মনের গহনে থাকা মিছে কথার কতটা মূল্য চোকাতে হয়? সম্পর্কের টানাপড়েনে সাদা কথাটাও কি সব সময় সাফসুতরো ভাবে বলা যায়? কিসের টানে এক সম্পর্কের মাঝে অন্যটি মনে ঢুকে প়ড়ে? পরকীয়ার তকমা লেগে যাওয়া সে মনের খোঁজ কী ভাবে পাওয়া যায়?
আপাত জটিল এই প্রশ্নগুলি তুলেছেন পরিচালক শকুন বত্রা। তার উত্তর খুঁজেছেন দীপিকা পাড়ুকোন, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী, অনন্যা পাণ্ডেরা।
দীপিকাদের জীবনে এসেছেন নাসিরুদ্দিন শাহ এবং রজত কপূরের একাধিক জিজ্ঞাসাও। তাঁদের নয়া ছবি, ‘গেহরাইয়াঁ’-তে। যে ছবির যৌনদৃশ্যে ‘আনকোরা’ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আদ্যন্ত সাবলীল দীপিকা।
‘গেহরাইয়াঁ’ নিয়ে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এই প্রথম পা রাখছেন দীপিকা। ইতিমধ্যেই তার ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। সেখানে যেটুকু অংশ দেখা গিয়েছে, তাতেই প্রশংসা কুড়োচ্ছেন দীপিকা।
বাহবা কুড়োবেনই না কেন? তারকাসুলভ হাবভাব দেখিয়ে সিদ্ধান্তকে দূরে ঠেলে দেননি ১৫ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটানো দীপিকা। চরিত্রের খাতিরে যৌনদৃশ্যে অভিনয়। তাতেও নাকি তিনি বাধ্য ছাত্রীর মতো পরিচালকের সব কথা শুনে চলেছেন।
চরিত্রের টানাপড়েন দেখা গিয়েছিল শকুনের আগের ফিল্মেও। ‘কপূর অ্যান্ড সন্স’-এ মা-ছেলের সম্পর্ক, দুই ভাইয়ের মধ্যে টানাপড়েন বা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অন্য কারও অস্তিত্বের ছোঁয়া। পাক খাওয়া প্রশ্নগুলি বার বার ঘুরেফিরে এসেছে। এ বারও ‘গেহরাইয়াঁ’-তে তেমনই জাল বুনেছেন শকুন। তাতে সাহায্য করেছেন দীপিকারা।
সম্পর্কে থাকা আলিয়া খন্না জড়িয়ে পড়েন তাঁরই তুতো বোনের প্রেমিকের সঙ্গে। এর পর থেকে তিন তিনটে জীবনে টানাপড়েনের শুরু।
প্রেমের পাশে প্রেমহীনতা, যৌনতার পাশে মিথ্যাচার, অবসাদের পাশে নিজেকে হারানোর ভয়— গতে বাঁধা সীমারেখাগুলি সব মিলিয়েমিশিয়ে দেয় ‘গেহরাইয়াঁ’।
শকুনের এ ছবিতে যৌনদৃশ্যে অভিনয়ের জন্য আলাদা এক জন পরিচালক কাজ করেছেন। আদতে ইউক্রেনের নাগরিক দর গই। তবে বলিউডে কাজের সূত্রে এ দেশে থাকতে হচ্ছে। বলিউডে ‘ইন্টিমেসি ডিরেক্টর’ বলেই নাম কিনেছেন তিনি। নেটফ্লিক্সে দেখা গিয়েছে তাঁর কাজ— ‘তিন অউর আধা’।
দীপিকার জন্য ভূয়সী প্রশংসা ঝরে পড়েছে দরের কণ্ঠে। জানিয়েছেন, তারকাসুলভ অহমিকা নয়, ‘সাহসী’ দৃশ্যেও তাঁর কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন দীপিকা।
দীপিকা-সিদ্ধান্তের যৌনদৃশ্য পরিচালনা করতে গিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হল? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দর জানিয়েছেন, পুরোপুরি সন্তুষ্ট। তাঁর কথায়, ‘‘দারুণ অভিজ্ঞতা। পেশাদার লোকজনদের হাতে পেলে যা হয়। ঠিক যাঁদের এই প্রজেক্টে থাকা প্রয়োজন, তাঁদেরই পেয়েছি। এবং তাঁরা এতটাই পেশাদার যে, জানেন যৌনদৃশ্যে কী করছেন, কেন করছেন।’’
দীপিকা এবং সিদ্ধান্তকে কী ভাবে কাজে লাগিয়েছেন দর? তিনি বলেন, ‘‘যৌনদৃশ্যে অভিনয়ের সময় দীপিকা এবং সিদ্ধান্তকে দিয়ে কাজ করানোর সময় এমন কয়েকটি কৌশল নিয়েছিলাম যাতে এমন পথে কাজ করিয়েছি, যাতে পর্দায় জাদু দেখা যায়!’’
দীপিকারা যাতে যৌনদৃশ্যে অভিনয়ের সময় সাবলীল থাকেন, সে জন্য দরের সঙ্গে সমন্বয় করেছেন নেহা ব্যাস। দর এবং নেতার যুগলবন্দিতে যেন জাদুই দেখিয়েছেন দীপিকারা।
সিদ্ধান্তের কাজেরও প্রশংসা করেছেন দর। তবে সব ছাপিয়ে গিয়েছেন দীপিকা। দর বলেন, ‘‘দু’জনেই আমাদের সহযোগিতা করেছেন। দীপিকা কখনও বলেননি, ‘কেন এ রকম করছি? কেন ও রকম করতে হবে?’ এক বারের জন্য বলেননি, ‘এমনটা করব কেন?’ অথবা, ‘কী কাজ করতে হবে, আমি জানি’। তারকা হলেও বাধ্য ছাত্রীর মতো অভিনয় করে গিয়েছেন!’’