নাগা চৈতন্যের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকেই সামান্থা রুথ প্রভুর অনুরাগীদের একাংশ চাইছিলেন, তিনি আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসুন। আবার নতুন করে সাজিয়ে নিন জীবন। প্রথম বিয়ে ভাঙার বছর ঘুরতে না ঘুরতে সামান্থার দ্বিতীয় বিয়ের গুঞ্জনে হঠাৎ ছেয়ে গিয়েছে চলচ্চিত্র জগৎ। জল্পনা, সামান্থা নতুন জীবনসঙ্গী খুঁজে পেয়েছেন, রাজি হয়েছেন বিয়েতেও।
সামান্থা নিজে অবশ্য বিয়ে বা নতুন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ খোলেননি এখনও। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে এবং অনুরাগীদের মধ্যে তাঁর নতুন প্রেমিককে নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।
দক্ষিণী টলিউড সূত্রে খবর, সামান্থাকে বিয়েতে রাজি করিয়েছেন তাঁর গুরু। সদ্গুরু জগদীশ বাসুদেবকে গুরু হিসাবে মেনে চলেন ‘উ আন্তাভা গার্ল’। শোনা যাচ্ছে, তিনিই সামান্থাকে নতুন জীবন শুরু করতে উৎসাহ দিয়েছেন। নতুন বিয়ে, সংসার— গুরুর কথায় সবেতেই নাকি সম্মতি দিয়েছেন দক্ষিণী সুন্দরী।
দক্ষিণ ভারতের প্রসিদ্ধ যোগগুরু জগদীশ বাসুদেব। তিনি মাইসুরুর বাসিন্দা। ১৯৮২ সাল থেকে দাক্ষিণাত্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যোগশিক্ষার চর্চা করে আসছেন তিনি।
১৯৯২ সালে কোয়ম্বত্তূরে ইশা ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন গুরু জগদীশ। ধীরে ধীরে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ভারতেও।
গুরু জগদীশ সুবক্তা। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তৃতা ভক্তদের উদ্বুদ্ধ করেছে। একাধিক বইও লিখেছেন তিনি। তাঁর বই আন্তর্জাতিক স্তরেও জনপ্রিয় হয়েছে।
২০১৭ সালে ভারতের দ্বিতীয় সবোর্চ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মবিভূষণ লাভ করেছেন জগদীশ বাসুদেব।
বিবাহবিচ্ছেদের আগে থেকেই আধ্যাত্মিক চর্চায় ডুবে ছিলেন সামান্থা রুথ প্রভু। একাধিক অনুষ্ঠানে কিংবা সমাজমাধ্যমের পোস্টে সদ্গুরুর প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তিনি।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে সদ্গুরুর সঙ্গে ছবি দিয়ে সামান্থা লিখেছিলেন, ‘শিষ্য যখন প্রস্তুত, গুরু তখনই আসেন। আধ্যাত্মিক চর্চার মূল লক্ষ্যই হল নিজের চারপাশের গণ্ডি মুছে ফেলা আর অন্তরের অসীম ক্ষমতাকে উপলব্ধি করা।’ গুরুর বাণী যে অভিনেত্রীকে যথার্থই উদ্বুদ্ধ করে, তা সেই পোস্ট থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল।
তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা নাগার্জুনার ছেলে নাগা চৈতন্যের সঙ্গে সামান্থার পরিচয় ২০১০ সাল থেকে। ২০১৭ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন তাঁরা। হায়দরাবাদে বাগদানের পর গোয়ায় বসেছিল রাজকীয় সেই বিয়ের আসর। মহা ধুমধামে আক্কিনেনি পরিবারে পা রেখেছিলেন সামান্থা।
কিন্তু সাত বছরের প্রেম বিয়েতে গড়ানোর পর নাগা-সামান্থার সংসার বেশি দিন টেকেনি। ২০২১ সালের অক্টোবরে যৌথ বিবৃতি দিয়ে তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেন।
নাগার্জুনার পুত্র ও পুত্রবধূর বিয়ে ভাঙল কেন, তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল সিনে দুনিয়ায়। নানা গুজব ভেসে উঠেছিল। বিচ্ছেদের জন্য অনেকে দায়ী করেছিলেন সামান্থাকেই। কেউ বলেছিলেন, বিয়ের পর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। কেউ আবার বলেছিলেন, সন্তান চাননি সামান্থা। এমনকি তিনি গর্ভপাত করেছেন বলেও দাবি করেছিলেন কেউ।
আক্কিনেনি পরিবারের তরফে বিবাহবিচ্ছেদের কারণ নিয়ে কখনওই স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে অনেকে এও বলেছিলেন, কেরিয়ারের মোহে সংসারের বন্ধন ছিঁড়েছেন সামান্থা। বিভিন্ন ছবিতে সাহসী দৃশ্যে তাঁর অভিনয়ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারেননি বলে গুজব রটেছিল। অনেকে এ-ও বলেছিলেন, ‘পুষ্পা’ ছবির যে আইটেম গানের জন্য সামান্থা ৫ কোটি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন, সেই ‘উ আন্তাভা’-তেই ছিল নাগার মূল আপত্তি।
কিছু দিন আগেই সামান্থার প্রাক্তন স্বামী নাগা চৈতন্যের নতুন সম্পর্কের গুঞ্জনে ছেয়ে গিয়েছিল টলিউড। বলিউডেও কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল, মডেল অভিনেত্রী শোভিতা ধুলিপালার সঙ্গে প্রেম করছেন নাগা। সামান্থাকে ভুলে তিনিও নাকি নতুন শুরুর পথে। কিন্তু কোনও গুজবেই সিলমোহর পড়েনি।
এ বার সামান্থাকে নিয়ে ফের জল্পনা দানা বেঁধেছে। এমনিতেই গত কয়েক দিন ধরে নানা মহলে অভিনেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চর্চা চলছে। সূত্রের খবর, তিনি আমেরিকা উড়ে গিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, চিকিৎসার জন্যই নাকি বিদেশ গিয়েছেন নায়িকা। তবে একটি ইংরেজি দৈনিকে সামান্থার ম্যানেজার মহেন্দ্র জানিয়েছেন, নায়িকা একেবারে সুস্থ। তা হলে হঠাৎ আমেরিকা কেন গেলেন তিনি? কারণ স্পষ্ট নয়।