‘কল হো না হো’-র সেই ছোট্ট জিয়া কিংবা ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’-র সেই ছোট রোবট-কে মনে রয়েছে নিশ্চয়। দুটো চরিত্রই দর্শকদের মনে এখনও গেঁথে রয়েছে। জিয়া বা রোবট করিশ্মা তখন অনেকটাই ছোট। শিশুশিল্পী হিসাবে পর্দায় আসতে শুরু করেছিলেন তিনি। দর্শক তাঁকে পছন্দও করেছিলেন।
তার পর ছোটপর্দা এবং বড়পর্দা মিলিয়ে একাধিক ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রকে পর্দায় সরল ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। সেই মেয়ে বর্তমানে কী করেন? কেমন রয়েছেন? কোথায় রয়েছেন জানেন?
তাঁর প্রকৃত নাম ঝনক শুক্ল। তিনি তথ্যচিত্র প্রস্তুতকারক হরি শুক্ল এবং অভিনেত্রী সুপ্রিয়া শুক্লর মেয়ে। তাঁর এক বোনও রয়েছে।
ঝনকের জন্ম ১৯৯৬ সালের ২৪ জানুয়ারি। আর কয়েক মাস পরেই ২৫ বছর বয়স হয়ে যাবে তাঁর।
ঝনক ভারতেই থাকেন। ‘কল হো না হো’ ছাড়া ‘ডেডলাইন: সির্ফ ২৪ ঘণ্টে’-তে অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া ২০০৬ সালে ‘ওয়ান নাইট উইথ দ্য কিং’ নামে একটি হলিউড ছবিতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
ছোটপর্দায় ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’ ছাড়া ‘সোন পরী’, ‘হাতিম’, ‘গুমরাহ’-তে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
সঞ্জয়লীলা ভন্সালীর ‘ব্ল্যাক’-এও অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তখন ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’-তেও অভিনয় করছিলেন তিনি। ফলে সময় দিতে না পারায় ছবিটা হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল।
শিশুশিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ হওয়ার পর থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ঝনক। একের পর এক সুযোগ আসছিল তাঁর কাছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আচমকাই যেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে উধাও হয়ে যান তিনি।
অনেকেই জানেন না ঝনক এখন এক জন প্রত্নতত্ত্ববিদ। তিনি পুণের ডেকান কলেজ পোস্ট গ্র্যাজুযেট অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদ্যাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
১৫ বছর বয়সে তিনি অভিনয় জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন পুরোপুরি। মাঝের সময়টা পড়াশোনাতে মনোনিবেশ করেছিলেন।
ঝনক মনে করেন, ছোটবেলায় অনেকটা সময় তিনি অভিনয়ের পিছনে দিয়েছেন। উপার্জনও করেছেন। প্রতি দিন স্কুল, টিউশন সেরে অভিনয়ে সময় দিতে গিয়ে ছেলেবেলার অনেকটা সময় তিনি হারিয়ে ফেলেছেন, আক্ষেপ তাঁর। সে কারণেই ওই সিদ্ধান্ত।
নিজের জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ করছেন ঝনক। অলিতে গলিতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া-দাওয়া, গল্পগুজব এবং নিজের পড়াশোনা। এই নিয়েই দিন কাটে তাঁর।
অভিনয় ছাড়ার কোনও আক্ষেপ নেই। অভিনয় জগতে ফিরে আসার ইচ্ছাও নেই তাঁর। ঝনক স্বপ্ন দেখেন নিউজিল্যান্ড যাবেন। সেখানে জাদুঘরে কাজ নিয়ে এক শান্তির জীবন কাটাবেন।