Gold Price

বিয়ের মরসুমের মুখে ‘সোনায় সোহাগা’, হু হু করে কমছে হলুদ ধাতুর দাম! কেন হঠাৎ পতন?

নভেম্বরে সোনার দাম কমায় স্বস্তিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলা তরুণ-তরুণীদের পরিবার। হলুদ ধাতু আরও কিছুটা সস্তা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০৩
Share:
০১ ১৯

বিয়ের মরসুমের মুখে সুখবর। লাফিয়ে লাফিয়ে কমছে সোনার দর। মাসখানেক আগেই ৮০ হাজারে পৌঁছে গিয়েছিল হলুদ ধাতু। যা ফের ৭৫ হাজারে নেমে এসেছে। যা নতুন সংসার শুরু করতে চলা যুগলের মুখের হাসি চওড়া করেছে।

০২ ১৯

ইন্ডিয়া বুলিয়ান অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আইবিজেএ) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর সকাল ৭টা নাগাদ আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ১০ গ্রাম সোনার দর দাঁড়ায় ৭৫ হাজার ২১০ টাকা। এ মাসের মধ্যে যা সর্বনিম্ন। হলুদ ধাতু আরও কিছুটা সস্তা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
০৩ ১৯

এ বছরের ৯ অক্টোবর সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছয় হলুদ ধাতুর দাম। ওই দিন ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রাম সোনা বিক্রি হয়েছে ৮১ হাজার ৫০০ টাকায়। তার পর থেকে ধীরে ধীরে দর নামতে শুরু করে।

০৪ ১৯

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, অক্টোবরে উৎসবের মরসুম শেষ হতেই বাজারে সোনার চাহিদা কমতে শুরু করে। আন্তর্জাতিক বাজারেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর হলুদ ধাতু কেনার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি।

০৫ ১৯

উল্লেখ্য, সোনার মূলত তিনটি শ্রেণি রয়েছে। সেগুলি হল ২৪, ২২ ও ১৮ ক্যারেট। এর মধ্যে ২৪ ক্যারেটকে সবচেয়ে বিশুদ্ধ বলে ধরা হয়। এতে হলুদ ধাতুর পরিমাণ থাকে ৯৯ শতাংশ। ২২ ক্যারেটে ৯১ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা পাওয়া যায়। আর ৭৫ শতাংশের বেশি হলুদ ধাতু থাকে ১৮ ক্যারেটে।

০৬ ১৯

২৪ ক্যারেটের সোনায় কোনও গয়না তৈরি করা যায় না। এটি মূলত গিনি বা হলুদ ধাতুর বার নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। আর গয়না সোনা হল ২২ ও ১৮ ক্যারেট। অলঙ্কারের ক্ষেত্রে সোনার দামের উপর যুক্ত হয় মজুরি। আর হলুদ ধাতুতে তিন শতাংশ জিএসটি নিয়ে থাকে সরকার।

০৭ ১৯

এ বছরের ১২ নভেম্বর, খুচরো বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৭,৮০০ টাকা/১০ গ্রাম দরে। মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের ডিসেম্বর ফিউচারে হলুদ ধাতুর দামে ০.১৫ শতাংশের পতন দেখা গিয়েছে। ফলে এর দর ৭৫,২৩৫ টাকা/১০ গ্রামে নেমে এসেছে। আগে যা ৭৫ হাজার ৩৫১ টাকায় বন্ধ হয়েছিল।

০৮ ১৯

১৩ নভেম্বর কলকাতার বাজারে ২৪, ২২ ও ১৮ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে যথাক্রমে ৩৩০ টাকা, ৪৪০ টাকা ও ৪০০ টাকা কমেছে। এই তিন শ্রেণির হলুদ ধাতু খুচরো বাজারে কিনতে গেলে খরচ পড়ছে ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা, ৭০ হাজার ৪৫০ টাকা ও ৫৭ হাজার ৬৪০ টাকা।

০৯ ১৯

সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’-এর খবর অনুযায়ী, বিশ্ব বাজারেও হলুদ ধাতু বেশ সস্তা হয়েছে। ১২ নভেম্বর স্পট গোল্ডের দর আউন্স প্রতি ০.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ফলে এর বিক্রয়মূল্য ২,৬০৪.৮৭ ডলারে নেমে আসে। যা ২০ সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওই তারিখে এক আউন্স সোনার দাম ছিল ২,৫৮৯.৫৯ ডলার।

১০ ১৯

আবার কমক্স গোল্ড ফিউচারে আউন্স প্রতি সোনার দর কমেছে আনুমানিক ০.৭৬ শতাংশ। যা প্রায় ১৯.৯০ ডলার। এই বাজারে হলুদ ধাতু বিক্রি হচ্ছে ২,৫৯৭.৮০ ডলার/আউন্স দরে। এশিয়ান মার্কেট আওয়ারে কমেক্স সিলভার ফিউচারে ০.৬ শতাংশ কমেছে সোনার দাম।

১১ ১৯

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সরাসরি প্রভাব হলুদ ধাতুর দরের উপরে পড়েছে। তাঁদের দাবি, ভোটে দ্বিতীয় বারের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় ডলার শক্তিশালী হতে শুরু করেছে। যার জেরে সোনার দরে এই পতন লক্ষ করা যাচ্ছে।

১২ ১৯

হলুদ ধাতুর দর আমেরিকার মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গেও কিছুটা সংযুক্ত। আসন্ন ট্রাম্প জমানায় যার লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকার ফেডারেল ব্যাঙ্ক কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) ঘোষণা করবে। সেখানে উন্নতি দেখা গেলে সোনা সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

১৩ ১৯

‘‘বর্তমানে সূচক যে ভাবে নীচের দিকে নামছে, তাতে আগামী দিনে হলুদ ধাতুর দাম ৭২ হাজার টাকায় পৌঁছতে পারে। কমেক্স গোল্ড ২ হাজার ৬০০ ডলারের নীচে গেলেই দর ওই জায়গায় নেমে যাবে।’’ এমনটাই বলেছেন ‘এলকেপি রিসার্চ’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট যতীন ত্রিবেদী।

১৪ ১৯

নির্বাচনী প্রচারে আমদানি সামগ্রীর উপর উচ্চ হারে কর বসানোর কথা বলেছেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পাশাপাশি, অভিবাসীদের নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে পারেন তিনি। যাতে আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এতে সোনার চাহিদা আরও কিছুটা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

১৫ ১৯

সোনাকে বরাবরই নিরাপদ বিনিয়োগ বলে গণ্য করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ব ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের গতি তীব্রতর হওয়ায় এর দর চড়ছিল। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেই ঝাঁজ কিছুটা কমেছে। ইউরোপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ব বাজারে সোনার চাহিদা কমার এটাও অন্যতম প্রধান কারণ।

১৬ ১৯

ভারতীয়দের কাছে গৃহস্থালি সম্পদের মধ্যে অন্যতম হল সোনা। যা বিভিন্ন সময়ে আকর্ষণীয় মুনাফা দিয়েছে। তাই এ দেশের আমজনতার মধ্যে হলুদ ধাতু কেনার প্রবণতা রয়েছে।

১৭ ১৯

এ বছরের ১৮ এপ্রিল ৭৩,৪৭৭ টাকা/১০ গ্রাম দরে বিক্রি হয়েছে ২৪ ক্যারেটের সোনা। পরিসংখ্যান বলছে, অক্টোবরে গত ন’বছরের মধ্যে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল দাম। ২০১৫ সালে হলুদ ধাতুর দর ছিল ২৪ হাজার ৭৪০ টাকা।

১৮ ১৯

২০০৬ সালের ৩ মার্চ ২৪ ক্যারেট সোনার বাজারমূল্য প্রতি ১০ গ্রামে মাত্র ৮ হাজার ২৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। এই দর তিন গুণ বাড়তে ন’বছরের বেশি সময় লেগেছিল। ১৯৮৭ সালের ৩১ মার্চ ২,৫৭০ টাকা/১০ গ্রাম দরে বিক্রি হয়েছে ২৪ ক্যারেটের হলুদ ধাতু।

১৯ ১৯

বর্তমানে সোনার দাম যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, দর তার থেকে তিন গুণ বাড়লে এটি ২.৪০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছবে। আগামী ছয় থেকে ন’বছরের মধ্যে ওই দামে হলুদ ধাতু বিক্রি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement