অন্তত ১২ জন মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ। সেখানেই থামেননি। ধর্ষণ করে তার ভিডিয়োও তুলে রেখেছিলেন। আদালতে বিচারের সময় সেই ভিডিয়োই চলছিল এজলাসে। ভিডিয়োগুলি এতটাই ‘ন্যক্কারজনক’ যে, আইনজীবীরা বিচারকের কাছে শুনানি শেষ করার আর্জি জানান। এ হেন ভারতীয় ব্যক্তির বিচার চলছে অস্ট্রেলিয়ার আদালতে। সে দিকেই এখন নজর।
অভিযু্ক্তের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে একগুচ্ছ ধর্ষণের ভিডিয়ো উদ্ধার করেছিল পুলিশ। যাঁদের ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁদের নাম, পরিচয় একটি খাতায় লিখে রাখতেন। অভিযোগ, ওই তরুণীদের মাদক খাইয়ে নির্যাতন করতেন তিনি।
অভিযুক্তের নাম বালেশ ধনখড়। ১৩টি ধর্ষণের মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সম্মতি ছাড়াই যৌন সংসর্গের ভিডিও রেকর্ড করার মামলা রয়েছে ১৭টি। অভিযোগ, নিজের বাড়িতে এবং সিডনির একটি হোটেলে তরুণীদের ডেকে ধর্ষণ করতেন তিনি। নিউ সাউথ ওয়েলসের জেলা কোর্টে বিচার চলছে তাঁর।
একটি সংবাদপত্র দাবি করেছে, কোরিয়ান মহিলাদের নিশানা করতেন বালেশ। চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের ডাকতেন। তার পর ধর্ষণ করতেন। সেই ধর্ষণের ভিডিয়োও করতেন তিনি।
২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনাগুলি হয়েছে বলে অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, ইংরেজি জানা কোরিয়ান তরুণীদের নিয়োগ করার বিজ্ঞাপন দিতেন বালেশ।
তাঁর সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা যোগাযোগ করলে এক বিলাসবহুল হোটেলে ডেকে পাঠাতেন। সেই হোটেল ছিল তাঁর বাড়ির খুব কাছে। সেখানে মহিলাদের পানীয়ের প্রস্তাব দিতেন। অভিযোগ, সেই পানীয়তে মেশানো থাকত মাদক।
আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই পানীয় খাওয়ার পর জ্ঞান হারাতেন তরুণীরা। জ্ঞান যখন ফিরত, তাঁরা দেখতেন বালেশের বিছানায় রয়েছেন। এর পর কিছুই মনে থাকত না নির্যাতিতার। অনেক সময় তাঁরা যে ধর্ষিত হয়েছেন, তা-ও মনে করতে পারতেন না।
কিন্তু বালেশের কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে থাকা ভিডিয়ো অন্য কথা বলে। সে সব দেখে শিহরিত হয় পুলিশও। বালেশের হার্ড ড্রাইভ থেকে ৪৭টি ভিডিয়ো উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ আধিকারিক ক্যাটরিনা গাইড জানিয়েছে, সব ক’টি ভিডিয়ো কোরিয়ান মহিলাদের নির্যাতনের। নির্যাতিতাদের নামে ফোল্ডার তৈরি করেছিলেন বালেশ। তাতেই রাখা থাকত ধর্ষণের ভিডিয়ো।
বালেশের ঘরে রাখা থাকত একটি অ্যালার্ম ঘড়ি। তার মধ্যেই রাখা থাকত গোপন ক্যামেরা। নির্যাতিতারা জানতেই পারতেন না, ঘরে ক্যামেরা রয়েছে।
এক নির্যাতিতার অভিযোগ পেয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বালেশের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। তখনই এই ভিডিয়ো বাজেয়াপ্ত করেছিল। বালেশের ফ্রিজে রাখা বোতলের ওয়াইন এবং পানীয়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছিলেন। তাতে দু’ রকমের মাদক মিলেছিল।
বালেশের আইনজীবী আদালতে মানতে চাননি যে, তাঁর মক্কেল তরুণীদের অসম্মতিতে সহবাস করেছেন। তাঁদের অসম্মতিতে ভিডিয়ো রেকর্ড হয়েছে বলেও মানতে চাননি। শুনানির সময় বালেশ যদিও একটা কথাও বলেননি।