সামান্য হাতখরচ উপার্জনের আশায় অভিনয়জগতে আসা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাফল্যের চূড়ায় উঠে গিয়েছেন অভিনেত্রী রকুলপ্রীত সিংহ। তবে, বিতর্ক কখনও পিছু ছাড়েনি নায়িকার। কখনও কন্ডোম নিয়ে মন্তব্য করে, কখনও বা মাদক পাচারের সঙ্গে নাম জড়িয়ে চর্চায় এসেছেন তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুক্তি পায় ‘ছত্রীওয়ালি’ সিনেমাটি। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রকুলপ্রীত। যৌনশিক্ষাকে কেন্দ্র করে এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি এক প্রচারে এসে যৌনতা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হন অভিনেত্রী।
প্রচারের অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল ইউটিউবে। রকুলপ্রীতকে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জিজ্ঞাসা করেন যে, যৌন মিলনের সময় পুরুষেরা যদি একটির বদলে দু’টি কন্ডোম ব্যবহার করেন, তা হলে কি তা গর্ভসঞ্চার রুখতে সফল হবেন?
রকুলপ্রীত পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, ‘‘দু’টি কন্ডোম পরলে কোনও সুবিধা হবে না, বরং বিপদ বাড়তে পারে। কারণ, যৌনমিলনের সময়ে ঘর্ষণে দু’টি কন্ডোমই ছিঁড়ে যেতে পারে। আর তা মিলনের পক্ষেও সুখকর নয়।’’
রকুলপ্রীতের মন্তব্য, সতর্ক হতে চাইলে ওরাল কনট্রাসেপটিভ, গর্ভনিরোধক বিভিন্ন পন্থা কিংবা নারীদের জন্য তৈরি কন্ডোম ব্যবহার করাই উচিত। এমন মন্তব্য করার পর সমালোচনার শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী। কেউ কেউ তাঁকে সমর্থন করলেও নেটব্যবহারকারীদের একাংশ রকুলপ্রীতের এই মন্তব্য নিয়ে হাসাহাসি করেছেন।
কিন্তু রকুলপ্রীত কখনওই সমালোচনাকে পাত্তা দেন না। ইনস্টাগ্রামে বেশির ভাগ সময় সক্রিয় থাকেন নায়িকা। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি বা ভিডিয়ো পোস্ট করে থাকেন তিনি।
টপ এবং জিন্স পরে নিজের একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন রকুলপ্রীত। ছবিতে দেখা গিয়েছে যে, অভিনেত্রীর পরনে থাকা জিন্সের চেন খোলা ছিল। তা নিয়ে কটাক্ষের শিকার হন রকুলপ্রীত।
রকুলপ্রীতের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নেটব্যবহারকারীদের একাংশ। এই প্রসঙ্গে রকুলপ্রীতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান যে, তিনি এ সব মন্তব্য গায়ে মাখেন না। কে কী বলল তা নিয়ে কিছুই যায় আসে না অভিনেত্রীর। রকুলপ্রীতের মন্তব্য, ‘‘মানুষের চিন্তাভাবনা দূষণ ছড়াতে শুরু করলে তাতে আমার কিছু করার নেই।’’
শুধু পোশাক নিয়ে নয়, মাদক পাচারের সঙ্গে নাম জড়ানোর পর রকুলপ্রীতকে নিয়ে বলিপাড়ায় চর্চা শুরু হয়। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তলব করে অভিনেত্রীকে।
ইডি সূত্রে খবর, মাদক পাচারের সঙ্গে রকুলপ্রীতের নাম জড়িয়ে পড়েছিল। তার পাশাপাশি অভিনেত্রীর নাম প্রকাশ্যে এসেছিল আর্থিক তছরুপের ঘটনাতেও। এই ঘটনায় রকুলপ্রীতের পাশাপাশি দক্ষিণী ছবির ইন্ডাস্ট্রির আরও কয়েক জন তারকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির আধিকারিকেরা। কিন্তু অভিনেত্রীকে দোষী প্রমাণ করা যায়নি।
কন্নড় ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের কেরিয়ার শুরু করার পর তামিল এবং তেলুগু ভাষার ছবিতে কাজ করেছেন রকুলপ্রীত। জুনিয়র এনটিআর, রামচরণ, অল্লু অর্জুন, নাগা চৈতন্য এবং মহেশ বাবুর মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন অভিনেত্রী।
২০১৪ সালে বলিপাড়ায় পা রাখেন রকুলপ্রীত। ‘ইয়ারিয়াঁ’ হিন্দি ছবিতে তাঁর প্রথম অভিনয়। এর পর ‘দে দে প্যার দে’, ‘রানওয়ে ৩৪’, ‘ডক্টর জি’, ‘থ্যাঙ্ক গড’ ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।
শুটিংয়ের কাজেই এখন ব্যস্ত রকুলপ্রীত। কিন্তু এর মাঝেই বলিপাড়ায় অভিনেত্রীর বিয়ে নিয়ে চর্চা চলতে শুরু করেছে। অভিনেতা-প্রযোজক জ্যাকি বাগনানির সঙ্গে নাকি চলতি বছরেই গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন রকুলপ্রীত।
জ্যাকির জন্ম কলকাতার এক সিন্ধি পরিবারে। কলকাতায় স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য মুম্বইয়ে যান। সেখান থেকে বাণিজ্যবিদ্যায় স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে ফিরে আসেন তিনি।
২০২১ সালে ইনস্টাগ্রামে জ্যাকির সঙ্গে ছবি পোস্ট করে নিজেদের সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেছিলেন রকুলপ্রীত। বলিপাড়ায় বিয়ের খবর ঘোরাঘুরি করলেও তারকা জুটির কেউ-ই এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।
তবে, রকুলপ্রীতের ভাই আমন দিদির সম্পর্ক নিয়ে বলেন, ‘‘জ্যাকির একাধিক ছবিতে কাজ করেছে রকুল। তাঁদের বিয়ে হবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু এ নিয়ে এখনই কোনও চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়নি। রকুল যে দিন বিয়ে করতে চাইবে, ও নিজে থেকেই সে কথা ঘোষণা করবে। জ্যাকির হাতে এখন বেশ কিছু ছবির কাজ রয়েছে। রকুলও খুব ব্যস্ত এখন।’’ তাই এই বছরে বিয়ে হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।