Shweta Tiwari

স্বামীদের সঙ্গে মারপিট, হাজতবাস! বিয়ে করে বার বার ঠকলেও আপস করেননি শ্বেতা

‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’-র প্রেরণা হিসাবেই শ্বেতাকে চেনেন হিন্দি ধারাবাহিকের সিংহভাগ দর্শক। ব্যক্তিগত জীবন তাঁকে শিরোনামে তুলে এনেছে বার বার। দু’বার বিয়ে করেছেন, কিন্তু সংসার টেকেনি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৬
Share:
০১ ২০

সোম থেকে শুক্র, ঘড়ির কাঁটায় দুপুর সাড়ে ১২টা বাজলেই টিভির সামনে ছোটখাটো ভিড়। চোখ স্টার প্লাসের পর্দায়। বাঙালি হোক বা অবাঙালি, প্রায় প্রতি ঘরেই চেনা সুরে বেজে উঠত জনপ্রিয় ধারাবাহিকের নেপথ্য সঙ্গীত, ‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’।

০২ ২০

‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’-র হাত ধরে একসময় স্টার প্লাস চ্যানেলটির টিআরপি আকাশ ছুঁয়েছিল। নায়িকা প্রেরণা শর্মার কাহিনি গোগ্রাসে গিলতেন দর্শক। আর সেই চরিত্রের নেপথ্যে ছিল একটাই নাম, শ্বেতা তিওয়ারি।

Advertisement
০৩ ২০

২০০১ সালের অক্টোবরে এই ধারাবাহিকটি চালু হয়েছিল। হিন্দি ধারাবাহিকের জগতে এর মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ ঘটে শ্বেতার। তার পর ২০০৮ পর্যন্ত টানা ৭ বছর স্টার প্লাসে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিল ‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’।

০৪ ২০

‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’-র প্রেরণা হিসাবেই শ্বেতাকে চেনেন হিন্দি ধারাবাহিকের সিংহভাগ দর্শক। তবে আরও একাধিক হিন্দি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন শ্বেতা। ব্যক্তিগত জীবন তাঁকে শিরোনামে তুলে এনেছে বার বার।

০৫ ২০

শ্বেতা তিওয়ারির ব্যক্তিগত জীবন বরাবর বর্ণময়, বিতর্কিত। বিয়ে, প্রেম, সংসার, সন্তান এবং পরকীয়া— পর্দার বাইরে তিনি বিপুল সমালোচিত। তবু নিজের কেরিয়ার, অভিনয় থেকে কখনও তাঁর নজর সরেনি। ব্যক্তিগত জীবনের টানাপড়েন কখনও তাঁর অভিনয়কে প্রভাবিত করতে পারেননি। যে কারণে মুম্বইয়ের অন্যতম সফল এবং স্বাবলম্বী নায়িকাদের তালিকায় এখনও প্রথম সারিতে থাকে শ্বেতার নাম।

০৬ ২০

১৯৮০ সালের ৪ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে জন্ম শ্বেতার। শ্বেতার ছোটবেলাতেই তাঁর পরিবার মুম্বই চলে আসে। ছোট থেকেই অভিনয় শুরু করেছিলেন শ্বেতা। কেরিয়ার বড়সড় ব্রেক পাওয়ার আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি।

০৭ ২০

১৯৯৮ সালে রাজা চৌধুরীর সঙ্গে শ্বেতার বিয়ে হয়। তাঁদের কন্যা পলকের জন্ম ২০০০ সালে। তার পরের বছরেই শ্বেতার কেরিয়ার নতুন মোড় নেয়। মোড় ঘুরে যায় শ্বেতার বিবাহিত জীবনেও।

০৮ ২০

‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’ যখন দর্শককে নতুন ধরনের হিন্দি সিরিয়ালের স্বাদ দিচ্ছে, তখন ওই সিরিয়ালেই ছারখার হয়ে যাচ্ছিল শ্বেতার সংসার। অল্প সময়ের মধ্যে যে জনপ্রিয়তা তিনি কুড়িয়েছিলেন, তা ঢেকে দিয়েছিল তাঁর স্বামীর কেরিয়ারকে। রাজা সফল হতে পারেননি। বা বলা ভাল, সফল হওয়ার সুযোগ পাননি।

০৯ ২০

একাধিক সাক্ষাৎকারে রাজা জানিয়েছেন, শ্বেতার ব্যস্ততার কারণে তাঁকেই সন্তানের খেয়াল রাখতে হত। সারা দিন ছোট্ট পলককে মানুষ করতে করতেই সময় কেটে যেত তাঁর। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।

