বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিলই। সেই মতোই মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখল বিজেপি। পাঁচ বছর পর ক্ষমতায় ফিরল মরুরাজ্য রাজস্থানেও। তবে বেশ কিছু সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে ছত্তীসগঢ়েও এ বার হাত সরিয়ে ফুটল পদ্মফুল।
তিনটি রাজ্য থেকে খারাপ খবর এলেও তেলঙ্গানা কংগ্রেসের মুখরক্ষা করেছে। তামাম বুথফেরত সমীক্ষাকে সত্যি প্রমাণিত করে প্রথম বার সে রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস।
পাঁচ রাজ্যের মধ্যে এখনও মিজ়োরামের ফল জানা বাকি। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফলঘোষণা হবে সোমবার।
চার রাজ্যে ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে, কংগ্রেস এবং কংগ্রেস সমর্থিত দলগুলি মোট ৬টি রাজ্যে ক্ষমতায় রইল।
বিজেপি বিরোধী বলে পরিচিত আঞ্চলিক দলগুলির হাতে রইল সাতটি রাজ্য। কেরলে ক্ষমতায় রয়েছে বামেরা।
শনিবারের পর বিজেপি ১২টি রাজ্যে ক্ষমতায় রইল। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, গুজরাত, গোয়া, অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে যুক্ত হল রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও সিকিমে সরকার পক্ষে রয়েছে বিজেপি।
বিজেপিকে রুখতে লোকসভা ভোটের আগে ২৮টি দল এক হয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠন করেছে। জোটের নিরিখে দেখলে শনিবারের পর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লিকে নিয়ে ১০টি রাজ্য নিজেদের দখলে রাখল ‘ইন্ডিয়া’।
পক্ষান্তরে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ)-র দখলে রইল ১৫টি রাজ্য। এর পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিও বিজেপির শাসনাধীন। ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে যে দু’টি আঞ্চলিক দল ক্ষমতায় রয়েছে, তারা সরাসরি এনডিএ কিংবা ‘ইন্ডিয়া’— কোনও জোটেরই অংশ নয়।
ওড়িশায় ক্ষমতায় রয়েছে বিজু জনতা দল (বিজেডি)। অন্ধ্রপ্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। সংসদে বহু বিল পাশের ক্ষেত্রে সরাসরি শাসক বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়া কিংবা বিজেপি-বিরোধী কর্মসূচি থেকে সচেতন দূরত্ব বজায় রাখা— দু’টি দলই বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলে জল্পনা রয়েছে।
তবে সরাসরি এনডিএ শিবিরে নাম লেখায়নি বিজেডি কিংবা জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস।
পঞ্জাব এবং দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)। উত্তর ভারতে এক মাত্র হিমাচল প্রদেশেই একার জোরে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস।
বিহার, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ুতে বড় শরিকদের সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। বিহারে ক্ষমতায় নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ), লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি এবং কংগ্রেসের জোট।
ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)এবং তামিলনাড়ুতে এমকে স্ট্যালিনের দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে)-র সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস।
হিমাচল ছাড়াও কংগ্রেস একার জোরে ক্ষমতায় রয়েছে কর্নাটকে। শনিবারের পর তালিকায় যুক্ত হল তেলঙ্গানার নাম। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল।
লোকসভা ভোটের আগে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনকে সেমিফাইনাল হিসাবে দেখা হচ্ছিল। রাজ্যওয়াড়ি ফল বলছে ২০২৪-এর ফাইনালে নামার আগে অনেকটাই স্বস্তিতে এনডিএ। শনিবারের পর অস্বস্তি আরও বাড়ল ‘ইন্ডিয়া’র।