সদ্য শেষ হওয়া আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই জয়ের পাঁচ দিনের মাথায় ভারতে আরও ছ’টি ‘ট্রাম্প টাওয়ার’ তৈরি করার ইঙ্গিত দিল ট্রাম্পের মালিকানাধীন সংস্থা। যার ফলে আমেরিকার বাইরে ভারতই ট্রাম্প টাওয়ারের বৃহত্তম রিয়েল এস্টেট হাব হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কী এই ট্রাম্প টাওয়ার? ট্রাম্প টাওয়ার হল নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি বহুতল। ট্রাম্পের সংস্থা ‘দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজ়েশন’-এর দফতর। ওই বহুতলে এক বিলাসবহুল পেন্টহাউসও রয়েছে ট্রাম্পের। ২০১৯ পর্যন্ত সপরিবারে ওখানেই থাকতেন তিনি।
ট্রাম্প টাওয়ার আমেরিকার একটি সুপরিচিত বহুতল। আমেরিকার অন্যতম বিখ্যাত ভবন বললেও ভুল হবে না। এ বার ট্রাম্পের নামাঙ্কিত সে রকমই ছ’টি বহুতল তৈরি হতে চলেছে ভারতে।
ভারতে ট্রাম্প অর্গানাইজ়েশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অংশীদার ‘ট্রিবেকা ডেভেলপারস’ পুণে, গুরুগ্রাম, নয়ডা, মুম্বই, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরুতে এই ছ’টি টাওয়ারের চুক্তি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে।
এই ভবনগুলির বিক্রয়মূল্য ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
প্রসঙ্গত, ভারতে আগে থেকেই চারটি ট্রাম্প টাওয়ার রয়েছে। আমেরিকার পরে ভারতেই রয়েছে ট্রাম্প ব্র্যান্ডের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রকল্প। ছ’টি নতুন ট্রাম্প টাওয়ার তৈরির ঘোষণার পর এ বার সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াতে চলেছে ১০টিতে।
ট্রাইবেকা ডেভেলপারস ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ভারত জুড়ে ছ’টি নতুন প্রকল্পের চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। প্রকল্পগুলি ১৫ হাজার কোটির বেশি টাকায় বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
ছ’টি টাওয়ারের প্রথম তিনটি হবে নয়ডা, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদে। পরের তিনটি পুণে, মুম্বই এবং গুরুগ্রামে তৈরি হতে পারে।
ট্রাইবেকা ডেভেলপারসের প্রতিষ্ঠাতা কল্পেশ মেহতা সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস্কে বলেছেন, “আমেরিকার বাইরে ভারতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ট্রাম্প টাওয়ার রয়েছে। আরও ছ’টি তৈরি হচ্ছে। ভারতেই সবচেয়ে বেশি ট্রাম্প টাওয়ার থাকবে।’’
কল্পেশ যোগ করেছেন, “আমরা বিশ্বের একমাত্র সুপার লাক্সারি রিয়্যাল এস্টেট ব্র্যান্ড এবং ট্রাম্পের প্রকল্পগুলি যেন ভারতের মূল্যবান সম্পত্তিতে পরিণত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে ট্রাইবেকা।’’
কল্পেশ আরও জানিয়েছেন, প্রকল্পগুলির প্রতিটিতে স্থানীয় অংশীদার থাকবে। নির্মাণ সংস্থার পাশাপাশি জমির মালিকেরাও সমান গুরুত্ব পাবেন।
কল্পেশ এ-ও জানিয়েছেন, ট্রাম্প-পুত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এবং এরিক ট্রাম্প আগামী বছরের শুরুতে ভারত সফরে আসতে পারেন।
ট্রাম্প টাওয়ার প্রকল্পগুলি চালু করতেই তাঁরা ভারতে আসতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গুরুগ্রাম, পুণে এবং মুম্বইয়ে আগে থেকেই ট্রাম্প টাওয়ার রয়েছে। সেখানে আবার আমেরিকার ভাবি প্রেসিডেন্টের নামাঙ্কিত দ্বিতীয় বহুতল তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভবনগুলির নাম দেওয়া হতে পারে ‘ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড টাওয়ার’। কলকাতাতেও একটি ট্রাম্প টাওয়ার তৈরির কাজ চলছে।
ছ’টি নতুন বহুতলের মধ্যে পুণেয় দ্বিতীয় যে ভবন তৈরি হতে পারে, সেখানে একসঙ্গে অনেকগুলি অফিস কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এটি ভারতে তাদের প্রথম অফিস প্রকল্প হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি এই বহুতলের কাজ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন কল্পেশ।
কিন্তু কেন এতগুলি ট্রাম্প টাওয়ারের জন্য ভারতকেই বেছে নিল ট্রাম্পের সংস্থা? মনে করা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্কের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার মনে করছেন, ট্রাম্প পাকা ব্যবসায়ী। ভারতের বাজারে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে তাঁর সংস্থা।