যশরাজ ফিল্মসের স্পাই ইউনিভার্সের হাত ধরে শাহরুখ খানের পাশাপাশি ‘হিট’ দীপিকা পাডুকোনও। শাহরুখের প্রত্যাবর্তনের ছবিতে প্রধান নারী চরিত্র তিনিই। ‘পাঠান’-এ দীপিকার কাজ দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বলিউডে পুরোদস্তুর অ্যাকশন ছবিতে দীপিকা এই প্রথম। এর আগে কিছু কিছু ছবিতে হাতেগোনা কয়েকটি দৃশ্যে তাঁর অ্যাকশন দেখা গিয়েছে। ‘পাঠান’-এ ভিন্ন স্বাদের চরিত্রে কাজ করলেন বলিউডের ‘পদ্মাবতী’।
‘পাঠান’-এ দীপিকাকে দেখা গিয়েছে গুপ্তচর সংস্থা পাকিস্তানের আইএসআই-এর প্রাক্তন এজেন্ট হিসাবে। তাঁর চরিত্রের নাম রুবিনা মহসিন। নেতিবাচক চরিত্র হলেও নজর কেড়েছেন অভিনেত্রী।
এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল দীপিকার চরিত্রের। পর্দায় অনেকটা সময়ও পেয়েছেন তিনি। অ্যাকশনপ্রধান ছবিতে অ্যাকশনের মাধ্যমেই মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। ‘পাঠান’-এর মারপিটের দৃশ্যে যথেষ্ট সাবলীল দেখিয়েছে দীপিকাকে।
কখনও নায়ককে বাঁচাতে তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মারধর, গুলিতে দুষ্কৃতীদের ঘায়েল করা, কখনও আবার রাইফেল হাতে নিয়ে দক্ষ যোদ্ধার মতো লড়াই— ‘পাঠান’-এ বার বার ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছেন দীপিকা।
শাহরুখ খান এবং জন আব্রাহামের মারকাটারি অ্যাকশন দৃশ্যের মাঝে এক মুহূর্তের জন্যেও বেমানান মনে হয়নি দীপিকাকে। বরং অ্যাকশনে নায়ক এবং খলনায়ককে সমানে টক্কর দিয়েছেন অভিনেত্রী।
অ্যাকশন দৃশ্যে দীপিকাকে এর আগে দেখা গিয়েছে হলিউড ছবিতে। ভিন ডিজ়েলের বিপরীতে ‘ট্রিপল এক্স’ ছবিতেও বন্দুক হাতে তুলে নিয়েছিলেন দীপিকা। তবে সেই ছবিতে দীপিকার অ্যাকশন দৃশ্যের সংখ্যা খুব বেশি নয়।
‘ককটেল’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ কিংবা ‘তামাশা’র মতো ছবিতে যে দীপিকাকে দেখা গিয়েছিল, দর্শকের কাছে তাঁর সেই প্রেমিকা রূপই বেশি পরিচিত। ‘পিকু’-র সাদামাটা বাঙালি মেয়ে দীপিকাও মন কেড়েছিল সকলের।
মূলত সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর হাত ধরেই ‘পাঠান’-এর আগে কিছু কিছু অ্যাকশন দৃশ্যে দেখা গিয়েছে দীপিকাকে। ‘বাজিরাও মস্তানি’ কিংবা ‘পদ্মাবতী’ ছবিতে কয়েক ঝলক অ্যাকশনে ধরা দিয়েছিলেন দীপিকা। দর্শক মনে রেখেছে সেই মারকুটে দীপিকাকেও।
২০১৩ সালে ‘গোলিওঁ কি রাসলীলা রামলীলা’ ছবিতে রণবীর সিংহের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন দীপিকা। অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরি এবং বিক্রির জন্য কুখ্যাত দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর শরিক ছিলেন তিনি। ফলে ছবিতে পিস্তল হাতে দীপিকা ওরফে লীলার অ্যাকশন দেখা গিয়েছিল। ছবির শেষ দৃশ্যেও গুলি করেই একে অপরের জীবন শেষ করে দেন নায়ক-নায়িকা।
২০১৫ সালে ‘বাজিরাও মস্তানি’ ছবিতে ইতিহাসভিত্তিক চরিত্রে দেখা যায় দীপিকাকে। এই ছবিতে রাজপুত রাজকন্যার ভূমিকায় অভিনয় করেন দীপিকা। তাঁর চরিত্রের নাম ছিল মস্তানি। তিরধনুক আর তলোয়ার হাতে লড়াই করে ইতিহাসভিত্তিক চরিত্রে যেন প্রাণ দিয়েছিলেন দীপিকা।
‘পদ্মাবত’ ছবিতেও ইতিহাসভিত্তিক কাহিনির হাত ধরে এসেছে লড়াইয়ের দৃশ্য। তবে রাজপুত রানি পদ্মাবতীকে তেমন লড়াই করতে দেখা যায়নি এই ছবিতে। বরং বিয়ের আগে রানা প্রতাপের সঙ্গে জঙ্গলের আলাপদৃশ্যে তিরধনুক নিয়ে শিকার করেছেন দীপিকা।
ভন্সালীর ছবিতে টুকটাক অ্যাকশনের দৃশ্য পেরিয়ে পুরোদস্তুর হিন্দি অ্যাকশন ছবিতে কাজ করলেন দীপিকা। ‘মস্তানি’র লড়াই এবং ‘পাঠান’-এর রুবিনার মধ্যে আকাশপাতাল তফাত। যেন অ্যাকশনে বিবর্তিত হয়েছেন অভিনেত্রী।
যশরাজ ফিল্মসের স্পাই ইউনিভার্সের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছেন দীপিকা। ফলে আগামী দিনে এই ঘরানায় আবার তাঁকে দেখা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। হলিউডি ধাঁচে দীপিকার অ্যাকশন দেখতে মুখিয়ে অনুরাগীরা।
২০২০ সালে ‘ছপক’ এবং ২০২১ সালে ‘৮৩’, শেষ দু’টি ছবিতে দীপিকার নজরকাড়া সাফল্য ছিল না। অভিনয়ে খামতি না রাখলেও বক্স অফিসে সাফল্য আসেনি। ‘পাঠান’-এর হাত ধরে কেটে গেল দীপিকার সেই সাফল্যের খরা।