শুধু বিদেশ নয়, টেসলা বিক্রির বাজারের আওতায় ভারতকেও বাদ রাখেননি ইলন মাস্ক। ২০১৬ সাল থেকে তিনি এমন ব্যবস্থা শুরু করেন যে, ভারতে বসে যে কেউ টেসলা গাড়ি কিনতে পারবেন। তবে সংবাদসংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাত্র আট জন ভারতবাসীর কাছেই এই গাড়িটি রয়েছে।
এই তালিকার প্রথমেই রয়েছে প্রশান্ত রুইয়া। ‘এসার কংগ্লোমারেট’ সংস্থার মালিক প্রশান্ত প্রথম ভারতীয়, যিনি টেসলা গাড়ি কেনেন। ২০১৭ সালে মুম্বইয়ে তাঁর জন্য টেসলা এক্স মডেলটি আনানো হয়েছিল। এই গাড়িটি ৪.৮ সেকেন্ডে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগ ছুঁতে পারে। এক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ২০ লক্ষ টাকা কর-সহ তাঁর মোট এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
ফ্যান্টম ইডব্লিউবি থেকে শুরু করে রোলস রয়েস— সংগ্রহে মোট ১৬৮ ধরনের বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন মুকেশ অম্বানী। এর মধ্যে দু’টি টেসলা গাড়ি রয়েছে তাঁর। টেসলা মডেল এস গাড়িটি সংগ্রহে রেখেছেন তিনি। তবে, এই গাড়ি দু’টি রিলায়্যান্স সংস্থার নামে রেজিস্টার করা হয়েছে।
অম্বানী ছাড়াও বহু নামী সংস্থার মালিক এই গাড়িটি কিনেছেন। এঁদের মধ্যে কেউ শখে কিনেছেন, কেউ আবার ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার করার উদ্দেশ্যেই টেসলা গাড়িটি কিনেছেন। ‘পেটিএম’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বিজয় শেখর শর্মা ২০১৭ সালে টুইট করে লিখেছিলেন যে, তিনি টেসলার গাড়ি কিনতে চলেছেন। ভারতীয় মুদ্রায়, প্রায় আশি হাজার টাকা দিয়ে অনলাইন মাধ্যমে টেসলা মডেল ৩ গাড়িটি বুক করেছিলেন বিজয়।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ডিজিটাল মার্কেটিং সংস্থা ‘পিনস্টর্ম’-এর সিইও মহেশ মূর্তির কাছে একটি নয়, অম্বানীর মতোই তাঁর কাছে দু’টি টেসলার গাড়ি রয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে মহেশ জানিয়েছেন, তিনি মাঝরাতে খোঁজ পেয়েছিলেন যে টেসলা গাড়ি এখন ভারত থেকেও কেনা যাবে। ঝোঁকের বশে তিনি এক সঙ্গে দু’টি গাড়ি অর্ডার করে ফেলেন।
মহেশ প্রথমে ভেবেছিলেন, এই গাড়ির দাম ১৮ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই গাড়ির দাম যে কোটির গুণিতকে, এই বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না। মহেশের কাছে তিনটি মোটরবাইক ও চারটি গাড়ি রয়েছে। সুযোগ পেলে তিনি নাকি এখনও অটোরিকশা অথবা ওলা-উব্রে যাতায়াত করেন। ইলেকট্রিক গাড়িতে যাতায়াত করলে তা দূষণের পরিমাণও কমায়। তাই তিনি এই গাড়িটি কিনেছেন।
জিওকিউআইআই ফিটনেস টেকনোলজি সংস্থার সিইও বিশাল গোন্ডাল। ২০১৬ সালে নেটমাধ্যমে একটি পোস্ট দেখে তিনি জানতে পারেন, ভারতবাসীরা টেসলা কিনতে পারবেন। দেখার পরেই গাড়িটি অনলাইনে বুক করে ফেলেন বিশাল। তবে, বুক করার পরে আরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, টেসলা এমন এক মূল্যবান জিনিস যার জন্য তাঁকে এতটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর আগে কোনও কিছুর জন্যই তাঁকে এত দিন অপেক্ষা করতে হয়নি।
বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা ভুনিকের সিইও সুজায়থ আলি একটি টেসলা মডেল ৩ বুক করেন। গাড়িটি বুক করার পরেই তিনি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন। মজার ছলে সুজায়থ লেখেন, ‘‘টেসলা গাড়িটি বুক করেছি। এর পরের দু’বছর গাড়িটি কেনার জন্য যত টাকা লাগে, তা উপার্জন করতে হবে।’’
বলিউড তারকাদের নামও ক্রেতার তালিকায় রয়েছে। তবে, তাঁদের নাম শুনলে অবাক হতে হয়। শাহরুখ, সলমন বা আমির নয়, বলিপাড়ার যে অভিনেতার বাড়িতে টেসলার গাড়ি রয়েছে, তিনি হলেন রীতেশ দেশমুখ। স্বামীর জন্মদিন উপলক্ষে জেনেলিয়া টেসলা মডেল এক্স গাড়িটি উপহার দিয়েছিলেন রীতেশকে।
অবশ্য রীতেশ ছাড়া আরও এক বলি তারকা টেসলা গাড়ির মালিক। অভিনেত্রী পূজা বাত্রার টেসলা মডেল ৩ গাড়িটি রয়েছে। এই আট জন ছাড়া এখনও পর্যন্ত ভারতীয় কোনও ধনকুবের অথবা বলিউড তারকা— কারও সংগ্রহেই টেসলার গাড়ি নেই।