বলিপাড়ায় পাঁচ দশকের বেশি সময় কাটিয়েছেন ঋষি কপূর। বলিউডের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ অমিতাভ বচ্চনও হিন্দি ফিল্মজগতে কাটিয়ে ফেলেছেন পাঁচ দশক। এখনও পর্যন্ত ২০০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ঋষি এবং অমিতাভ একসঙ্গে একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও কেরিয়ারের একটি সময়ে অমিতাভের সঙ্গে কাজ করতে চাননি ঋষি। কেন?
‘কভি কভি’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘নসীব’, ‘কুলি’, ‘আজুবা’র মতো একাধিক হিট ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন ঋষি এবং অমিতাভ। তার পর দুই বলি তারকাকে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায়নি।
২৭ বছরের বিরতির পর ২০১৮ সালে ‘১০২ নট আউট’ ছবিতে আবার একসঙ্গে কাজ করেছিলেন অমিতাভ এবং ঋষি। এই প্রসঙ্গে ঋষি তাঁর আত্মজীবনী ‘খুল্লাম খুল্লা’য় লিখেছিলেন। ঋষি স্বীকার করেছিলেন, তিনি নিজেই অমিতাভের সঙ্গে কাজ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তার নেপথ্যকারণও উল্লেখ করেছিলেন ঋষি।
ঋষি তাঁর বইতে লেখেন, ‘‘অমিতাভ ছিলেন বলিউডের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’। ওর কথা ভেবেই ছবির গল্প বোনা হত। ওর সঙ্গে পাল্লা না দিতে পারলেও আমরাও কোনও অংশে কম ছিলাম না।’’
যেখানে অমিতাভকে চরিত্র হিসাবে কল্পনা করে ছবির গল্প লেখা হত সেখানে সমসাময়িক অভিনেতাদের সেই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হত বলে দাবি করেছিলেন ঋষি।
অমিতাভের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন ঋষি। ঋষির দাবি ছিল, অমিতাভ কখনও তাঁর সহ-অভিনেতাদের প্রশংসা করেননি। ঋষি বলেন, ‘‘অমিতাভ কোনও দিন স্বীকার করবেন না কিন্তু কোনও সাক্ষাৎকারে তিনি সহ-অভিনেতাদের কৃতিত্ব স্বীকার করেননি।’’
সহ-অভিনেতাদের তালিকা থেকে বাদ দিলেও বলিপাড়ার ছবিনির্মাতাদের কখনও সম্মান দিতে ভোলেননি অমিতাভ। ঋষি বলেন, ‘‘সেলিম-জাভেদ, মনমোহন দেশাই, প্রকাশ মেহরা, যশ চোপড়া এবং রমেশ সিপ্পির মতো ছবির চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালকদের সব সময় সম্মান করতেন অমিতাভ।’’
অমিতাভ তাঁর সহ-অভিনেতাদের কৃতিত্ব দিতেন না বলে তাঁর সঙ্গে কাজ করাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন ঋষি। এমনটাই নিজের বইয়ে লেখেন অভিনেতা।
ঋষি আরও জানান, অমিতাভও নাকি ঋষির উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তবে তার জন্য দায়ী ছিলেন ঋষি নিজেই।
ঋষি জানান, ‘ববি’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন ঋষি। সে বছর মনোনয়নের তালিকায় ছিল অমিতাভের ‘জঞ্জীর’ ছবিটি।
অমিতাভ ভেবেছিলেন সে বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কার তিনিই পাবেন। কিন্তু অমিতাভের পরিবর্তে সেই পুরস্কার ওঠে ঋষির হাতে। ঋষির দাবি, এই ঘটনা মেনে নিতে পারেননি অমিতাভ।
যদিও পুরস্কারটি নিজের যোগ্যতায় অর্জন করেননি ঋষি। আত্মজীবনীতে অভিনেতা দাবি করেন, পুরস্কার জোগাড় করার নেপথ্যে ছিল তাঁর কারসাজি।
ঋষি জানান, তাঁকে এক জন বলেছিলেন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নাকি অর্থের বিনিময়ে পুরস্কার কিনতে পাওয়া যায়। সত্যতা যাচাই করার জন্য টাকাও দিয়ে ফেলেন ঋষি।
ঋষির দাবি, পুরস্কারের জন্য অভিনেতার কাছে ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। ঋষি সে টাকা দিয়েও দেন। ফলস্বরূপ সে বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কারও জুটে যায় ঋষির ভাগ্যে।