সন্দীপ অরোরার বাড়ি পঞ্জাবের জালন্ধরে। স্ত্রী, ছেলে এবং মা-বাবা সেখানে রয়েছেন। আর সন্দীপ পড়ে রয়েছেন বাড়ি থেকে বহু দূরে হংকংয়ে। ২০২০ সালের মার্চের পর থেকে বাড়িমুখো হতে পারেননি তিনি। ২০১৯ সালের জুন থেকে অ্যামি স্কটও একপ্রকার আটকে রয়েছেন হংকংয়ে। ম্যাঞ্চেস্টারের কথা খুব মনে পড়ে তাঁর। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার উপায় বন্ধ করে দিয়েছিল করোনা।
সন্দীপ এবং অ্যামির মতো এমন আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে। তাঁদের কথা ভেবেই সন্দীপদের বাড়ি ফেরানোয় উদ্যোগী হল হংকংয়ের একটি রেস্তরাঁ গ্রুপ।
হংকংয়ের ব্ল্যাক শিপ রেস্তরাঁ গ্রুপ। হংকং জুড়ে অনেকগুলি রেস্তরাঁ রয়েছে এদের। সম্প্রতি তাঁদের আড়াইশো কর্মীকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হল তারা। প্রত্যেকের যাতায়াতের খরচও দিল সংস্থা!
বিমান ভাড়া, কোভিড পরীক্ষা করানো... অর্থাৎ অতিমারির নিয়মকানুন মেনে বিমানে উঠতে গেলে কিংবা অন্য দেশে যেতে গেলে যা যা করা প্রয়োজন সে সবই কর্মীদের জন্য নিখরচায় করাচ্ছে রেস্তরাঁটি।
পাশাপাশি বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য যথেষ্ট ছুটিও বরাদ্দ করা হয়েছে। এতেই থামেনি সংস্থাটি। কর্মীরা যখন ফের কাজে যোগ দিতে হংকংয়ে ফিরবেন, তখন অতিমারির নিয়ম অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট হোটেলে দুই থেকে তিন সপ্তাহ নিভৃতবাসে থাকতে হবে তাঁদের।
এর জন্য ওই দুই-তিন সপ্তাহ অতিরিক্ত ছুটিও দিচ্ছে সংস্থা। সমস্ত কর্মীর নিভৃতবাসে থাকার খরচও বহন করবে তারা।
ব্ল্যাক শিপ রেস্তরাঁ গ্রুপের মোট ৩২টি রেস্তরাঁ রয়েছে। তার যে কোনও একটি থেকে নিভৃতবাসে থাকা কর্মীদের জন্য সারা দিনের খাবারও সরবরাহ করবে বিনামূল্যে।
ওই রেস্তরাঁ গ্রুপের আড়াইশো কর্মী এই সুবিধা পাবেন। তাঁরা কেউ ভারত, কেউ আর্জেন্তিনা, নাইজেরিয়া, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা ফিরবেন।
ব্ল্যাক শিপ-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আসিম হুসেন এবং ক্রিস্টোফার মার্ক যখন অন্যদের কাছে এই প্রস্তাব রেখেছিলেন, সকলেই তাঁদের বিরোধিতা করেছিলেন। কারণ এর জন্য সংস্থাকে ভারতীয় মুদ্রায় চার কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে!
সকলের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই এই পথে হেঁটেছেন দু’জনে। কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২২-এর জানুয়ারি থেকে কর্মীরা বাড়ির জন্য রওনা হবেন। সংস্থার এই সিদ্ধান্তে আবেগে উদ্বেল তাঁরাও।