টেলিভিশনে ‘ক্রাইম শো’ (অপরাধের ঘটনা নিয়ে বিশেষ ধারাবাহিক) দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এক চিকিৎসকের বাড়িতে গয়না চুরি করে পুলিশে জালে ধরা পড়লেন তিন ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায়।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বান্দ্রা এলাকায় খ্যাতনামী দন্ত চিকিৎসক সন্দেশ মায়েকারের বাড়ি থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ১২ লক্ষ টাকার সোনা ও হিরের গয়না চুরি করে পালান তিন অভিযুক্ত।
পরে প্রায় ৫০০টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তিন জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। প্রথমে শ্যামল গোপে নামে এক ব্যক্তিকে দার্জিলিং থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করেই অপর দুই অভিযুক্ত সুরেন্দ্র ছেত্রী ও ইন্দ্রজিৎ সাইনির হদিস পায় পুলিশ।
নেপাল সীমান্ত থেকে ধরা হয় সুরেন্দ্রকে। গোরেগাঁও থেকে পাকড়াও করা হয়েছে ইন্দ্রজিৎকে।
পুলিশের দাবি, টিভিতে ‘ক্রাইম শো’ দেখেই ডাক্তারের বাড়িতে চুরির ছক কষেন অভিযুক্তরা।
চুরির দিন তিরুপতি দর্শনে গিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। সেই সময় তাঁর বাড়ির সদস্যরা ঘুমিয়ে ছিলেন। থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন চিকিৎসক-কন্যা সালোনি।
সালোনি জানিয়েছেন, ভোর পাঁচটা নাগাদ তাঁরা বুঝতে পারেন যে চুরি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, আলমারির তালা ভাঙা ছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, বান্দ্রা এলাকায় খাবার সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রজিৎ। ডাক্তারের বাংলো সম্পর্কে তিনি খোঁজখবর রাখতেন।
চিকিৎসকের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢোকেন গোপে। তার পর চুরির সামগ্রী নিজেদের মধ্যে বাঁটোয়ারা করে সন্তোষ নগর এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগ পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ওই এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ডিসিপি মঞ্জুনাথ সিঙ্ঘে সিনিয়র ইন্সপেক্টর রাজেশ দেভেরে, ইন্সপেক্টর সাগর নিকম, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর বজরঙ্গ জগতাপের নেতৃত্বে একটি দল সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। প্রায় ৫০০ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়
এর পর বিভিন্ন ‘সোর্স’ কাজে লাগায় পুলিশ। জানা যায়, গোপে বাংলায় গিয়েছেন। সেখান থেকে দার্জিলিং হয়ে নেপালে পালানোর ছক রয়েছে।
সেই সূত্র ধরে মুম্বই থেকে একটি টিম গোপেকে ধরতে রওনা হয় দার্জিলিঙের উদ্দেশ্যে। প্রথম গ্রেফতার করা হয় গোপেকে। তাঁকে জেরা করে বাকিদের হদিস মেলে।
জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছেন, তাঁদের টেলিভিশনে ‘ক্রাইম শো’ (অপরাধের ঘটনা নিয়ে বিশেষ ধারাবাহিক) দেখার শখ ছিল।
সেই ধরনের ধারাবাহিক দেখেই ওই চিকিৎসকের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করা হয়। এ জন্য বেছে নেওয়া হয় চিকিৎসকের তিরুপতি দর্শনের দিন।