নয়াদিল্লিতে বসেছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসর। বাইডেন, মাকরঁ, সুনকের মতো তাবড় তাবড় বিশ্বনেতাকে নিয়ে নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে বৈঠক করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিদেশি অতিথিদের থাকা-খাওয়ার দিকে বিশেষ নজর রাখছে ভারত। বিশ্বনেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নামীদামি উপহার। পাশাপাশি উপঢৌকন তুলে দেওয়া হবে রাষ্ট্রপ্রধানদের স্ত্রীদের হাতেও। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতের ঝুলিতে কোন রাষ্ট্রনেতার স্ত্রীর জন্য কী রয়েছে।
সরকার সূত্রে খবর, রাষ্ট্রনেতাদের স্ত্রীদের হাতে তিনটি করে উপহার তুলে দেবে ভারত। যা দেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্প এবং সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করবে।
তেলঙ্গানার চেরিয়াল চিত্রকলার নিদর্শন, হাতে বোনা একটি তসর সিল্কের শাল এবং ছত্তীসগঢ়ের কারিগরদের তৈরি করা ধাতব মহিলা মূর্তি— এই তিন উপহারই সুনক, মাকরঁদের স্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
শনিবার স্ত্রীদের সঙ্গে ভারতীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র আইএআরআই-এর পুসা ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা রয়েছে রাষ্ট্রনেতাদের। সেখানেই তাঁদের স্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে উপহারগুলি।
সরকারি আধিকারিকদের মতে, এই তিনটি উপহার দেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্প এবং সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করবে। একটি বিশেষ ভাবে নকশা করা ব্যাগের মধ্যে উপহারগুলি বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের আইএআরআই-এর পুসা ক্যাম্পাস পরিদর্শন পূর্ব নির্ধারিত। পরিকল্পিত সফরসূচির অংশ হিসাবে ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট (এনজিএমএ) এবং রাজঘাট যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁদের।
চেরিয়াল চিত্রকলা শতাব্দীপ্রাচীন। মূলত খাদি কাপড়ের উপর ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনি এবং কিংবদন্তি চরিত্র এঁকে এই চিত্রকলা তৈরি করা হয়।
চেরিয়াল চিত্রকলা তেলঙ্গানার প্রাচীনতম শিল্পগুলির মধ্যে অন্যতম। চেরিয়াল চিত্রকলাকে ‘জিআই’ তকমাও দেওয়া হয়েছে।
ছত্তীসগঢ়ের বন থেকে প্রাপ্ত পশম দিয়ে একটি হাতে বোনা তসর সিল্কের শাল তৈরি হয়েছে। গাঁদা ফুলের নির্যাস সংগ্রহ করে রং করা হয়েছে শালগুলিকে। শাল তৈরির সুতো এবং নকশাও হাতে তৈরি করা হয়েছে।
পাশাপাশি ধাতব মহিলা মূর্তিটিও ছত্তীসগঢ়েরই শিল্পীদের তৈরি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মূর্তিটি তৈরিতে ব্যবহৃত কৌশল হরপ্পা সভ্যতার শিল্পকর্ম থেকে অনুপ্রাণিত।
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রথমে একটি মোমের ভাস্কর্যকে মাটির পাত্রে আবৃত করে গরম করা হয়। গরমের কারণে ভিতরের মোম গলে যায়। সেই ছাঁচে তরল ধাতু ঢালা হয়।
এর পর সেই ধাতুকে ঠান্ডা করার পর মাটির আবরণ ভেঙে ধাতব মূর্তি বার করে আনা হয়।
পুসা ক্যাম্পাস পরিদর্শনের সময়, বিশ্বনেতা এবং তাঁদের স্ত্রীদের বাজরা চাষিদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। তারকা রন্ধনশিল্পী কুণাল কপূর, অজয় চোপড়া এবং অনহিতা ধোন্ডির রান্না করা বাজরার খাবার পরিবেশন করা হবে তাঁদের।
২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক বাজরা বছর হিসাবে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সেই উপলক্ষেই এই আয়োজন করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।