হিন্দি ফিল্মজগতের সুপারস্টার হিসাবে জনপ্রিয় বলিপাড়ার ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ অমিতাভ বচ্চন। বুধবার ৮১ বছরে পা দিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, অমিতাভের জনপ্রিয়তার নেপথ্যে রয়েছেন অন্য বলি অভিনেতারা।
১৯৬৯ সালে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন অমিতাভ। তার পর ১১টি ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করলেও সেই ছবিগুলি বক্স অফিসে ব্যবসা করতে পারেনি। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারে নতুন মোড় আসে এর চার বছর পর।
১৯৭৩ সালে প্রকাশ মেহরার পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘জঞ্জীর’ ছবিটি। এই ছবিতে ইনস্পেক্টর বিজয় খন্নার চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নেন অমিতাভ। রাতারাতি বলিউডের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’-এর পরিচিতি লাভ করেন তিনি।
‘জঞ্জীর’ ছবির চিত্রনাট্যের দায়িত্বে ছিলেন সেলিম-জাভেদ। চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার এই ছবির প্রসঙ্গে জানান, ছবির মুখ্যচরিত্রের জন্য নির্মাতাদের শেষ পছন্দ ছিলেন অমিতাভ।
একাধিক বলি অভিনেতাকে‘জঞ্জীর’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে জানান জাভেদ। কিন্তু তাঁরা সকলেই প্রস্তাব খারিজ করায় শেষে অমিতাভের কাছে প্রস্তাব নিয়ে হাজির হন নির্মাতারা।
যদিও ‘জঞ্জীর’ ছবির জন্য কোন অভিনেতাদের ছবিনির্মাতারা পছন্দ করেছিলেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি জাভেদ। তবে ‘জঞ্জীর’ ছবিটি যে অমিতাভের ভাগ্য খুলে দেয় তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
১৯৭৫ সালে যশ চোপড়ার পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দিওয়ার’ ছবিটি। এই ছবিতে অমিতাভের পাশাপাশি অভিনয় করেছিলেন শশী কপূর, নীতু কপূর, পরভিন ববির মতো বলি তারকারা।
‘দিওয়ার’ ছবির জন্য প্রথমে রাজেশ খন্নাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন নির্মাতারা। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন রাজেশ। রাজেশের পর অমিতাভের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হলে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন বিগ বি।
‘শোলে’ ছবিটি অমিতাভের জীবনে মাইলফলক তৈরি করেছে। ১৯৭৫ সালে রমেশ সিপ্পির পরিচালনায় মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে জয়-বীরুর জুটি, বসন্তি এবং গব্বর সিংহের চরিত্র জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
‘শোলে’ ছবিতে জয় চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় অমিতাভকে। কিন্তু প্রথমে এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলি অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিন্হাকে। তিনি রাজি না হলে অমিতাভকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
১৯৭৮ সালে ‘ডন’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জেতেন অমিতাভ। কিন্তু এই ছবিতেও মুখ্যচরিত্রের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন না বিগ বি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ডন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথমে ধর্মেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যান ছবিনির্মাতারা। ধর্মেন্দ্র সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে জীতেন্দ্রের সঙ্গে দেখা করেন ‘ডন’ ছবির নির্মাতারা।
কিন্তু ডনের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হননি জীতেন্দ্রও। বলিপাড়া সূত্রে খবর, জীতেন্দ্র ‘ডন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে বলি অভিনেতা দেব আনন্দকে মুখ্যচরিত্রের জন্য প্রস্তাবদেওয়া হয়।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, দেব আনন্দ যখন ‘ডন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তখন অমিতাভের কাছে যান নির্মাতারা। শেষমেশ ডনের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন বিগ বি। ‘ডন’ ছবিটিও অমিতাভের কেরিয়ারের অন্যতম মাইলফলক হয়ে রয়েছে।