ঘূর্ণিঝড় সিত্রাঙের তাণ্ডব থেকে রেহাই পেল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। বাংলাদেশের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ থাকায় বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া ছাড়া কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তেমন কোনও প্রভাব পড়ল না। যার জেরে কালীপুজোর আনন্দ মাটি হয়নি। বরং স্বস্তিদায়ক আবহাওয়ায় আলোর উৎসবে মাতলেন দক্ষিণবঙ্গবাসী।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে বাংলাদেশের বরিশালের কাছে তিনকোনা দ্বীপ ও সন্দ্বীপের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করেছে সিত্রাং।
বাংলাদেশের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিমি। সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিমি।
শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বর্তমানে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও শক্তিক্ষয় হবে। তার পর সেটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।
সিত্রাঙের তাণ্ডবে বাংলাদেশে কমপক্ষে নয় জনের মৃত্যু হয়েছে। সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কুমিল্লায় ৩ জন, ভোলায় ২ জন, নড়াইলে ১ জন, বরগুনায় ১ জন এবং সিরাজগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় একটি গাছ উপড়ে পড়ে। তার জেরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পশ্চিমবঙ্গে সেই অর্থে সিত্রাঙের দাপট দেখা যায়নি। সোমবার দিনভর বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া বয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় রোদ ঝলমলে আকাশ।
ঘূর্ণিঝড় বিদায় নেওয়ার পরই শীতের শিরশিরানি মালুম হচ্ছে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে শীতল ভাব অনুভূত হয়েছে কলকাতায়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে।
সোমবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৭ ডিগ্রি নীচে।
সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি নীচে।
ঘূর্ণিঝড় বিদায় নেওয়ার পরও মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে মঙ্গলবার সকালের দিকে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে ধীরে ধীরে কমবে হাওয়ার দাপট।
মঙ্গলবার সমুদ্রে যেতে মৎস্যজীবীদের নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছে।