Goldfield Pioneer Cemetery

‘লাইব্রেরির আঠা খেয়ে মৃত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি’! কবরের পাথরে খোদাই বাক্য ঘিরে এখনও রহস্য

নেভাদার গোল্ডফিল্ডে সার সার কবরের উপর কোনওক্রমে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এবড়োখেবড়ো পাথর। যেগুলির গায়ে খোদাই করা বিচিত্র সব ‘এপিটাফ’। যা ঘিরে জমেছে রহস্যের পরত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নেভাদা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৩১
Share:
০১ ১৯

ধূ ধূ প্রান্তরের সাদামাটা কবরখানাটিতে সবুজের লেশমাত্র নেই। প্রহরা তো দূরের কথা, দেওয়ালঘেরাও নয় চৌহদ্দিটি। ইতিউতি ছড়ানো মরা ঘাসের মধ্যে সার সার কবরের উপর কোনওক্রমে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এবড়োখেবড়ো পাথর। যেগুলির গায়ে খোদাই করা বিচিত্র সব ‘এপিটাফ’। তারই একটিতে লেখা, ‘লাইব্রেরির আঠা খেয়ে মৃত অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি’। যা ঘিরে জমেছে রহস্যের পরত। আমেরিকার নেভাদার এই কবরটি আসলে কার?

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ১৯

মরুরাজ্য নেভাদার গোল্ডফিল্ড শহরের কবরখানায় এই এপিটাফের খবর ছড়িয়ে পড়েছে দূরদূরান্তে। সেটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে নানা প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। এফিটাফে সনতারিখও লেখা— ১৪ জুলাই, ১৯০৮। তবে কি কবরটি ১১৫ বছর আগেকার? তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

Advertisement
০৩ ১৯

বিংশ শতকের গোড়ায় রাতারাতি বদলে গিয়েছিল নেভাদার এই নির্জন জায়গাটা। প্রতি দিনই কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় জমত। সোনার খোঁজে তাঁবু গেড়ে শহরের মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কাজে নেমে পড়তেন তাঁরা। এক সময় তো এর নাম হয়ে গিয়েছিল ‘তাঁবুর শহর’।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ১৯

এ শহরে সোনার খোঁজের শুরুটা হয়েছিল সেই ১৯০২ সালে। টম ফিশারম্যান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা র‌্যাবিট স্প্রিং এলাকা থেকে সোনার কিছুটা নমুনা নিয়ে গিয়েছিলেন টোনোপা শহরে। সে কথা কানাকানি হতেই নড়েচড়ে বসেছিলেন বিলি মার্শ এবং হেনরি স্টিমলার নামের দুই সন্ধানী।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ১৯

ঠিক কোথা থেকে সোনা পেলেন ফিশারম্যান? নেভাদার ওই এলাকায় কি আরও সোনা লুকিয়ে রয়েছে? এমন সব উত্তর খুঁজতেই ফিশারম্যানের সঙ্গে ময়দানে নেমে পড়েন মার্শ এবং হেনরি। তিন জনের অভিযানের ফসলও ফলেছিল। সোনার খোঁজে লোকজনের ভিড়ে নেভাদার নির্জন জায়গাটি রাতারাতি গমগম করতে শুরু করেছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ১৯

নেভাদার ওই এলাকায় সোনার খোঁজ পাওয়ার পর বিনিয়োগকারীরাও হাজির হয়েছিলেন। এক সময় ৩৬ জন বিনিয়োগকারী মিলিত হয়ে নয়া এক শহর গড়ে ফেলেন। ১৯০৩ সালের ২০ অক্টোবর জন্ম নেয় গোল্ডফিল্ড শহর।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ১৯

সে সময়কার ক্যালিফোর্নিয়ার সংবাদপত্র ‘সান ফ্রান্সিসকো এগ্‌জ়ামিনার’ দাবি করে বসে, সোনার খোঁজে এ শহরের থেকে আর কোথাও এত বড়সড় অভিযান হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ১৯

বছরখানেকের মধ্যেই ফুলেফেঁপে উঠেছিল গোল্ডফিল্ড। ধীরে ধীরে নেভাদার সবচেয়ে বড় শহরে পরিণত হয় সেটি। নয়া শহরে গড়ে ওঠে সাজানোগোছানো ঘরবাড়ি, স্কুল, আদালত, হোটেল, দমকল দফতর।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ১৯

গোল্ডফিল্ডে আরও একটি প্রয়োজনীয় সংযোজন হয়েছিল। শহরে গড়ে উঠেছিল ‘গোল্ডফিল্ড ইউনিয়ন সেমেটারি’ নামে একটি কবরখানা। তবে ছবির মতো সুন্দর অভিজাত ‘গোল্ডফিল্ড হোটেলের’ কাছেই ছিল সেটি। ফলে ট্রেন থেকে নেমে শহরে পা রাখতেই পর্যটকদের চোখে পড়ত তা। সে কারণে ১৯০৮ সালে ওই কবরখানাটি অন্যত্র সরানো হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ১৯

গোল্ডফিল্ডের উত্তরাঞ্চলে নয়া কবরখানাটি গড়ে ওঠে। এ বার তার নাম হয়, ‘পায়োনিয়র সেমেটারি’। পুরনো কবরখানা থেকে ৭০টি দেহ সেখানে সরানো হয়েছিল। নতুন কবরখানার জন্য কাজে লাগানো হয়ছিল হাতে কাটা স্থানীয় পাথর। প্রতিটিতেই কবরের মালিক বা মালকিনের নামে কিছু না কিছু লেখা ছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ১৯

ওই কবরখানায় মোট ১৫৪ জনের দেহ কবরস্থ করা হয়েছিল। সেগুলির মাথার কাছে ছিল নানা আজব লেখা। একটিতে যেমন ছিল, ‘ঠিক আছে কোরাল’। অন্যটিতে আবার লেখা, ‘এডওয়ার্ড হিউজ়, নভেম্বর ২৭, ১০০৯। নেভাদার গোল্ডফিল্ডের এসমেরাল্ডা কাউন্টি জেলে আত্মঘাতী।’

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ১৯

গোল্ডফিল্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত কবরটি বোধ হয় লাইব্রেরির আঠা খেয়ে মৃত এক অজ্ঞাতপরিচয়ের। কে ওই ব্যক্তি? কী ভাবে মৃত্যু হল তাঁর? এ নিয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ১৯

ওই কবরটির গায়ে যে তারিখটি খোদাই করা রয়েছে, তা দিন কয়েক পর ‘ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ নামে সে সময়কার এক সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে দাবি, ওই কবরের মালিকের দেহের ময়নাতদন্ত করেছেন টার্নার নামে এক চিকিৎসক। দিন কয়েক আগে গোল্ডফিল্ডের একটি কানাগলিতে তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ১৯

১৯০৮ সালের ২৪ জুলাইয়ের ওই প্রতিবেদনটি জানিয়েছে, ক্ষুধার্ত অবস্থায় এক জার লাইব্রেরির আঠা খাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান ওই অজ্ঞাতপরিচয় ভবঘুরে। গোল্ডফিল্ডের লাইব্রেরির বাইরে আবর্জনার মধ্যে ওই জারটি খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ১৯

সংবাদপত্রটির আরও দাবি, লাইব্রেরির বইপত্র বাঁধাইয়ের কাজে যে আঠা ব্যবহার করা হত, তা-ই ছিল ওই জারে। সাধারণত ময়দার মধ্যে জল মিশিয়ে ওই ধরনের আঠা তৈরি করা হত। তাতে আরও একটি বিষাক্ত উপাদান অতিমাত্রায় থাকত। যার বিষেই মৃত্যু হয় ওই ভবঘুরের।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ১৯

জারের আঠায় ৬০ শতাশ ফটকিরি ছিল বলে দাবি। সম্ভবত, জারে রাখা আঠার তালে ময়দার গন্ধেই টানেই সেটি খুলেছিলেন ওই ব্যক্তি। এর পর সেটিকে সুস্বাদু পাউরুটি ভেবে খেয়ে ফেলেন। প্রাণঘাতী ফটকিরি পেটে গেলে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর।

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ১৯

মৃতের নাম-পরিচয় অজানা থাকলেও তাঁর পকেটে একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছিল। সেটির খামে লেখা ছিল, ‘‘মিস্টার রস, গোল্ডফিল্ড, নেভাদা।’’ সে সময় গোল্ডফিল্ডের বাসিন্দা ছিলেন রস।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ১৯

ওই চিঠিটি কি রসের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি? তেমনই অনুমান সংবাদপত্রটির। অনেকের মতে, গোল্ডফিল্ডে সোনার খোঁজে এসেছিলেন ওই ভবঘুরে। যদিও এ সবের আসল ঘটনা আজও অজানা।

ছবি: সংগৃহীত।

১৯ ১৯

ভবঘুরের কবরটির পাথরে সম্প্রতি সাদা রং পড়েছে। তাতে লাল রঙে এপিটাফটি লেখা। ফলে সেটি যে শতাব্দীপ্রাচীন, তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। তবে অনেকের দাবি, সদ্য রঙের পোঁচ পড়লেও সেটি ১১৫ বছরের পুরনো।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement