বড় পর্দাকে নয়, অভিনয়ে আত্মপ্রকাশের জন্য বরং ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে নির্বাচন করলেন একাধিক তারকাসন্তান। বলিউডের ‘শাহেনশা’ অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত্য নন্দ থেকে শুরু করে বলিপাড়ার ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খান, প্রয়াত বলি অভিনেত্রী শ্রীদেবীর কন্যা খুশি কপূর, সকলেই একসঙ্গে ধরা দিয়েছেন ‘দ্য আর্চিজ়’ ছবিতে। নেটফ্লিক্স ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য আর্চিজ়’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন জ়োয়া আখতার।
‘দ্য আর্চিজ়’ ছবি মুক্তির আগে থেকেই স্বজনপোষণ নিয়ে অনবরত কটাক্ষের শিকার হয়ে চলেছেন জ়োয়া। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, হিন্দি ফিল্মজগতের নামজাদা তারকাদের সন্তানদের অভিনয়ের সুযোগ দিতেই জ়োয়া পাতে সাজিয়ে তাঁদের জন্য এই ছবি তৈরি করেছেন।
তারকাসন্তানেরা খুব সহজেই বলিউডে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান। কিন্তু ফিল্মজগতের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না থাকলে ‘বহিরাগত’দের বলিউডে নিজেদের কেরিয়ার গড়ে তোলার পথ খুব একটা সহজসাধ্য নয় বলেই দাবি করেন বলিপাড়ারই একাংশ।
জ়োয়াও নাকি ‘দ্য আর্চিজ়’ তৈরি করতে স্বজনপোষণতার হাত ধরেছেন। হিন্দি ফিল্মজগতের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে এখনও স্বজনপোষণতার বীজ ছড়িয়ে রয়েছে তা নিয়েও সমালোচনা করতে পিছপা হননি বলিপাড়ার একাংশ।
তবে পরিচালক-কন্যা জ়োয়ার সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বাবা জাভেদ আখতার। বলিউডের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার জাভেদের মন্তব্য, হিন্দি ফিল্মজগতে স্বজনপোষণতার লেশমাত্র নেই। তাঁর কন্যা জ়োয়াও স্বজনপোষণতার ধার ধারেননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেন জাভেদ।
জাভেদ বলেন, ‘‘ছবি তৈরি করতে সরকারি অনুদান থেকে খরচ করা হয় না। এমনকি কোনও শিল্পপতিও অর্থ বিনিয়োগ করেন না। প্রযোজক তাঁর নিজের ঝুলি থেকে টাকা খরচ করেন।’’
জাভেদের দাবি, প্রযোজকেরা যখন নিজেদের পুঁজি থেকে খরচ করে ছবি তৈরি করেন তখন তাঁরা নিজেরাই সেই ছবি সংক্রান্ত সমস্ত ঝুঁকি নেন। ছবিতে কোন তারকা অভিনয় করবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকারও রয়েছে ছবিনির্মাতাদের। এমনটাই জানান জাভেদ।
তারকাদের সন্তান হলেই যে হিন্দি ফিল্মজগতে সাফল্য পাওয়া যায়, তা মানতেও নারাজ জাভেদ। তিনি বলেন, ‘‘তারকারা সফল হন দর্শকের জন্য। স্বজনপোষণের পথ ধরে হেঁটে চললে কারও কেরিয়ারে সাফল্য আসে না।’’
জাভেদের আরও দাবি, বিশ্বের সর্বত্রও যদি স্বজনপোষণতা চলতে থাকে তবুও বলিউড ইন্ডাস্ট্রি তা থেকে শতহস্ত দূরে রয়েছে।
জাভেদ বলেন, ‘‘বলিউডে কোনও ভাবেই স্বজনপোষণতার প্রভাব পড়তে পারে না। তারকার সন্তান হলেই কি আর সাফল্য পাওয়া যায়?’’
জাভেদ জানান, যদি কারও মধ্যে অভিনয়দক্ষতা থাকে তা হলে দর্শকমহলে তিনি প্রশংসা পেতে বাধ্য। দর্শকই তাঁকে ভালবাসা দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দেবেন।
‘দ্য আর্চিজ়’ ছবিতে অগস্ত্য, সুহানা এবং খুশি ছাড়াও দেখা গিয়েছে একাধিক নতুন মুখ। তারকাসন্তানদের পাশাপাশি তাঁরাও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পা রাখলেন অভিনয়জগতে।
জ়োয়া যখন ‘দ্য আর্চিজ়’ ছবি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলেন তখন কোনও তারকার সন্তানকে সুযোগ দেওয়ার জন্য এই ছবি তৈরি করার কথা ভাবেননি। এমনটাই দাবি করেন জাভেদ।
জাভেদের দাবি, জ়োয়াকে তাঁর ছবি নিয়ে কোনও রকম প্রশ্ন করাই উচিত নয়। জ়োয়া যখন ছবির সম্পূর্ণ ঝুঁকি নিয়েছেন তাই ছবি নিয়ে নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও রয়েছে তাঁর।
‘দ্য আর্চিজ়’ ছবি নিয়ে হাজারো সমালোচনার মধ্যে জাভেদ জানান, এই ছবিতে যাঁরা অভিনয় করেছেন তাঁরা সকলেই অভিনয়ে দক্ষ। জাভেদের বক্তব্য, সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া অতিক্রম করেই এই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন নবাগত তারকারা।