১০ ২০

‘কসৌটি জ়িন্দেগি কি’-তে শ্বেতার বিপরীতে নায়ক ছিলেন সেজ়ান খান। পর্দার বাইরেও তাঁর সঙ্গে শ্বেতার ঘনিষ্ঠতা এবং গোপন সম্পর্কের গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। যা শ্বেতা এবং রাজার সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেয়। গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে ২০০৭ সালে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন শ্বেতা।

১১ ২০

দীর্ঘ দিন সেই মামলা চলে। অভিযোগ, রাজা তাঁকে ডিভোর্স দিতে চাইছিলেন না। এর মাঝে শ্বেতার বাড়িতে তাঁর এক সহ-অভিনেতার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন রাজা। তাঁকে বাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে বার করে দেওয়া হয়। শ্বেতার অভিযোগে রাজাকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ।

১২ ২০

২০০৯ সালে ‘ইস জঙ্গল সে মুঝে বাঁচাও’ নামে একটি টিভি শো-তে দেখা গিয়েছিল শ্বেতাকে। সেখানে প্রথম বিকিনি পরে ক্যামেরার সামনে আসেন নায়িকা। হিন্দি ধারাবাহিকের আদর্শ গৃহবধূর রূপ থেকে নিজেকে বার করে আনেন ইচ্ছাকৃত ভাবেই।

১৩ ২০

২০০৮ থেকে ২০০৯, এক বছরের মেয়াদে নতুন একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন শ্বেতা। ‘জানে কেয়া বাত হুয়ি’-তে তাঁর বিপরীতে ছিলেন অভিনেতা অভিনব কোহলি। এই ধারাবাহিকের সেটেই নতুন সম্পর্কের জন্ম।

১৪ ২০

শ্বেতা-অভিনব প্রায় ৩ বছর চুটিয়ে প্রেম করেন। লিভ ইন সম্পর্কেও ছিলেন তাঁরা। ২০১৩ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০১৬ সালে জন্ম নেয় শ্বেতা-অভিনবের সন্তান রেয়াংশ।

১৫ ২০

কিন্তু শ্বেতার দ্বিতীয় বিয়েও টেকেনি। বিয়ের তিন থেকে চার বছরের মাথায় ফের সংসারে অশান্তির খবর আসতে থাকে। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শ্বেতা।

১৬ ২০

গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনা হয়েছিল অভিনবের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি শ্বেতার প্রথম পক্ষের সন্তান পলক তিওয়ারির সঙ্গেও অভিনব দুর্ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ। নায়িকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

১৭ ২০

পরে জামিনে মুক্ত হন অভিনব। কিন্তু সমাজমাধ্যমকে হাতিয়ার করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে নিজের যাবতীয় ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন নিয়মিত। অভিনবের অভিযোগ, শ্বেতা তাঁকে তাঁর সন্তানের থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগও অস্বীকার করেন শ্বেতার স্বামী।

১৮ ২০

অন্য দিকে, একের পর এক সম্পর্কে ধাক্কা খাওয়ার পর শ্বেতার বক্তব্য, সমাজ কী বলবে, তা ভেবে তিনি কোনও অন্যায় সহ্য করবেন না। যা অন্যায়, তার বিরুদ্ধে সবসময় রুখে দাঁড়াবেন। তিনি আত্মনির্ভরশীল, তাই দুই সন্তানের দায়িত্ব একাই সামলাতে সক্ষম।

১৯ ২০

সংসারে ভাঙন, সম্পর্কে টানাপড়েনের মাঝেও কন্যা পলকের প্রতি মা হিসাবে নিজের কর্তব্যে অবিচল ছিলেন শ্বেতা। পলককেও অভিনয়ের দুনিয়ায় নিয়ে এসেছেন তিনি। আরবাজ় খানের সঙ্গে ‘রোজ়ি’ ছবিতে দেখা গিয়েছে পলককে। আগামী দিনে সলমন খানের সঙ্গে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ ছবিতেও তাঁকে কাজ করতে দেখা যাবে।

২০ ২০

শ্বেতা আর অভিনব আলাদা থাকেন ২০১৯ থেকেই। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। দুই সন্তানকে নিয়ে, ছোট পর্দা আঁকড়ে দিব্যি দিন কাটছে নায়িকার। ২০২২ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শ্বেতার মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি টাকা। অর্থের জোরই শ্বেতাকে কোনও সম্পর্কে কখনও আপস করতে দেয়নি, মত অনেকের।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement