দক্ষিণী ফিল্মজগতের খ্যাতনামী সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা বিজয় অ্যান্টনি। মঙ্গলবার তাঁর কন্যাসন্তানের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত ইন্ডাস্ট্রি। সুরকারের চেন্নাইয়ের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় ১৬ বছর বয়সি কন্যা মীরার ঝুলন্ত দেহ।
মীরা কেন চরম সিদ্ধান্ত নিল তার আসল কারণ জানা না গেলেও চিকিৎসকদের অনুমান, অবসাদে ভুগছিল সে।
তবে বিজয় একা নন, বলিউডে এমন বহু তারকা রয়েছেন যাঁদের জীবনে সন্তান হারানোর শোকের ছায়া পড়েছে। তারকাদের এই তালিকায় বলি অভিনেতা গোবিন্দ থেকে শুরু করে রয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলেও।
আশির দশক থেকে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিপাড়ার দর্শকের মন জিতে আসছেন গোবিন্দ। কৌতুক চরিত্র হোক বা ‘ডান্সার’, প্রশংসা কুড়িয়েছেন সর্বত্র। কিন্তু ক্যামেরার সামনে যে অভিনেতা সদাহাস্যময়, তাঁর জীবনেও মস্ত ঝড় বয়ে গিয়েছিল।
জন্মের চার মাস পর মারা যায় গোবিন্দের কন্যাসন্তান। সন্তানের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের আরও ১০ জন সদস্যের একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
থিয়েটারের পাশাপাশি বড় পর্দায় অভিনয় করে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন কবীর বেদী। চার বার বিয়ে করেন এই অভিনেতা। তিন সন্তান রয়েছে তাঁর। কিন্তু এক সন্তানকে হারিয়ে ফেলেন কবীর।
কবীরের পুত্রসন্তান সিদ্ধার্থের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পর দেখা যায়, তিনি স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। ২৬ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন সিদ্ধার্থ।
আট দশকেরও বেশি সময় মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে ফেলেছেন আশা ভোঁসলে। এখনও পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি গান গেয়ে ফেলেছেন তিনি। গায়িকার জীবনেও ছুঁয়ে গিয়েছে সন্তান হারানোর শোক।
তিন পুত্র এবং এক কন্যাসন্তান ছিল আশার। তাঁদের মধ্যে দুই সন্তানকে কম বয়সে হারান গায়িকা। ৫৬ বছর বয়সে তাঁর কন্যা বর্ষা ভোঁসলে আত্মহত্যা করেন। ২০১৫ সালে আশার পুত্র হেমন্ত ভোঁসলে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
কখনও সঞ্চালকের ভূমিকায়, কখনও বা অভিনয় ক্ষেত্রে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন শেখর সুমন। সাধারণত হাস্যকৌতুকে মোড়া চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে শেখরকে।
আয়ুষ এবং অধ্যয়ন নামে দুই পুত্রসন্তান ছিল শেখরের। ১১ বছর বয়সে আয়ুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অধ্যয়ন বর্তমানে অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত।
২০ বছর বয়সে দুর্ঘটনায় মারা যান গজল সঙ্গীতশিল্পী জগজিৎ সিংহের কনিষ্ঠ পুত্র। কয়েক বছর পর জগজিতের সৎকন্যা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। শোনা যায় বিবাহিত জীবন নিয়ে অশান্তিতে ছিলেন তিনি।
ভারতীয় ফিল্মজগতে কৌতুকাভিনেতা হিসাবে জনপ্রিয় ছিলেন মেহমুদ আলি। চার দশকের কেরিয়ারে ৩০০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেন মেহমুদ।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, জন্মের সময় মেহমুদ-পুত্র ম্যাকি আলি পোলিয়ো রোগে আক্রান্ত হয়। ৩৫ বছর বয়সে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ম্যাকি।
আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে ভজন শিল্পীর পাশাপাশি হিন্দি সঙ্গীজগতে খ্যাতনামী হয়ে ওঠেন অনুরাধা পোড়ওয়াল। এক কন্যাসন্তান কবিতা, পুত্রসন্তান আদিত্যকে নিয়ে সংসার ছিল তাঁর।
২০২০ সালে কোভিড অতিমারির সময় কিডনির সমস্যায় মারা যান আদিত্য। কবিতা পেশায় সঙ্গীতশিল্পী। মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সঙ্গীতের দিকেই ঝুঁকেছেন তিনি।
বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি ফিল্মজগতে প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে নাম লিখিয়ে ফেলেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। পায়েল এবং মেঘা নামে দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন অভিনেত্রী।
দীর্ঘকালীন অসুস্থতার কারণে মারা যান মৌসুমীর কন্যা পায়েল। টাইপ-১ ডায়াবিটিসে বহু দিন ধরে আক্রান্ত থাকায় অসুস্থতার ফলে মারা যান পায়েল।