বুধবারই ‘হাফ সেঞ্চুরি’ পেরিয়েছে রাজধানীর তাপমাত্রা। দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছয় ৫২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও বটে। ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির মুঙ্গেশপুরের স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রে বুধবার এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
শুধু দিল্লি নয়, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষ গরমে অতিষ্ঠ। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছে। তবে বুধবারই সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল দিল্লিতে। যা দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ বলে মনে করা হচ্ছে। দেশে এর আগে এত গরম কখনও রেকর্ড করা হয়নি।
উল্লেখ্য যে, সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী এর আগে ২০০২ সালে মুঙ্গেশপুরেই সর্বকালের সর্বোচ্চ গরম রেকর্ড করা হয়েছিল। তাপমাত্রা ছিল ৪৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০১৬ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে যায়। সে বছর রাজস্থানে ৫০ ডিগ্রি পার করে ৫১ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল পারদ। যা সেই সময় সর্বকালের সর্বোচ্চ ছিল। তবে বুধবার সেই রেকর্ডও ভেঙে গেল।
তবে গত পাঁচ বছরের হিসাবেও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেহাত কম ছিল না। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক গত পাঁচ বছরে দেশে উষ্ণতম দিন এবং জায়গা কোনগুলি?
২০২৩ সাল ভারতে ১২২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর ছিল। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হল, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল থেকে উষ্ণ সমুদ্রের জল পশ্চিমে সরে গিয়ে কেন্দ্রীভূত হয় এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে।
এর উল্টো প্রক্রিয়া ‘এল নিনো’। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের যে অংশ অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকার কথা, সেই অংশ উষ্ণ হতে শুরু করে। সমুদ্রের সেই অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের বাতাসে। গত বছর ‘এল নিনো’র কারণে সারা বিশ্বেরই তাপমাত্রা ছিল বেশি।
আইএমডির তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ এপ্রিল। তাপমাত্রা ছিল ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০২২ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ওই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল আরও কিছুটা কম। ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল ওই বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
২০২০ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০১৯ সালেও দেশে তাপমাত্রার পারদ ‘হাফ সেঞ্চুরি’ পার করেছিল। ২০১৯-এর ২ জুন রাজস্থানের চুরুতে তাপমাত্রা ছিল ৫০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ওই বছরের সর্বোচ্চ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রদেশের অন্তত বহু জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি বা তার বেশি ছিল।
অন্য দিকে, চলতি বছরে পার্বত্য হিমালয়ের একাধিক জায়গায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল।
দিল্লির বহু এলাকায় এ বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রির উপরে ছিল। নজফগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হরিয়ানার নারনউল এবং পঞ্জাবের ফরিদকোটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৪৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রচণ্ড গরমের কারণে মহারাষ্ট্রের আকোলায় ৩১ মে পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আকোলা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশ কয়েক দিন ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে।