আর মাত্র কিছু ক্ষণের অপেক্ষা। তার পরেই অযোধ্যা রামমন্দিরে রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই উপলক্ষে সেজে উঠেছে অযোধ্যা। আঁটসাঁট করা হয়েছে নিরাপত্তা।
ইতিমধ্যেই মানুষের ঢল নেমেছে রামমন্দিরের সামনে। একে একে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
মন্দিরের বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ অনুষ্ঠানের সৌজন্যে ভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে অযোধ্যা। রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু-সাধ্বীরাও উপস্থিত হয়েছেন অযোধ্যায়।
ভক্তদের আগমন হয়েছে বিদেশ থেকেও। রয়েছেন ব্রিটেন থেকে আগত সাধ্বীরা। গেরুয়া পোশাক পরিহিতা তরুণী সাধ্বীরা এসেছেন লন্ডন থেকে।
তবে তাঁরা শুধু সাধ্বী নন, শিক্ষাক্ষেত্রের উচ্চস্তরেও তাঁদের বিচরণ। তবে সব ছেড়েছেন সন্ন্যাসিনী হওয়ার তাগিদে।
লন্ডন থেকে আগত সাধ্বীদের মধ্যে রয়েছেন সাধ্বী অবক্ষী ভারতী। দু’টি পিএইচডি ডিগ্রিধারী অবক্ষী এক জন মনোবিজ্ঞানী।
সাধ্বীদের মধ্যে রয়েছেন গ্যাব্রিয়েলাও। ব্রিটেনের এই জীববিজ্ঞানীও খুব অল্প বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।
সাধ্বী অবক্ষী এবং সাধ্বী গ্যাব্রিয়েলার সঙ্গে রয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা ভারতী, সাধ্বী জ্যোতি প্রভা ভারতী এবং সাধ্বী পূজা ভারতীও। তবে তাঁরা ভারতেরই বাসিন্দা।
অবক্ষী এবং গ্যাব্রিয়েলার এটিই প্রথম অযোধ্যা দর্শন। খুব ছোটবেলায় এক বার ভারতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন অবক্ষী।
সাধ্বী অবক্ষীর কথায়, “আমরা সবাই সাধ্বী এবং গুরু বোন। আমরা মা আশুতোষাম্বরীজি-র অনুগামী।’’
অবক্ষী জানিয়েছেন, তিনি লন্ডন থেকে বিমানে চেপে ভারতে এসেছেন। ইতিমধ্যেই ঘুরে দেখেছেন, ‘রাম কি পাউড়ি’, সরযূ নদী-সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থান।
সাধ্বী গ্যাব্রিয়েলাও এসেছেন অবক্ষীর সঙ্গেই। দিল্লি থেকে সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং উত্তরপ্রদেশের সাধ্বী জ্যোতি এবং সাধ্বী পূজা তাঁদের সঙ্গে পরে যোগ দিয়েছেন।
সাধ্বী অবক্ষী সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’-কে বলেন, “আমি ভগবান রামের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র সাক্ষী হতে অযোধ্যায় এসেছি। এটি একটি বিশাল দিন। এমন একটি দিন যা বিশ্বকে বদলে দেবে। সনাতনীদের জন্য একটি যুগান্তকারী দিন। এত বছর পরে আমাদের ধর্মকে প্রকাশ্যে উদ্যাপন করতে পারছি। এর নেপথ্যে অনেক সংগ্রাম রয়েছে। এখন আমরা বিশ্ব মঞ্চে সম্মান পাচ্ছি। পুরো বিশ্ব এখানে রয়েছে এবং আমরা রামলালাকে প্রণাম জানানোর সুযোগ পাচ্ছি।’’
সাধ্বী গ্যাব্রিয়েলা জানিয়েছেন, ভগবান রামের প্রতি ভক্তিই তাঁদের অযোধ্যায় টেনে নিয়ে এসেছে।
গ্যাব্রিয়েলার কথায়, “আমার এক জন গুরুর প্রয়োজন ছিল। আমি ভাগ্যবান যে আমি মা আশুতোষাম্বরীজির সান্নিধ্যে আসতে পেরেছি। অযোধ্যায় এসে খুব ভাল লাগছে। আলাদা শক্তি অনুভব করছি। সবাই ভগবান রামের কথা বলছে এবং বেশির ভাগ সময় মানুষ রামায়ণ এবং হিন্দু সংস্কৃতি, বেদ এবং মন্ত্রগুলির কথা বলছে যা আমাদের হাজার হাজার বছর এবং যুগ ধরে পথ দেখিয়েছে।’’
দিল্লি থেকে আগতা তরুণী তথা সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন, “রাম সমগ্র বিশ্বজগতের মালিক। এক জন শিষ্য হিসাবে, আমরা সেই ঐশ্বরিক মুহূর্তের অপেক্ষা করছি। প্রভু রামের কৃপায় অবশেষে সেই দিন এসেছে।’’
মঙ্গলবার তাঁরা আবার রামমন্দিরে প্রণাম করতে আসবেন বলেও জানিয়েছেন প্রজ্ঞা।
উল্লেখযোগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যায় পৌঁছে গিয়েছেন। হেলিকপ্টারে করে রামমন্দিরে গিয়েছেন তিনি। তাঁর হাতেই রামলালার বিগ্রহে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হতে চলেছে।