Heatwave Condition

তিন মাস জুড়ে তাপে পুড়বে ভারত! তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়তে পারে জিডিপির উপরেও

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, যে বছর তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার ১০ বছর পর দেশের জিডিপি ২ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:১৩
Share:
০১ ২২

বৈশাখ মাস এখনও পড়েনি। কিন্তু এর আগেই গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। বুধবার থেকেই তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায়। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ভারত জুড়ে ২২টি রাজ্যে তাপপ্রবাহ চলতে পারে বলেও জানিয়েছে ‌মৌসম ভবন।

০২ ২২

মৌসম ভবন সূত্রে খবর, চলতি বছরে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত দেশের কয়েকটি রাজ্যে বার বার তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এমনকি, দেশ জুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement
০৩ ২২

এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে দেশ জুড়ে তাপপ্রবাহের যে পরিস্থিতি তৈরি হবে তা টানা ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে মৌসম ভবনের পূর্বাভাস।

০৪ ২২

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে অধিকাংশ রাজ্যের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলতে পারে। তার পাশাপাশি আরও এক ধরনের তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি লক্ষ করা যেতে পারে ভারতে।

০৫ ২২

ভারতের কোনও কোনও রাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে তাপমাত্রা একই রকম থাকলে হঠাৎ করে তাপমাত্রার পারদ এক লাফে ৫ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।

০৬ ২২

অতিরিক্ত গরম এবং অস্বস্তিকর আবহাওয়া তৈরির ফলে মানুষের কষ্ট তো হবেই, এর প্রভাব পড়তে পারে জিডিপির উপরেও।

০৭ ২২

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, কোনও বছর অতিরিক্ত গরম পড়লে ভবিষ্যতে দেশের জিডিপি কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাঁরা জানান, যে বছর তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার ১০ বছর পর দেশের জিডিপি ২ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

০৮ ২২

গরমের সঙ্গে জিডিপির যে ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে তা আদৌ কতটা সত্য, তা-ও খাতায়কলমে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।

০৯ ২২

ফিল্মজগতের ব্যবসার উপর দেশের জিডিপির অনেকটাই নির্ভর করে বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞেরা। গরমে খুব কম ছবির আউটডোর শুটিং হয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তারকারা ছাড়াও ফিল্মজগতের সঙ্গে যুক্ত অন্য কর্মীরাও সূর্যের তেজ বাড়তে থাকলে নাকি বাইরে শুট করা এড়িয়ে চলেন।

১০ ২২

সাধারণত দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চাঁদিফাটা রোদে শুটিং করাও সমস্যাজনক হয়ে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইন্ডোর শুটিংয়ের দ্বারস্থ হন ছবিনির্মাতারা।

১১ ২২

অতিরিক্ত গরমের ফলে ফসলের উৎপাদনেও বাধা পড়ে। ফসল কম উৎপাদন হলে তারও প্রভাব পড়ে জিডিপির উপর। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বৃদ্ধি পেলে ফসলের উৎপাদন কমতে শুরু করে।

১২ ২২

বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতে গম চাষের সময় ৯০ শতাংশ ফসল জমি থেকে কাটা হয়ে যায় এপ্রিল মাসের গোড়াতেই। ফসল কাটা সম্পূর্ণ হতে কখনও কখনও তা এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্তও গড়িয়ে যায়।

১৩ ২২

কিন্তু এপ্রিলের শুরু থেকেই যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে, তা হলে সমস্যার সম্মুখীন হন কৃষকেরা। কারণ, সেই সময় জমি থেকে ফসল তোলেন তাঁরা। তাপমাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ফসল পাকতে দেরি হতে পারে বলেও দাবি করেন বিশেষজ্ঞেরা।

১৪ ২২

তবে গরম বৃদ্ধির ফলে প্রভাব পড়বে লোকসভা নির্বাচনের উপর। ১৯ এপ্রিল থেকে ভোট শুরু। ভোটগণনা ৪ জুন। তীব্র গরমে যেন ভোটারেরা অসুস্থ হয়ে না পড়েন সে কারণে নির্বাচন কমিশনের তরফে গরমের হাত থেকে বাঁচতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

১৫ ২২

নাসার বিজ্ঞানীরা তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরির নেপথ্যকারণ হিসাবে বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করেছেন। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দাবানলের সৃষ্টি হতে পারে। বিদ্যুৎ এবং জলের সঙ্কটও দেখা দিতে পারে।

১৬ ২২

তবে তাপপ্রবাহের কারণে ভারতের অর্থনীতির উপর সুপ্রভাব পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০৩৭ সাল পর্যন্ত দেশ জুড়ে এতটাই গরম পড়তে পারে যে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বিক্রি হবে। এর ফলে ব্যবসার উন্নতি হবে।

১৭ ২২

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সাম্প্রতিক কালে যে গতিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, তা বজায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের জিডিপির পরিমাণ আড়াই থেকে সাড়ে চার শতাংশ কমে যেতে পারে।

১৮ ২২

উত্তর ভারতের সব ক’টি রাজ্যের পাশাপাশি দেশের মোট ২২টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করেছে হাওয়া অফিস।

১৯ ২২

মানুষ যাতে প্রচণ্ড গরমে অস্থির না হয়ে পড়েন, সে জন্য মৌসম ভবন জারি করেছে ‘হিট ওয়েভ অ্যাডভাইসারি’। তাতে বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে, গরম থেকে বাঁচতে কী কী করতে হবে।

২০ ২২

রাস্তায় বেরিয়ে বেশি ক্ষণ একটানা রোদে থাকা যাবে না। হালকা রঙের এবং হালকা সুতির বস্ত্র পরিধান করা বাঞ্ছনীয়। ছাতা ব্যবহার করা অথবা টুপি দিয়ে মাথা ঢেকে রাখা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। তার পাশাপাশি ওআরএস এবং লেবুর জল বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

২১ ২২

গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলার তাপমাত্রার পারদ ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে বেশ কয়েকটি জেলায়। বুধবার পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

২২ ২২

বৃহস্পতিবার এই তিন জেলার পাশাপাশি তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। শুক্রবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ‘লু’ বইবার আশঙ্কাও রয়েছে। এই জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকতে পারে শনিবার পর্যন্ত।

সকল ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement