অর্থনৈতিক সঙ্কট চরমে। দেনার দায়ে ধুঁকছে পাকিস্তান। দেশের লাখ লাখ মানুষ দু’বেলা খেতে পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে সকলেই বিলাসবহুল জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত, তা ভাবা কিন্তু ভুল। সে দেশে ‘সব থেকে দামি বাড়ি’র ছবি সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। যা দেখে হতবাক হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
পাকিস্তানের ‘সব থেকে দামি বাড়ি’ বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে। তাতে বাড়ির বিক্রয়মূল্য ১২৫ কোটি টাকা বলা হয়েছে। বাড়িটি বিক্রি হয়ে গিয়েছে কি না, এখনও জানা যায়নি।
সেই বিজ্ঞাপনেই বাড়ির ছবি এবং ভিডিয়ো দেওয়া হয়েছে। তাতে ধরা পড়েছে বিলাসবহুল বাড়ির অন্দর। তবে পাকিস্তানের সব থেকে দামি বাড়ির সঙ্গে ভারতের সব থেকে দামি বাড়ির অনেক ফারাক।
ভারতের সব থেকে দামি বাড়ি হল মুকেশ অম্বানীর অ্যান্টিলিয়া। যার দাম প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা। মনে করা হয়, গোটা পৃথিবীতে এর থেকে দামি বাড়ি আর তেমন নেই।
মুম্বইয়ের এই বাড়িতেই স্ত্রী নীতা অম্বানী, বড় ছেলে আকাশ, পুত্রবধূ শ্লোকা, ছোট ছেলে অনন্ত, নাতি-নাতনিকে নিয়ে থাকেন মুকেশ। চার লক্ষ বর্গফুটের এই বাড়িটি ২৭ তলা। উচ্চতায় ৫৭০ ফুট।
অ্যান্টিলিয়া এমন ভাবে নকশা করা হয়েছে যে, ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ হলেও এই বাড়ি ভেঙে পড়বে না।
মুকেশের বাড়িতে রয়েছে জিম, স্পা, বিউটি পার্লার, বলরুম, তিনটি সুইমিং পুল, ৫০ আসন বিশিষ্ট সিনেমা হল। যোগাসন এবং নাচের জন্য আলাদা স্টুডিয়োর ব্যবস্থা রয়েছে।
অ্যান্টিলিয়ার ছ’টি তলে থাকে গাড়ি। গোটা বাড়িতে রয়েছে ন’টি লিফ্ট। ছাদে রয়েছে তিনটি হেলিপ্যাড।
আড়েবহরে, বিলাসে এর ধারেকাছে না হলেও পাকিস্তানের সব থেকে দামি বাড়িতেও কিন্তু বিলাস, প্রাচুর্যের কোনও অভাব নেই। বাড়িটিকে ছোটখাটো শহর বললেও ভুল হবে না।
১২৫ কোটির সেই বাড়ির সামনে রয়েছে বিশাল বাগান। বাগানের ভিতর রয়েছে ফোয়ারা। বাগানে লাগানো রয়েছে মরক্কো শৈলীর বাতি। বাগানের দেওয়ালেও রয়েছে বেশ কিছু ফোয়ারা।
সার সার গাড়ি রাখার গ্যারাজ, সুইমিং পুল, জিম, থিয়েটার, সবই রয়েছে বাড়িতে। বসে আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে একটি খোলা ছাদ, একটি ঢাকা ছাদ।
বাড়ির মূল ফটকের উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। বিলাসবহুল এই বাড়িতে রয়েছে ১০টি বেডরুম। প্রতিটিরই নকশা বিশেষ ধরনের। কোনও বেডরুমই হেলফেলা করে সাজানো নয়। হলঘরে একসঙ্গে বসতে পারেন ২০০ জন।
এই বাড়ির বৈচিত্র্য হল, দেখে এটিকে কোনও বিলাসবহুল হোটেল মনে হবে না। বরং বাড়িই মনে হবে। যদিও বিলাসের সব সরঞ্জামই মজুত। আধুনিক ব্যবস্থাও রয়েছে।
বাড়ির অন্দরসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে সাদা, কালো এবং সোনালি রং। বেশির ভাগ ঘরের রং সাদা। ঘরের সব আসবাবও সাদা, কালো এবং সোনালি। শৌচালয়ে রয়েছে জাকুজি।
তাতে ঝুলছে সোনালি রঙের ঝাড়বাতি। এক-একটি ঘরে রয়েছে তাকলাগানো ঝাড়বাতি। গোটা বাড়িতে মোট ঝাড়বাতির সংখ্যা ১৪০।
বাড়ির পিছনে রয়েছে পানশালা। সেখানে বার-বি-কিউ করারও ব্যবস্থা রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে লাগোয়া আরও একটি সুইমিং পুল।
ঘরে রয়েছে একাধিক পাথরের মূর্তি। সেগুলি ইটালি এবং স্পেন থেকে আমদানি করা হয়েছে। এক-একটির দাম লক্ষাধিক টাকা।
মেঝেতে বিছানো রয়েছে তুরস্কের গালিচা। সব ক’টিই বিশেষ ভাবে তৈরি করা। বাড়ির এক তলায় রয়েছে একটি অফিসঘর। তার সঙ্গে লাগোয়া বেডরুম এবং বসার ঘরও রয়েছে। তবে সেই বাড়ি শেষ পর্যন্ত বিক্রি হল কি না, রয়েছে প্রশ্ন।