যোগগুরু রামদেব। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনার পর ফের চর্চায় বিতর্কিত যোগগুরু এবং তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি। দেশ-বিদেশে ৫৫ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে তাঁর।
এ হেন রামদেবের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন এক দম্পতি। তাঁদের সাহায্যেই আজ এতটা সফল রামদেব।
২০০৬ সালে রামদেব এবং সহযোগী বালকৃষ্ণের পথচলা শুরু। তখন দু’জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ছিল না।
শিষ্য সুনীতা এবং সরওয়ান সাম পোদ্দারের থেকে ঋণ করেছিলেন দু’জন। তাঁরা দু’জনেই স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা।
সুনীতা এবং সরওয়ান ২০ লক্ষ পাউন্ড খরচ করে স্কটল্যান্ডের কামব্রে দ্বীপ কিনেছিলেন। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২১ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে সেই দ্বীপটি রামদেবকে উপহার দেন তাঁরা।
২০১১ সালের মধ্যে পতঞ্জলির বড় অংশের শেয়ারের মালিক হন তাঁরা। আচার্য বালকৃষ্ণের পর তাঁরাই ছিলেন সংস্থার দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশীদার।
রামদেবকে সাহায্যের নেপথ্যে ছিলেন সুনীতা। রামদেবের শেখানো যোগ করে ওজন কমিয়েছিলেন তিনি। শারীরিক নানা উপকারও পেয়েছিলেন। এর পর থেকেই যোগগুরুর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন তিনি।
সুনীতা তাঁর স্বামীকে দিয়ে এক প্রকার জোর করেই রামদবকে ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন। এখন ব্রিটেনে পতঞ্জলি যোগপীঠ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুনীতারা।
সুনীতার জন্ম মুম্বইয়ে। বড় হয়েছেন নেপালের কাঠমান্ডুতে। বর্তমানে তিনি গ্লাসগোর অন্যতম ধনী মহিলা।
সরওয়ানের জন্ম বিহারে। খুব কম বয়সে গ্লাসগো পাড়ি দেন তিনি। সেখানেই থিতু হন। সুনীতার যখন ১৮ বছর বয়স, তখন বিয়ে হয় সরওয়ানের সঙ্গে। এর পর তিনিও পাড়ি দেন গ্লাসগো।
সরওয়ান ছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ১৯৮০ সালে তিনি একটি ছোট ব্যবসা কেনেন। সুনীতা তখন গ্লাসগোয় একটি গ্যাস স্টেশন চালাতেন। পরে তিনি স্বামীর ব্যবসায় যোগ দেন।
রামদেব জানিয়েছিলেন, ১৯৯৫ সালে দিব্যা ফার্মেসির নথিভুক্তকরণের জন্য যথেষ্ট টাকাই ছিল না তাঁর কাছে।
রামদেব যোগশিক্ষা করেছিলেন অপরিচিত এক গুরুর থেকে। সেই থেকেই লড়াই শুরু। ক্রমে জনপ্রিয় হতে থাকেন তিনি। তখনই এগিয়ে আসেন সুনীতারা। ঋণ দেন রামদেবকে।
রামদেবের থেকে যোগ শিখে সুনীতা নিজেও অন্যদের শেখাতে শুরু করেন। তৈরি করতে থাকেন প্রশিক্ষক।
স্কটল্যান্ডে এখন একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র খুলেছেন সুনীতা। নাম ‘ওকমিনস্টার হেল্থকেয়ার’। তিনি সেখানকার সিইও। তাঁর শেখানো প্রশিক্ষকেরাই যোগশিক্ষা দেন। পতঞ্জলিতেও বড় অংশীদারি রয়েছে তাঁর।