বড়সড় প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করল হায়দরাবাদ পুলিশ। চিনা অনলাইন বিনিয়োগে জালিয়াতি কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে দশ জনকে গ্রেফতার করল হায়দরাবাদ পুলিশ।
ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন চিন ও তাইওয়ানের এক জন নাগরিক। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারণার অঙ্ক মোট ৯০৩ কোটি টাকা।
এই প্রসঙ্গে হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দ জানিয়েছেন, মোট ৯০৩ কোটি টাকার প্রতারণার কারবারের হদিস পেয়েছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করে মোট ১.৯১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
হায়দরাবাদের এক বাসিন্দার অভিযোগের তদন্তে নেমে এই প্রতারণা চক্রের হদিস পান তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে, ‘লোক্সেম’ নামে বিনিয়োগের একটি অ্যাপে ১.৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের পর তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
এর পরই তদন্তে নামে হায়দরাবাদ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে তারা জানতে পারে যে, ওই ব্যক্তির টাকা ‘জিন্দাই টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থার হয়ে একটি ব্যাঙ্কে রাখা হয়েছে টাকা।
যাঁর অ্যাকাউন্টে ওই টাকা রাখা হয়েছিল, তাঁর নাম বীরেন্দ সিংহ। তাঁকে পুণে থেকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় ওই ব্যক্তি জানান যে, জ্যাক নামে এক চিনা নাগরিকের কথা মতোই ওই সংস্থার নামে তিনি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন।
অ্যাকাউন্টের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের ‘ইউজার নেম’ ও পাসওয়ার্ড তিনি চিনা নাগরিককে দিয়েছিলেন বলে জানান বীরেন্দর।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই প্রতারণা চক্রে জড়িত আরও একটি সংস্থা। তার নাম ‘বেটনেক নেটওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড’। সঞ্জয় কুমার নামে দিল্লির এক বাসিন্দা ওই সংস্থার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন।
লি ঝোনজাউ নামে আরও এক চিনা নাগরিকের নির্দেশ মতো ওই অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য চিনের আরও দুই নাগরিককে দেন সঞ্জয়।
একই রকম ভাবে আরও ১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। সেগুলি সংক্রান্ত সব তথ্য চু চুন-ইউ নামে তাইওয়ানের এক নাগরিককে পাঠিয়েছিলেন।
লি ঝোনজাউ ও চু চুন-ইউ নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ধৃতরা হলেন সাহিল বজাজ, সানি, বীরেন্দর সিংহ, সঞ্জয় যাদব, নবনীত কৌশিক, মহম্মদ পারভেজ, সইদ সুলতান, মির্জা নাদিম বেগ।
প্রতি অ্যাকাউন্ট পিছু ১.২ লক্ষ টাকা করে কমিশন পেতেন সঞ্জয় ও বীরেন্দর। এমন তথ্যও পেয়েছে পুলিশ।
জিন্দাই টেকনোলজিসের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৮টি অ্যাকাউন্টে টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে দাবি। এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হাওয়ালার মাধ্যমে গোটা প্রতারণার কারবার চলত বলে মনে করছে পুলিশ। বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।