Jai Sri Ram

হাওড়া স্টেশনে ‘জয় শ্রীরাম’ বিতর্ক! আট মুনির দুই মত

মমতা ভাষণে এক বারের জন্যও তোলেননি স্লোগান প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী মোদীও এড়িয়ে গিয়েছেন এই প্রসঙ্গ। তবে এই স্লোগান নিয়ে তৃণমূল, বিজেপি দুই পক্ষের নেতা-মন্ত্রীরাই একাধিক মন্তব্য করেছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৫৭
Share:
০১ ১৫

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পর এ বার হাওড়া স্টেশন। শুক্রবার ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন উদ্বোধনের কর্মসূচিতে উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। প্রতিক্রিয়াও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আগের মতো নয়। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি মঞ্চে উঠলেন না। পাশে দাঁড়িয়েই দিলেন ভাষণ। সেখানে এক বারের জন্যও তোলেননি স্লোগান প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এড়িয়ে গিয়েছেন স্লোগানের প্রসঙ্গ। তবে এই স্লোগান নিয়ে তৃণমূল, বিজেপি দুই পক্ষের নেতা-মন্ত্রীরাই একাধিক মন্তব্য করেছেন।

০২ ১৫

মুখ্যমন্ত্রী মমতা এখনও ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম যদিও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, এ ভাবে রামকে অপমান করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘রামকে অপমান করছেন ওঁরা। নিশ্চিত ভাবে। মন্দিরে, বাড়িতে পবিত্র হয়ে তাঁর নাম নেওয়া উচিত। কিন্তু বিরক্তি উদ্রেক করার জন্য, রেষারেষি করার জন্য, ছ্যাবলামি করার জন্য তাঁর নাম নেওয়া উচিত নয়।’’

Advertisement
০৩ ১৫

এখানেই থামেননি রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল চাইলে যোগ্য জবাব দিতে পারে। কিন্তু ‘সৌজন্য’ বজায় রেখেছে তৃণমূল। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল চাইলে তাঁদের গলা টিপে দেবে। অসভ্যতা করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। তৃণমূল সৌজন্য দেখাচ্ছে। কিন্তু বিজেপি সৌজন্যের যোগ্য নয়। জয় শ্রীরাম মানে কী? মুখ্যমন্ত্রী তো নিজে হিন্দু। পুজো করেন। ওঁর সামনে ছ্যাবলামি করছে। ওঁকে নয়, রামকে অপমান করছে।’’

০৪ ১৫

পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, নন্দীগ্রামে হারের কথাই আসলে ভুলতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি কলাইকুন্ডায় যা করেছেন, এখানেও তা-ই করেছেন। এটা হচ্ছে, নন্দীগ্রামে হারের যন্ত্রণা।’’

০৫ ১৫

বিরোধী দলনেতার পদটিকে মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করতে চান না বলেও অভিযোগ করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি আসলে বিরোধী দলনেতাকে স্বীকার করেন না। নিজেকে বলছেন জনপ্রতিনিধি। আসলে আমার কাছে হার ভুলতে পারেননি। কলাইকুন্ডায় একই কাজ করেছিলেন। আজও একই ড্রামা করলেন।’’

০৬ ১৫

এর পরেই নাম না করে শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘তিনি যত দিন রাজনীতিতে থাকবেন, ভুগতে হবে। অত্যন্ত নিম্নমানের রাজনীতিবিদ, যাঁকে বাংলার ৪০ হাজার মানুষ শহিদ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। ওঁকে প্রাক্তন আমি করবই। কম্পার্টমেন্টাল করেছি। এ বার প্রাক্তন করব। এর পর এ রকম অনেক অনুষ্ঠান করতে হবে। সেগুলি বাড়িতে বসে ওঁকে দেখতে হবে।’’

০৭ ১৫

শুভেন্দুর এই বক্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। নাম না করেই তিনি শুভেন্দুকে বলেন, ‘‘ভারতীয় জোকার পার্টির সব থেকে বড় জোকারের ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ। তিনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পারবেন না যে, সঠিক ভাবে জিতেছেন। নিজেও জানেন লোডশেডিং করে জিতেছেন।’’

০৮ ১৫

এর পরেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শান্তনু। তাঁর মতে, এ ভাবে মমতার অপমান হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার তিন বারের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আজ যা করা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি। তাঁর (শুভেন্দু) অন্তরাত্মা জানে, এই মেট্রো রেলের সম্প্রসারণ, তা মমতার জন্যই হয়েছে। তাঁকে এ সব বলা ঠিক হয়নি।’’

০৯ ১৫

বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় স্পষ্টই জানিয়েছেন, আবেগের কারণেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘‘যখন বন্দে ভারত ট্রেন পর্দায় দেখা গিয়েছে, তখন থেকেই আমাদের জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুরু হয়েছে। এটা আমাদের রক্তের। এটা ভিতর থেকে বার হয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’

১০ ১৫

বিষয়টিতে মুখ্যমন্ত্রীর ‘অপমান’ হয়েছে বলেই মনে করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘বন্দে ভারত ট্রেন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ছিল সরকারি। সেখানে মমতা যখন যান, জয় শ্রীরাম স্লোগান দেন বিজেপি কর্মীরা। এটি রাজনৈতিক স্লোগান। মমতা সম্ভবত সেই কারণেই মঞ্চে ওঠেননি। নীচে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছেন। বিজেপির এই কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করছি। মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে ডেকে এ ভাবে অপমান করা ঠিক নয়।’’

১১ ১৫

শুক্রবার স্লোগান শুনে বিরক্ত হওয়া মুখ্যমন্ত্রীকে মঞ্চে ওঠার অনুরোধ করতে দেখা গিয়েছিল রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। কর্মসূচি শেষে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আদর ও সম্মানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ করেছিলাম। উনি এসেছেন। আমরা ধন্যবাদ জানাই। এমন কোনও বিষয় ছিল না যে, তিনি রেগে যাবেন। বিজেপি কর্মকর্তারা উৎসাহের বশে এই ধ্বনি দিয়েছেন। আমি আবারও ধন্যবাদ দিচ্ছি মুখ্যমন্ত্রীকে, তিনি নিজের উপস্থিতির মাধ্যমে এই কর্মসূচির গরিমা বাড়িয়েছেন।’’

১২ ১৫

শুভেন্দুকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বিষয়টিকে ‘অসভ্যতা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। কুণালের কথায়, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী কাল কা যোগী। দু’বছর আগেও বলেছেন, বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও। রামনাম সবাই করে। রামকে আপনারা অপব্যবহার করছেন। এটাকে অসভ্যতা বলে। যদি বলেন রামের নামে আপত্তি, আপত্তি নেই তো। স্থান, কাল, পাত্র বলে বিষয় আছে। একটা অনুষ্ঠানে এ সবের মানে কি।’’

১৩ ১৫

বন্দে ভারত ট্রেন নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘একটি কথা বলি, একখানা মাত্র রেক। ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে হিসাবে ৫৬০ কিলোমিটার যেতে কত সময় লাগে? অঙ্কের সময় মিলছে না। আপনারা তো বন্দে ভারতকে ধন্দে ভারত করে দিয়েছেন। একটা রেক নিয়ে এত কারবার!’’

১৪ ১৫

ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি’ নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছেন দলের বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘বন্দেভারতের উদ্বোধন একটা রাষ্ট্রীয় পর্ব, সেখানে ভারত মাতা কি জয় বলা উচিত ছিল।’’ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস থেকে শক্তিগড় স্টেশনে নেমে এই মন্তব্য করেন বিজেপির ওই সাংসদ।

১৫ ১৫

যদিও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন অহলুওয়ালিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মাতৃবিয়োগের পরেও তিনি কোনও অনুষ্ঠান বাতিল করেননি। পশ্চিম বাংলায় প্রথম আমরা বন্দে ভারত ট্রেন পেলাম। এটা আমাদের কাছে গৌরব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement