Indepedence Day

Chicago Radio: গাঁধী-নেহরু থেকে নেতাজি, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জ্বালাময়ী ভাষণ শুনিয়েছে ‘শিকাগো রেডিয়ো’

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জ্বালাময়ী বক্তৃতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে এই মাইক্রোফোন।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২২ ১৫:৪৭
Share:
০১ ১৮

ব্রিটিশ শাসনে তখন তমসাচ্ছন্ন ভারতের আকাশ। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য তখন প্রাণপণ লড়াই করছে ভারত। ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের’ তরুণ স্বেচ্ছাসেবক নানিক মোতওয়ানে এক দিন দেখলেন, একটি জনসভায় মহাত্মা গাঁধী বক্তৃতা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। তাঁর কণ্ঠস্বর যাতে সভায় উপস্থিত সকলের কানের গোচরে প্রবেশ করে, সেই চেষ্টাই করছেন গাঁধীজি।

০২ ১৮

এই দৃশ্য দেখে ২৭ বছর বয়সি যুবক মোতওয়ানের মনে প্রশ্ন জাগল, এ ভাবে বক্তৃতা করা যায় না কি! তিনি ভাবলেন, এমন উপায় বার করতে হবে, যাতে নেতার বক্তৃতা সকলে স্পষ্ট ভাবে শুনতে পান।

Advertisement
০৩ ১৮

এ কথা ভাবতে ভাবতেই তিনি মুশকিল আসান করলেন। তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের করাচিতে কংগ্রেসের অধিবেশনে জনসভায় বক্তৃতার জন্য মাইক্রোফোনের ব্যবস্থা করলেন।

০৪ ১৮

এ ভাবেই আত্মপ্রকাশ ঘটল ‘শিকাগো রেডিয়ো’র। এর পরের দু’দশকে লাউডস্পিকারের সমার্থক হয়ে গেল ‘শিকাগো রেডিয়ো’।

০৫ ১৮

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বক্তৃতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে এই মাইক্রোফোন।

০৬ ১৮

নানিক-পুত্র কিরণ মোতওয়ানে বিবিসিকে বলেছেন, ‘‘আমাদের লাউডস্পিকারকে ‘ভয়েস অব ইন্ডিয়া’ (ভারতের কণ্ঠস্বর) বলতাম।’

০৭ ১৮

১৯২৯ সালে অবিভক্ত ভারতের করাচিতে গাঁধীজিকে সেই মাইক্রোফোন দেখালেন নানিক। শিকাগোর এক রেডিয়ো নির্মাতার থেকে অনুমতি নিয়েই এই নামটি ধার করেন নানিকের বাবা।

০৮ ১৮

প্রথম দিকে লাউডস্পিকার, মাইক্রোফোনগুলি ইংল্যান্ড ও আমেরিকা থেকে নিয়ে আসতেন নানিক। পরে তাঁর দলের পাঁচ ইঞ্জিনিয়র সেগুলিকে নিজেদের মতো করে বানাতেন।

০৯ ১৮

সভামঞ্চে বাঁশের খুঁটিতে হর্নের মতো লাউডস্পিকার বাঁধা হত। যাতে বক্তৃতা সকলে শুনতে পান সে জন্য। সভার এক দিন আগেই ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা দেখে নেওয়া হত।

১০ ১৮

পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের সভার জন্য গোটা দেশে ১০০টি এমন যন্ত্রের ব্যবস্থা করেছিলেন নানিক। কিরণের কথায়, ‘‘ভারতে ঘোষণা যন্ত্রের (পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম) পথিকৃৎ ছিলেন তিনি।’’

১১ ১৮

বছরের পর বছর দেশের অধিকাংশ স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভাষণ এই শিকাগো লাউডস্পিকারের মাধ্যমেই ধ্বনিত হয়েছে ভারতভূমে।

১২ ১৮

শিকাগো রেডিয়ো মাইক্রোফোনে বক্তৃতা দিতে দেখা গিয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরুকেও। পরবর্তী সময়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীকেও এই মাইক্রোফোনে বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে।

১৩ ১৮

কিরণ মোতওয়ানে জানিয়েছেন, শিকাগো রেডিয়ো লাউডস্পিকার ব্যবহার করার জন্য কখনই কংগ্রেস দলের থেকে পারিশ্রমিক নিতেন না নানিক। পরে নেহরু পারিশ্রমিক দিতে রাজি হন। তাঁর কথায়, ‘‘দল আমাদের খরচ বহন করত ও সভাপিছু প্রায় ছয় হাজার টাকা করে দিত।’’

১৪ ১৮

১৯৬৩ সালে দিল্লিতে এই মাইক্রোফোনের সামনে মুখ রেখে সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর গেয়েছিলেন ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগোঁ’। যে গান শুনে দর্শকাসনের অনেকের চোখ অশ্রুতে ভিজেছিল।

১৫ ১৮

১৯৭০ সালে শিকাগো রেডিয়ো নিয়ে কড়া চিঠি দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর দফতর থেকে।

১৬ ১৮

কেন বিদেশি নাম ব্যবহার করা হচ্ছে? শিকাগো রেডিয়োর নাম বদলের কথা বলা হয় ইন্দিরার দফতর থেকে।

১৭ ১৮

কিরণের কথায়, ‘‘কেন এমন পদক্ষেপ করা হল জানি না। আমার বাবা সে সময় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন।’’

১৮ ১৮

সময়ের স্রোতে অনেক প্রযুক্তিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। আগের মতো বাজার না দাপালেও এখনও অস্তিত্ব জিইয়ে রেখেছে শিকাগো রেডিয়ো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement