালকের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন ‘নেপোটিজ়ম’ (স্বজনপোষণ)-এর।

১২ ২০

২০২১ সালে একটি সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে কুমন্তব্য করে বসেছিলেন কঙ্গনা। বলেছিলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে যে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, তা আসলে ভিক্ষা। ২০১৪ সালে ভারতীয় নাগরিকেরা আসল স্বাধীনতা পেয়েছেন।’’

১৩ ২০

তিনি যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভক্ত, তা বরাবরই বলে এসেছেন কঙ্গনা। পাশাপাশি বিরোধী নেতাদের সুযোগ পেলেই একহাতও নিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তখন উদ্ধব ঠাকরে। কঙ্গনা বলেছিলেন, মুম্বই পুলিশ ‘বলিউডের মাফিয়াদের মতো’।

১৪ ২০

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন মুম্বইকে। উদ্ধবের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছিলেন। এর পরেই কঙ্গনার প্রযোজনা সংস্থার দফতরে যান পুরসভার আধিকারিকেরা। ‘বেআইনি নির্মাণ’-এর জন্য নোটিস দেন। পরে তাঁর দফতরের একাংশ ভাঙাও হয়। পরে বম্বে হাই কোর্ট পুরসভার পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ দেয়।

১৫ ২০

দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন নিয়েও সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কঙ্গনা। শিখ কৃষকদের ‘খলিস্তানি জঙ্গি’-দের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। কঙ্গনা পাল্টা দাবি করেন, কৃষকেরা তার পর থেকে হুমকি দিচ্ছিলেন তাঁকে। এই নিয়ে থানায় এফআইআরও দায়ের করেছিলেন কঙ্গনা।

১৬ ২০

পরিচালক মহেশ ভট্টের দিকেও আঙুল তুলেছেন কঙ্গনা। অভিযোগ করেছিলেন, পরিচালক মানুষজনকে ‘হিংসায় প্ররোচনা’ দেন। তাঁর আসল নাম মহেশ নন, ‘আসলাম’ বলেও দাবি করেছিলেন। মহেশ-কন্যা আলিয়া ভট্ট, অভিনেত্রী তাপসী পন্নুকেও বিভিন্ন সময়ে একহাত নিয়েছেন।

১৭ ২০

২০২২ সালে ‘ঢাকাড়’ ছবির প্রচারে গিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের মতো ‘অখণ্ড ভারত’-এর দাবি তুলেছিলেন তিনি। কোভিড টিকা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, যে টিকার বিরুদ্ধে প্রচার করেছিলেন বিরোধীরা, এখন প্রাণ বাঁচাতে সেই টিকা নিতেই ছুটছেন। কোভিড মানুষেরই কাজের ফল বলেও দাবি করেছিলেন।

১৮ ২০

কুমন্তব্যের জন্য টুইটার (বর্তমানে এক্স) তাঁর প্রোফাইল নিষিদ্ধ করে দেয়। তাতেও দমেননি তিনি। বোন রঙ্গোলী তখন তাঁর হয়ে পোস্ট দিতে থাকেন। অভিযোগ ছিল, বোনের প্রোফাইল থেকে বকলমে পোস্ট দেন অভিনেত্রীই।

১৯ ২০

২০০৬ সালে মহেশ ভট্ট পরিচালিত ‘গ্যাংস্টার: আ লভ স্টোরি’ ছবিতে কঙ্গনার হাতেখড়ি। বিপরীতে ছিলেন ইমরান হাসমি, সাইনি আহুজা। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘কুইন’, ‘উও লমহে’, ‘তনু ওয়েডস মনু’-র মতো একাধিক হিট ছবি। চার বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। পদ্মশ্রীও পেয়েছেন।

২০ ২০

২০২১ সালে এই কঙ্গনাই একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। সাধারণ মানুষ হিসাবে প্রতিক্রিয়া দেন। সমাজমাধ্যমে মন্তব্য করেন। চার বছর পর তিনি এখন বিজেপির লোকসভা প্রার্থী। রাজনীতি তাঁর রক্তে নেই বললে ভুল। প্রপিতামহ সরযূ সিংহ রানাউত ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক। বাবা অমরদীপ রানাউত পেশায় ব্যবসায়ী। মা ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা। প্রচারে নেমে কতটা ঝড় তোলেন কঙ্গনা, তার প্রভাব কতটা পড়ে ভোটবাক্সে, তা অবশ্য ভবিষ্যতই বলবে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement