সঞ্জীব কপূর। নামটা শুনলেই মনে পড়ে যায় সদা হাসিমুখ এক রন্ধনশিল্পীর চেহারা। যাঁর হাসি এবং হাতের জাদুতে মজে থাকেন খাদ্যরসিক থেকে রন্ধনশিল্পীরা। এখনও তাঁর পদ্ধতি মেনেই ‘বাটার চিকেন’ বা ‘চিকেন ভর্তা’র মতো পদ তৈরি করেন অনেক ভারতীয়।
ভারতের অন্যতম বৈগ্রহিক রন্ধনশিল্পীর আসনে বসানো হয় সঞ্জীবকে। বিখ্যাত টেলিভিশন শো ‘খানা খাজানা’র সঞ্চালক হিসাবেও এখনও তাঁকে মানুষ মনে রেখেছে।
১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া ওই টেলিভিশন শো এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে তা প্রায় ১৮ বছর ধরে চলেছিল। মনে করা হয় সঞ্জীবের জনপ্রিয়তার জোরেই এই শো এত বছর ধরে চলেছিল।
১২০টি দেশে সম্প্রচারিত ওই শোয়ের দর্শকের সংখ্যা ছিল ৫০ কোটিরও বেশি। এই শোয়ের কারণে সঞ্জীবের নাম ছড়িয়ে পড়ে।
খুব শীঘ্রই দেশের সীমানা টপকে আন্তর্জাতিক মানের রন্ধনশিল্পী হিসাবে পরিচিতি পান সঞ্জীব।
ভারতীয় এই রন্ধনশিল্পীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ কত? সঞ্জীব বিশ্বের অন্যতম ধনী রন্ধনশিল্পী হিসাবে বিবেচিত হন।
সঞ্জীবের জন্ম হরিয়ানার অম্বালায়। তিনি নয়াদিল্লির একটি খ্যাতনামী সংস্থা থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ডিপ্লোমা করেন।
১৯৮৪ সালে রন্ধনশিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন সঞ্জীব। ১৯৯২ সালের অক্টোবরে অ্যালিওনা কপূরকে বিয়ে করেন তিনি।
১৯৯২ সালে সঞ্জীব মুম্বইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় এক বিলাসবহুল হোটেলে প্রধান রন্ধনশিল্পী হিসাবে যোগ দেন। ধীরে ধীরে রন্ধনশিল্পী হিসাবে নাম ছড়িয়ে পড়ে তাঁর। এর পর পরই ওই বিখ্যাত টেলিভিশন শোয়ে যোগ দেন তিনি।
দেশে এবং বিদেশে বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁ রয়েছে সঞ্জীবের। তবে তিনি তাঁর প্রথম রেস্তরাঁ খুলেছিলেন দুবাইয়ে। ১৯৯৮ সালে চালু হওয়া রেস্তরাঁর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
একটি জীবনযাপন (লাইফস্টাইল) চ্যানেলেরও মালিক সঞ্জীব।
সঞ্জীব এমন একটি সংস্থারও মালিক, যা রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বিক্রি করে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর এই সংস্থার আনুমানিক আয় ছিল ৭০০ কোটি টাকা। সঞ্জীবের ওই সংস্থা বর্তমানে ১৪টি দেশে নিজেদের পণ্য বিক্রি করে।
সঞ্জীবের ব্যবসাগুলির প্রায় ৪০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের উপর দাঁড়িয়ে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঞ্জীবের মোট সম্পত্তির পরিমাণ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
সঞ্জীব মাসে ৫০ কোটি টাকারও বেশি আয় করেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রন্ধনশিল্পে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ভারত সরকারের তরফে সঞ্জীবকে ২০১৭ সালে ‘পদ্মশ্রী’ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে নয়াদিল্লিতে একসঙ্গে ৯১৮ কেজি খিচুড়ি রান্না করে গিনেসের বুকেও নাম তুলেছেন ভারতের এই বৈগ্রহিক রন্ধনশিল্পী।